প্রকাশিত,১১, আগস্ট,২০২৩
মোঃ রিফাত হোসেনঃ
আমাদের দেশের ৬৫টি জেলার প্রতিটি জেলা ভ্রমণ করার যে স্বপ্নটি ছিলো অবশেষে তার মধ্যে ২৬ টি পূর্ণ হলো। একদম ছোট থেকে যেই যাত্রাটা শুরু করার ইচ্ছে হয়েছিল, তা একদিক থেকে দারুণ এক মোড়ে উপস্থিত হলো।
এর মানে কখনোই এটি নয় যে দেশের বিভিন্ন অংশে ঘোরা কমে যাবে, দেশের আনচে-কানাচে ঘুরতে থাকা চলতে থাকবে। দেশকে দেখার নেশা এখনো একটুও কমেনি। এই দারুণ মোড়ে এসে কিছু স্মৃতি রোমন্থন করতে ইচ্ছে হলো সেই শুরু থেকে।
প্রথম যাত্রাটা শুরু করেছিলাম নিজের জেলা কুমিল্লার শালবন বৌদ্ধ বিহার থেকে। আমি স্কুল লাইফে শুধু একবার বন্ধুদের সাথে ঘুরতে গিয়েছিলাম। তারপর থেকে বন্ধুদের সাথে আর কোন ঘুরা হয়নি। একদিন হঠাৎ করেই দুই ভাইয়ের সাথে পরিচয়। আস্তে আস্তে তাদের সাথে ভাই আর বন্ধুর মতো চলা শুরু। তাদের সাথে শুরু হয় ঘোরাঘুরি। ঘোরাঘুরি করতে করতে এক সময় দেখি যে আমাদের এই ৩ জনের খুব অল্প সময়ে ২৬ টি জেলা ভ্রমন করেছি।
আমার সাথে যে ২ বড় ভাই তাদের নাম হলো মোঃ সাইফুল ইসলাম ওনার সাথে কোথাও গেলে সবাই বলে যে আমি ওনার আপন ছোট ভাই। আসলে বলার ও কারন আছে এমন ভাবে চলা ফেরা করি নিজের বড় ভাই এর মতো। আর এক বড় ভাই এর নাম মোঃ সাউন ওনার সাথে কোথাও গেলে সবাই বলে ওনি না কী আমাদের ২জন এর বড় ভাই তাই বেশির ভাগ সময় আমারা ৩ ভাই মিলেই ভ্রমনে যাই।
নেশা যখন পেশা, ভ্রমণ করা আমাদের কাছে নেশার মতো। জীবনে এখন পর্যন্ত সিনেমা দেখা আর ভ্রমণ আমাদের নেশা৷ ভ্রমণ করতে যেমন ভালো লাগে, অন্যদেরকে ভ্রমণ বিষয়ে সহায়তা করতেও ভালো লাগে এই পেশায় এসে। তাই নানাভাবে বিভিন্ন প্রবলেমের সল্যুশন খোঁজার চেষ্টা করছি এবং সেগুলো বাস্তবায়নের মাধ্যমে কোটি মানুষকে সহায়তা করতে চাই।
অভিজ্ঞতা অর্জনের যাত্রা, আমরা ব্যক্তিগতভাবে একজন অভিজ্ঞতাপ্রেমী। নতুন নতুন অভিজ্ঞতা নিতে সবসময় ছুটে চলি। দেশের বিভিন্ন জেলায় ঘোরেও নানা রকম অভিজ্ঞতা নেওয়ার চেষ্টা করেছি। এই অভিজ্ঞতা সংগ্রহের যাত্রাটা ভালোই দীর্ঘ ছিলো, অনেক কষ্টেরও ছিলো, ঘুরাঘুরিকেই গুরুত্ব দেওয়াতে অনেক সমস্যা তৈরী হয়েছে। কিন্তু দিনশেষে মনের মধ্যে প্রশান্তি ছিলো, যেকোন সমস্যা সমাধানের পর্যাপ্ত অনুপ্রেরণা ছিলো। ক্রমে ক্রমে বিভিন্ন অভিজ্ঞতাগুলো নতুন পেইজ, ওয়েবসাইট ও ইউটিউব চ্যানেলে তুলে ধরার চেষ্টা করবো।
