প্রকাশিত
আজাদ নাদভী, স্টাফ রিপোর্টার:
মুন্সীগঞ্জের সিরাজদিখান উপজেলার রসুনিয়া ইউনিয়নের ধামালিয়া(উত্তর পাড়া) গ্রামের পাওনা টাকা চাওয়ায় ক্ষিপ্ত হয়ে উল্টো ঢাকা পল্টন মডেল থানায় অপহরণ মামলা দায়ের করে হয়রানির অভিযোগ উঠেছে একই গ্রামের তপন শেখের স্ত্রী সাহিনূর আক্তার (২৬) এর বিরুদ্ধে। সরজমিনে জানা যায় তপন শেখ বেশ কয়েক মাস আগে বিদেশে যাবার জন্য টাকা জমা দেন এক ট্রাভেল এজেন্সির কাছে তাতে উৎসাহিত হয়ে তপন শেখ দায়িত্ব নিয়ে অনুরোধ করে থরিগাও গ্রামের মোঃ সালাউদ্দিন শেখ (৩৩) ও সাগর শেখকে (২৯) টাকা জমা দিয়ে ইউরোপ যওয়ার জন্য। তপন শেখ তাদের দুই ভাই এর কাছ থেকে ইউরোপ নিবে বলে মোটা অংকের টাকা হাতিয়ে নেয় । ইউরোপ না নিয়ে তপন শেখ তাদের দুই ভাইকে অন্য দেশে রেখে আসে, তার কিছু দিন পর সালাউদ্দিন শেখ ও সাগর শেখ পরিবাের সহযোগিতা নিয়ে সেখান থেকে চলে নিজ দেশে। পরে সালাউদ্দিন ও সাগর শেখ তপন শেখকে চুক্তি ভঙ্গ করে অন্য দেশে তাদের ফেলে আসার কারণ জানতে চায় এবং তপন শেখ এর কাছে তাদের দেয়া টাকা দাবি করে দুই ভাই। এতে তপন শেখ স্থানীয় সালিশির মীমাংসায় আড়াই লক্ষ টাকা দিয়ে দেয় এবং বাকি টাকা তিন মাসের মধ্যে দিয়ে দিবে এমন অঙ্গীকার করে এবং স্টাম্প পেপারে সিগনেচার করে স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গের সামনে। তপন সালিশদের বলেন, আমাকে আপনারা ঢাকা অফিসে নিয়ে চলেন আমি সেখান থেকে আপনাদের টাকা তুলে দেওয়ার ব্যবস্থা করব। তপনের কথা অনুযায়ী সালাউদ্দিন ও সাগর শেখ স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিদের নিয়ে পল্টন ট্রাভেল এজেন্সি অফিসে চলে যায় এবং সেখান থেকে তপন বিভিন্ন অযুহাত দিয়ে এলাকায় চলে আসে এবং গা ঢাকা দেয়। দুদিন পর জানা যায়, তপনের স্ত্রী শাহিনুর আক্তার পল্টন থানায় গিয়ে তার স্বামী তপনকে নিখোঁজ দেখিয়ে সালাউদ্দিন ও সাহিন শেখ এবং তার পিতা রমজান শেখকে আসামি করে একটি অপহরণ মামলা দায়ের করে যার মামলা নম্বর ২১এবং ধারা ৩৬৫/৩৪ (পেনাল কোড, ১৮৬০)। মামলার বিষয়ে বাদী শাহিনূুর আক্তারের কাছে জানতে চাইলে তিনি টাকা নেয়ার কথা স্বীকার করে বলেন, তারা ইউরোপে ঢুকতে না পেরে আমার স্বামীকে হুমকি দিয়েছিল তাই তারা তাকে অপহরণ করেছে।
বিবাদী রমজান শেখ বলেন, আমরা এজেন্সির সাথে কথা বলে একসাথে সিরাজদিখান এসেছি এবং ভিডিও কলে বিএনপি নেতা আতাউরের সাথে এলাকায় পৌছার বিষয়টি নিশ্চিত করেছি। এছাড়া একই গ্রামের সাইফুল বলেন ঐদিন ঘটনাক্রমে আমি এবং তপন শেখ ঢাকা থেকে বলাকা পরিবহনে পাশাপাশি বসে ঢাকা হতে এসেছি ও সিরাজদিখানে একসাথে নেমেছি অথচ এখন শুনি তাকে ঢাকা থেকে অপহরণ করা হয়েছে। রিকশা চালক শাহজান বলেন, ঐদিন বিকেলে সিরাজদিখানে তাকে ডাক দেই বাসায় যাবেন কিনা? সে বলে আমি পরে যাব।
এছাড়াও বিশ্বস্ত সূত্রে ভিডিও বক্তব্যের মাধ্যমে তপন শেখের চাচা আব্দুল জলিল শেখ বলেন, আমার ভাতিজা নিরাপদেই আছে তাদের চাপের কারনে ভাতিজাকে আড়াল করে উক্ত অপহরণ মামলাটি দায়ের করতে বাধ্য হই।
বিবাদী রমজান শেখ বলেন, কেমন দুনিয়ায় আসলাম আমাদের কাছ থেকে ১৯ লক্ষ টাকা নিয়ে আমার ছেলেদের বিদেশ নিতে পারেনি উল্টো আমাদের অপহরণ মামলা দিয়ে হয়রানি করতেছে। আমি এর সুষ্ঠু বিচার চাই।
পল্টন মডেল থানার তদন্তকারী কর্মকর্তা আজিজুল ইসলাম বলেন, মামলার তদন্ত কাজ জোড়ালো ভাবেই চলছে এবং কারিগরি সহযোগিতা নিচ্ছি আশা করি দ্রুতই এর রহস্য উদঘাটন করতে পারবো।
আপনার মতামত লিখুন :