শিক্ষার সকল স্তরে ইসলাম ও নৈতিক শিক্ষা বাধ্যতামূলককরণ❞ শীর্ষক মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত।


দেশ সময় প্রকাশের সময় : ২০২৪-০৯-২২, ১০:০১ অপরাহ্ন /
শিক্ষার সকল স্তরে ইসলাম ও নৈতিক শিক্ষা বাধ্যতামূলককরণ❞ শীর্ষক মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত।

প্রকাশিত,২২,সেপ্টেম্বর

রবিউল হোসাইন সবুজ:

বাংলাদেশ ইসলামিক স্টাডিজ সোসাইটি (বিআইএসএস) এর উদ্যোগে ❝শিক্ষার সকল স্তরে ইসলাম ও নৈতিক শিক্ষা বাধ্যতামূলককরণ❞ শীর্ষক মতবিনিময় সভা গতকাল রাত ৯:০০টায় অনলাইন জুমের মাধ্যমে অনুষ্ঠিত হয়।

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় কলা অনুষদের ডিন প্রফেসর ড. মোহাম্মদ বেলাল হোসেনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত হওয়া অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ইসলামি আরবি বিশ্ববিদ্যালয়ের নব নিযুক্ত ❝মাননীয় উপাচার্য প্রফেসর ড. মো. শামছুল আলম ❞। অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন, বাংলাদেশ ইসলামিক স্টাডিজ সোসাইটি (বিআইএসএস)-র আহ্বায়ক, এশিয়ান ইউনিভার্সিটি অব বাংলাদেশের ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের প্রভাষক মো. রাশেদুল আলম।

অনুষ্ঠানে আলোচিত বিভিন্ন এজেন্ডার মধ্যে ছিলো, ১. প্রাথমিক, মাধ্যমিক, উচ্চ-মাধ্যমিকের সকল বিভাগে ইসলাম শিক্ষা বাধ্যতামূলককরণ। ২. সকল সরকারি বিশ্ববিদ্যালয় ও কলেজে ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগ চালু। ৩. ইসলামিক স্টাডিজ ব্যতীত অন্যান্য বিভাগে ইসলামিক স্টাডিজকে GED এর অন্তর্ভুক্তকরণ। ৪. ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের গ্রাজুয়েটদের মানসম্মত কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা। মাদ্রাসার এমপিও নীতিমালা পরিবর্তন সংক্রান্ত সমস্যাসহ শিক্ষাব্যবস্থার বিভিন্ন সমস্যা ও সমাধান সংশ্লিষ্ট বিষয়।

অনুষ্ঠানে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় (ঢাবি), রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় (রাবি), চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় (চবি), জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় (জবি), ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় (ইবি), জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়, প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়সমূহ, উম্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়সহ দেশের ইসলামিক স্টাডিজ সংশ্লিষ্ট প্রায় সকল বিশ্ববিদ্যালয়ের অনুষদ ডিন, বিভাগীয় চেয়ারম্যান, প্রফেসরবৃন্দ, শিক্ষকমণ্ডলী ও শিক্ষার্থী প্রতিনিধিগণ উপস্থিত থেকে ❝বাংলাদেশ ইসলামিক স্টাডিজ সোসাইটি❞ কর্তৃক উত্থাপিত এজেন্ডার সাথে ঐক্যমত পোষণ করে ইসলাম শিক্ষার যাবতীয় সমস্যা সমাধানে মতামত পেশ করেন।

