প্রকাশিত ০৫ মে ২০২৫
সঞ্জিব দাস, গলাচিপা (পটুয়াখালী) প্রতিনিধিঃ
পটুয়াখালীর গলাচিপায় জেল হাজতে থাকা ছেলেকে ফিরে পাওয়ার আশায় বৃদ্ধা মা আকুতি জানিয়ে পথে পথে ঘুরছেন।
ঘটনাটি ঘটেছে উপজেলার গলাচিপা সদর ইউনিয়নের কালিকাপুর গ্রামের ১ নম্বর ওয়ার্ডে। মা ফিরোজা বেগম (৬৫) হচ্ছেন কালিকাপুর গ্রামের হানিফ প্যাদার স্ত্রী ও গাজী কালু দরবারের একজন খাদেম এবং ভক্ত। ফিরোজা বেগম বলেন, দীর্ঘ কয়েক বছর আগে আমার ছেলে সোহাগ প্যাদা (৩৫) কে চট্টগ্রামে রহিম মিয়ার মেয়ে মোর্শেদা বেগম (২৫) এর সাথে বিবাহ করাই। তাদের দাম্পত্য জীবনে একটি পুত্র সন্তান রয়েছে। আমার ছেলে তার স্ত্রীকে নিয়ে নারায়ণগঞ্জের দলপুর গ্রামের মানিক নগর এলাকায় বসবাস করতেন। সেখানে খালেক মিয়ার ময়লার গাড়ি চালাতেন।
তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে আমার পুত্রবধূর সাথে ছেলের ঝগড়ার সৃষ্টি হয়। পরে আমার পুত্রবধূ সুযোগ বুঝে আমার ছেলের মাথায় ও হাতে লাঠি দিয়ে বারি দিলে আমার ছেলের মাথা ফেটে যায় এবং হাতে গুরুতর আঘাত পায়। এতেও তার রাগ না থামায় আমার ছেলের জামার বুক পকেটে নেশাজাতীয় দ্রব্য ঢুকিয়ে দিয়ে পুলিশে ধরিয়ে দেয়। বর্তমানে আমার ছেলে ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগার কাসিমপুর কারাগারে আছে। আমি শুনে কান্নায় ভেঙ্গে পড়ি। আমার অভাবের সংসার। স্বামীর বাত রোগ হওয়ায় কোন কাজ করতে পারে না।
আমার ছেলেটা মাঝে মধ্যে যে টাকা পাঠাত তা দিয়ে কোন মতে সংসার চলত। আমি গাজীকালুর দরবারে খেদমত করি। যেদিন খাবার পাই সেদিন খাই, খাবার না পেলে অনাহারে থাকি। আমার ছেলেটা থাকলে আমাকে এত কষ্ট করতে হত না। তাই আমি প্রশাসনের কাছে আমার ছেলেকে মুক্তি দেওয়ার জন্য জোর অনুরোধ করছি। এ বিষয়ে ফিরোজা বেগমের স্বামী সোহাগ মিয়ার বাবা হানিফ প্যাদা বলেন, আমি দীর্ঘদিন ধরে বাত রোগে আক্রান্ত। সামান্য ঠান্ডা পেলেই রাতে ঘুমাতে পারি না। এখন কোন কাজ করতে পারি না। ছেলেটা অনেক সাহায্য করত আমাদেরকে। এখন ছেলে জেলে থাকায় না খেয়ে থাকতে হচ্ছে। আপনারা আমার ছেলেকে মুক্তির ব্যবস্থা করে দিন। গলাচিপা সদর ইউনিয়নের ইউপি সদস্য আনোয়ার মিয়া বলেন, আসলেই অসহায় গরিব পরিবার ফিরোজা বেগমের। তাদের তেমন কোন জায়গা বা মজবুত ঘর নাই। পলিথিনের ঝুপড়ি ঘরে থাকেন। তার উপর ছেলেটা জেল হাজতে থাকায় তারা আরো অসহায় হয়ে পড়েছে। ছেলেকে ফিরে পেতে সারাদিন কান্না করছে ফিরোজা বেগম।
আপনার মতামত লিখুন :