ঠাকুরগাঁওয়ে মেলার নামে লটারি বাণিজ্য।


দেশ সময় প্রকাশের সময় : ২০২৫-০৪-০৮, ৯:২৩ অপরাহ্ন /
ঠাকুরগাঁওয়ে মেলার নামে লটারি বাণিজ্য।

প্রকাশিত

স্টাফ রিপোর্টার ঠাকুরগাঁওঃ

ঠাকুরগাঁওয়ে লটারি বিক্রীর নামে চলছে জুয়া বাণিজ্য। এ নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রতিবাদে ঝড় উঠলেও তা বন্ধে কার্যত পদক্ষেপ নেই প্রশাসনের। গেল ১ এপ্রিল পীরগঞ্জ উপজেলার ডায়াবেটিক হাসপাতাল সংলগ্ন এলাকায় আনুষ্ঠানিকভাবে উদ্বোধন করা হয় হস্ত ও কুটির শিল্প মেলার। আর এ মেলার আড়ালে সেদিন থেকেই চলছে লটারির নামে জুয়া বাণিজ্য। মেলাটি মাসব্যাপী চলার কথা রয়েছে।
জানা গেছে, জেলা প্রশাসক ইশরাত ফারজানা (ডিসিকে) ভুল বুঝিয়ে কোন রকমে মেলা চালানোর অনুমতি নেয় মেলা কমিটি।
আর মেলার অনুমতি নিয়েই আয়োজককারিরা চটকদার পুরস্কারের কথা বলে প্রতিদিন অর্ধশতাধিক যানবাহনে করে গ্রামাঞ্চলে ২০ টাকা করে প্রতিটি লটারির টিকিট বিক্রী করে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে। যদিও উপজেলা প্রশাসন ও পুলিশ প্রশাসন বলছে লটারির টিকিট বিক্রীর বিষয়টি তাদের অজানা।
অন্যদিকে গত (৬ এপ্রিল) ব্যাটারি চালিত বেশ কয়েকটি অটো যোগে পাশের উপজেলা রাণীশংকৈলে লাটারির টিকিট বিক্রী করার সময় থানা পুলিশ তিনটি অটো, লটারির বাক্স ও কয়েকজনকে আটক করে।
পরে মেলা কমিটি খবর পেয়ে দ্রুত ছুটে যায় রাণীশংকৈল থানায়। লটারির টিকিট বিক্রী পুরোপুরি বন্ধ রাখার কথা বলে মুছলেকা দিয়ে আটকৃত ব্যক্তি ও যানবাহন ছাড়িয়ে নিয়ে আসে। এখানেও পুলিশ প্রশাসনে ধোকা দেয় তারা। এতোকিছুর পরেও বন্ধ হয়নি অবৈধ লটারি বাণিজ্য।

প্রশাসনের চোঁখ ফাঁকি দিয়ে পুনরায় প্রতিদিন লাখ লাখ টাকা লুফে নিচ্ছে গ্রামের সহজ সরল মানুষের কাছ থেকে। তবুও যেনো নিশ্চুপ জেলা প্রশাসন। কার্যত প্রদক্ষেপ নেই লটারি বাণিজ্য বন্ধের।
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেইসবুকে লটারি বাণিজ্য বন্ধে বিভিন্ন জনের পোস্টের কমেন্ট বক্সে জড়ালো মন্তব্য করতে দেখা গেছে। বেশিরভাগ মানুষ দাবি তুলেন লাটারির নামে জুয়া বাণিজ্য বন্ধের।
পীরগঞ্জ উপজেলার বাসিন্দা আলী আকবর, শরিফুল ইসলাম, আব্দুর রহমানসহ বেশকয়েকজন বলেন, নাম দেয়া হয়েছে হস্ত ও কুটির শিল্প মেলা। কিন্তু এর আড়ালে সাধারণ মানুষের উপার্জিত টাকা লুফে নিচ্ছে। চটকদার পুরস্কারের কথা বলে প্রতিদিন লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে। প্রশাসনের নাকের ডোগায় এমন জুয়া বাণিজ্য চললেও অজ্ঞাত কারনে দেখেও যেনো দেখছেন না। সামনে এসএসসি পরিক্ষা। শিক্ষার্থীরা লটারির বিক্রীর মাইকিংয়ে অতিষ্ঠ। এমনিতে মানুষের আয় রোজগার কম। অন্যদিকে ফিলিস্তিনে গণহত্যা হচ্ছে এ অবস্থায় মেলার নামে উৎসব কতটা যৌক্তিক তা ভাবিয়ে তুলে। এ সময়ে মেলার অনুমতি দেয়াই ঠিক হয়নি অবিলম্বে তা বন্ধের দাবি তুলেন তারা।

এ বিষয়ে পীরগঞ্জ প্রেসক্লাবের সভাপতি জয়নাল আবেদীন বাবুল জানান, মেলার নাম করে লটারি বাণিজ্য হচ্ছে। সেই সাথে প্রবেশ টিকিটের সাথে লটারির টিকিট বিক্রী কোনভাবেই কাম্য নয়। শুরু থেকেই বলা হয়েছে লটারি কেনো। আয়োজক কমিটিকে বলা হয়েছে মেলা চলতে পারে লটারি যেনো না চলে। বিরোধীতা করা হয়েছে শুরু থেকেই তারপরেও লটারি বিক্রি হচ্ছে এটা ঠিক হচ্ছেনা। তা বন্ধে আবারো বলা হবে আয়োজক কমিটিকে।আর পীরগঞ্জ উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা রকিবুল হাসান ও থানার ওসি তাজুল ইসলাম জানান, মেলা কমিটি অবগত করেছিল মেলার প্রবেশ টিকিটগুলো লটারি করে পুরস্কার দিবে মেলায় ঘুরতে আসা মানুষকে। আলাদা করে লটারি টিকিট বিক্রি করছে তা অজানা। বিষয়টি খুতিয়ে দেখে ব্যবস্থা নেয়ার কথা জানান উপজেলা প্রশাসনের এই দুই কর্মকর্তা।