প্রধান অতিথির বক্তব্যে ইসলামি আরবি বিশ্ববিদ্যালয়ের মাননীয় উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. শামছুল আলম বলেন, “আমরা ইসলামিক স্টাডিজকে ঈমানের কারণে বুকে ধারণ করি। সারা দেশে যত অপরাধ সংগঠিত হয় তার অন্যতম কারণ হলো ইসলামিক শিক্ষা না থাকা। তাই শিক্ষার সকল স্তরে ইসলাম শিক্ষাকে বাধ্যতামূলক বিষয় করতে হবে। এর জন্য যা প্রয়োজন তা করা দরকার।
জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর ও ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের প্রফেসর ড. মো. তাজাম্মল হক বলেন, “সারাদেশের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো থেকে ইসলাম শিক্ষাকে উচ্ছেদ করা হয়েছে। এ বিষয়ে কার্যকরী পদক্ষেপ নেয়া সময়ের দাবি। এছাড়াও তিনি প্রতিটি বিশ্ববিদ্যালয়ে ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগ চালু করার জোর দাবি জানান।”
সভায় চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের সভাপতি প্রফেসর আ.ন.ম আব্দুল মাবুদ বলেন, “শিক্ষা কারিকুলামে অন্তর্ভুক্ত কোর্সসমূহের পরিমার্জন করতে হবে, শিক্ষার প্রতিটি স্তরে ইসলাম ও নৈতিক শিক্ষা বাধ্যতামূলক করার জন্য উর্ধতন মহলে জোর দাবি জানাই।”
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়, ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের প্রফেসর আব্দুল্লাহ আল মামুন বলেন, “মাদরাসা সমূহে আলিম পর্যায়ে ইসলামিক স্টাডিজ এর গ্রাজুয়েটদেরকে প্রভাষক পদে যোগদানের পথ বন্ধ করে দেয়া হয়েছে। মাদ্রাসায় আরবী প্রভাষক নামটি সংস্কার করে যেখানে আরবি শিক্ষক প্রয়োজন সেখানে আরবি আর যেখানে ইসলামিক স্টাডিজের শিক্ষক প্রয়োজন সেখানে ইসলামিক স্টাডিজ প্রভাষক পদ সংযোজন করতে হবে। কেননা আলিম পর্যায়ে পঠিতব্য, আল কুরআন, আল হাদিস, ফিকহ ১ম ও ২য় পত্র এসকল বিষয়সমূহ ইসলামিক স্টাডিজ এর অন্তর্ভুক্ত। অথচ পদটির নাম আরবি প্রভাষক রাখায় বিভিন্ন জটিলতা তৈরি হচ্ছে।

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের সহযোগী অধ্যাপক ড. শাহ মুখতার আহমেদ ২০১৮ সালের এমপিও নীতিমালার (২৩ সেপ্টেম্বর, ২০২০ সংশোধনী) -তে মাদ্রাসায় চাকরির ক্ষেত্রে ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের গ্রাজুয়েটদেরকে বঞ্চিত করার প্রতিবাদ জানিয়ে আরবি প্রভাষক, সহকারী মৌলভি, প্রভাষক গ্রন্থাগার ও সহকারী গ্রন্থাগার পোস্টে ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগকে পুনরায় যোগ্যতার পরীক্ষায় অংশগ্রহণের ন্যায্য সুযোগ প্রদানের আহ্বান জানান।

সভাপতির বক্তব্যে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের কলা অনুষদের ডিন প্রফেসর ড. বেলাল হোসেন বলেন, “ইসলাম ও ইসলামী শিক্ষার উপর বিগত সালগুলোতে যে বৈষম্য তৈরি করা হয়েছে তা দূর করার জন্য ঐক্যবদ্ধভাবে এগিয়ে যেতে হবে। উপস্থাপিত দাবিসমূহ আদায়ে অগ্রাধিকারের ভিত্তিতে সুনিপুণ কাজ করতে হবে। সময়ের চাহিদার আলোকে এমন আয়োজন করার জন্য সোসাইটির দায়িত্বশীলদের তিনি ধন্যবাদ জানান।

সভায় অন্যান্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের প্রফেসর ড. মুহাম্মদ ইউসুফ, প্রফেসর ড. মোস্তফা মঞ্জুর, ড. আমীর হোসেন, ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় কুষ্টিয়ার আল-হাদিস এণ্ড ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের চেয়ারম্যান প্রফেসর ড. আখতার হোসাইন, প্রফেসর ড. কামরুজ্জামান, আন্তর্জাতিক ইসলামি বিশ্ববিদ্যালয় চট্টগ্রামের শরীয়া অনুষদের ডিন প্রফেসর ড. মোস্তফা কামিল মাদানী, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রফেসর ড. শাহ মুখতার আহমেদ, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের, ড. ইবরাহিম খলিল, প্রফেসর ড. রহীম উল্লাহ, জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের সহযোগী অধ্যাপক ড. মোস্তাফিজুর রহমান, রাজশাহী কলেজের সহকারী অধ্যাপক মো. আব্দুল মজিদ, খাজা ইউনুস আলী বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রভাষক মাহফুজুর রহমান, এশিয়ান ইউনিভার্সিটি অব বাংলাদেশের প্রভাষক আরিফুল ইসলাম, পারবতীপুর দিনাজপুর ক্যান্টনমেন্ট পাবলিক স্কুল অ্যান্ড কলেজের সহকারী শিক্ষক যোবায়ের আলমসহ দেশের ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগ সংশ্লিষ্ট প্রায় সকল বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষার্থীগণ।