নাঙ্গলকোটে গৃহবধূকে ধর্ষণের পর চুল কেটে দেওয়ার অভিযোগে মামলায় আটক ১


দেশ সময় প্রকাশের সময় : ২০২৫-০৪-১৯, ৮:১৮ অপরাহ্ন /
নাঙ্গলকোটে গৃহবধূকে ধর্ষণের পর চুল কেটে দেওয়ার অভিযোগে মামলায় আটক ১

প্রকাশিত

রবিউল হোসাইন সবুজ, কুমিল্লা প্রতিনিধি

কুমিল্লার নাঙ্গলকোটে এক গৃহবধূকে ধর্ষণের পর চুল কেটে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। এই ঘটনায় তিনজনকে অভিযুক্ত করে মামলা করেছেন ওই গৃহবধূ। প্রতিবেশিদের সঙ্গে জমিজমা সংক্রান্ত বিরোধের জেরে প্রতিশোধ নিতে প্রতিপক্ষ এই ধর্ষণের ঘটনা ঘটায় বলে জানিয়েছে ভুক্তভোগীর পরিবার।

গত বৃহস্পতিবার রাত ১২টার পর উপজেলার দৌলখাঁড় ইউনিয়ন কান্দাল গ্রামে এই ঘটনা ঘটেছে বলে মামলায় উল্লেখ করেছেন ভুক্তভোগী। গৃহবধূর স্বামী রাজধানী ঢাকায় একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে গাড়ি চালকের চাকরি করেন। ঘটনার দিন ওই গৃহবধূর বাড়িতে অসুস্থ শাশুড়ি এবং দুই বছরে শিশু ছাড়া আর কেউ ছিলেন না।

অভিযুক্তরা গৃহবধূকে ধর্ষণের পর তার ঘর থেকে নগদ টাকা ও স্বর্ণালংকারও লুট করে নিয়ে যায় বলে মামলায় উল্লেখ করা হয়েছে। গৃহবধূকে ধর্ষণের ঘটনায় দুইজনের নাম উল্লেখ এবং অপর একজনকে অজ্ঞাত আসামি করে মামলা করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন নাঙ্গলকোট থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা একে ফজলুল হক। তিনি জানান, শুক্রবারেই মামলাটি করা হয়। অভিযুক্ত ইমাম হোসেনকে আটক করে কারাগারে পাঠানো হয়েছে এবং ভুক্তভোগীকে মেডিকেল টেস্টের জন্য কুমিল্লা মেডিকেল কলেজে হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।

মামলা সূত্রে জানা যায়, ইমাম হোসেন ছাড়াও এই মামলায় জাহিদুল্লাহ ও অজ্ঞাত আরো জনকে আসামি করা হয়েছে।

ভুক্তভোগী গৃহবধূ মামলায় উল্লেখ করেন, অভিযুক্ত ইমাম হোসেনের পরিবারের সঙ্গে দীর্ঘদিন যাবত জমি জমা সংক্রান্ত বিরোধ রয়েছে। এর আগেও অভিযুক্ত ইমাম হোসেন ওই গৃহবধূকে ধর্ষণের হুমকি দেয়। গত বৃহস্পতিবার রাত আনুমানিক রাত ১২টার ১০ মিনিট পর ইমাম হোসেনসহ আরও দুইজন বাড়ির দরজা ভেঙে গৃহবধূর ঘরে প্রবেশ করেন। পরে তার হাত-পা ও মুখ বেঁধে ধর্ষণ করা হয়। ধর্ষণের পর চুল কেটে ফেলেন অভিযুক্তরা।

মামলায় আরও উল্লেখ করা হয়, অভিযুক্তরা ওই গৃহবধূর ঘর থেকে দেড় লক্ষাধিক নগদ অর্থ, স্বর্ণালংকার এবং জরুরি দলিলাদি লুট করে নিয়ে যায়। লুটতরাজের সময় পাশের ঘরে থাকা ওই গৃহবধূ শাশুড়ি টের পেলে তার চিৎকার চেঁচামেচিতে প্রতিবেশিরা এগিয়ে আসেন। এসময় অভিযুক্তরা পালিয়ে যায়।

ভুক্তভোগীর স্বামী জানান, পাশের বাড়ির ইমাম হোসেনের সঙ্গে আমাদের দীর্ঘদিন জমিজমা সংক্রান্ত বিরোধ রয়েছে। ইমাম হোসেন দীর্ঘদিন যাবত আমাদের বিরুদ্ধে বিভিন্ন হুমকি ধমকি ও মামলা দিয়ে হয়রানি করে আসছিলেন। চাকরির সুবাদে বৃহস্পতিবার ঘটনার দিন আমি বাড়িতে ছিলাম না, ঐদিনও ওই পরিবারের মানুষের সঙ্গে আমার স্ত্রীর কথা কাটাকাটি হয়। এরপরই রাতে এই ঘটনা ঘটে। ধর্ষণের পর আমার স্ত্রীর চুল কেটে দিয়ে গেছে তারা। আমি এই ঘটনার সুষ্ঠু বিচার চাই।

নাঙ্গলকোট উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ আল-আমিন সরকার জানান, ঘটনাটির বিষয়ে আমি অবগত আছি। প্রাথমিক তথ্য ও উপাত্ত সংগ্রহ শেষে এ বিষয়ে একটি মামলা হয়েছে থানায়। ওসির সঙ্গে ঘটনাটি নিয়ে কথা হয়েছে। বিষয়টি খুবই স্পর্শকাতর বিধায় পুলিশ মামলাটি গুরুত্বের সঙ্গে দেখছে।