মুক্ত পাখির স্বপ্ন, আগেও ঘোরেছি, তবে ২০২০-২৩ সালে যখন ঘুরেছি তখন নিজের কাছে নিজেকে মুক্ত পাখির মতো মনে হয়েছে। যেখানে ইচ্ছা ঘুরে বেড়াচ্ছি, আকাশটাকে আরও সুন্দর লাগছে যেন, প্রকৃতি আরও বেশি যেন মুগ্ধতা ছড়ায়৷ ফলে এই সময়ে অনেক অনেক ঘুরেছি, নতুন সব অভিজ্ঞতা নিতে দেশের নানা প্রান্তে ছুটে গিয়েছি।
যানবাহনের বৈচিত্র্য, এতো রকম বৈচিত্র্যময় যান চলাচল বাংলাদেশের! সত্যিই অবাক করার মতো। বাংলাদেশে চলে এমন কোন যানবাহন নেই যেটিতে চড়িনি। প্রত্যেক জেলায় চলাচলের যে ব্যতিক্রমী সব ব্যবস্থা তা একমাত্র অনেকগুলো জেলা ঘুরলেই বোঝা যায়। একটি জেলা কতটা উন্নত হয়েছে তা সেই জেলার যানবাহন দেখেই বলে দেওয়া যায়। আমার ক্ষেত্রে নানা রকম যানবাহনগুলো বেশি গুরুত্বপূর্ণ এর চালকদের জন্য। অনেকেই আমাদের জন্য নতুন জেলায় গাইডের কাজ করেছে এবং এরকম অনেকজনের নাম্বার এখনো ফোনবুকে পাওয়া যাবে।
চাইলেই সম্ভব, দেশের এ প্রান্ত থেকে ও প্রান্তের ৬৪টি জেলা শুনলে অনেক বড় মনে হলেও চেষ্টা করলেই ঘুরে দেখা সম্ভব। স্কুল-কলেজ জীবনে শুরু করতে পারলে ভালো, তবে বিশ্ববিদ্যালয় জীবনে শুরু করলে যে কারো পক্ষেই সম্ভব। একটু আগে থেকে প্ল্যান করে নতুন কোন জেলায় গেলে খুব একটা খরচও হয় না। লোকাল ট্রান্সপোর্ট ব্যবহার করে, হালকা খাওয়া-দাওয়া করে এবং স্থানীয় কারো কাছ থেকে প্ল্যানিং রিচেক করে নিলে দেখবেন খরচ একদম কম। সারাদেশ ঘুরে দেখতে হলে ট্যুরিস্টের মতো চললে হবে না ট্রাভেলারের মতো করে চলতে হবে। তাহলেই সম্ভব।
সেফটি ও সিকিউরিটি, অনেকেই মনে করে দেশের আনাচে-কানাচে ঘুরে বেড়ানো হয়তো তেমন সেইফ না। একদমই সত্য নয়। স্থানীয় মানুষজন আপনাকে অনেক সাহায্য করবে। আমরা নিজেরা চেষ্টা করেছি এমনভাবে ঘোরার প্ল্যানগুলো করার যাতে করে নিজের সেফটি নিয়ে তেমন চিন্তা করতে না হয়। আর একথা বাস্তব যে দেশের বিভিন্ন প্রান্তের এলাকাগুলোর সার্বিক নিরাপত্তা এখন অনেক জোরদার।
এ যাত্রার শেষ নেই, আমাদের দেশের ৬৪ জেলা রয়েছে তার বেশিরভাগ জায়গাতে এখন ও যেতে পারি নাই। ৬৪ জেলা থেকে ২৬ টি জেলা ভ্রমন করেছি। প্রতিটা জেলার সৌন্দর্য শীতকালে, বসন্তে ভ্রমনের মাধ্যমে দেখতে চাই; প্রিটি জেলার খাবাবে স্বাদ নিতে চাই।পথে-প্রান্তের অভিজ্ঞতা নেওয়ার যাত্রায় শেষ বলে কোন কথা নেই। দেশের এপ্রান্ত থেকে ও প্রান্তে ঘুরে দেখতে চাই ইনশাআল্লাহ। এবার পৃথিবীর এ প্রান্ত থেকে ও প্রান্ত ঘুরে দেখতে চাই। সবাই দোয়া করবেন।
আপনার মতামত লিখুন :