প্রকাশিত
সঞ্জিব দাস, গলাচিপা, পটুয়াখালী, প্রতিনিধি
নারায়ণগঞ্জ থেকে অপহৃত ব্যবসায়ী মিম শরৎ গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. সোহাগ মিয়াকে হাত-পা ও মুখ বাঁধা অবস্থায় পটুয়াখালীর পায়রাগঞ্জ ফেরীঘাট থেকে উদ্ধার করা হয়েছে।সোমবার দুপুর দেড়টার দিকে তাকে তার ব্যবহৃত গাড়িতে হাত-পা বাঁধা অবস্থায় দেখতে পেয়ে স্থানীয় লোকজন পুলিশকে খবর দিলে পুলিশ গিয়ে তাকে উদ্ধার করে। তাৎক্ষণিক তাকে আহত অবস্থায় পটুয়াখালী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। এ সময় পুলিশ দুটি গাড়ি উদ্ধার করেছে, তবে ড্রাইভাররা পালিয়ে গেছে। উদ্ধার হওয়া এই ব্যবসায়ীর বাসা নারায়ণগঞ্জের নিউ চাষারার ৮৯নং জামতলা এলাকায়। তার বাবার নাম আব্দুস সালাম ও মা মোসা. রহিমা বেগম।
পটুয়াখালী ডিবি পুলিশ জানায়, রোববার রাত ৯টার দিকে ব্যবসায়ী সোহাগ মিয়া তার নিতাইগঞ্জের অফিস থেকে বাসায় ফেরার পথে তার গাড়টি তুলারাম কলেজ গেটের সামনে আসলে ৫-৬ জনের একদল সন্ত্রাসী তার গাড়ির গতি রোধ করে গাড়িতে উঠে তার হাত-পা ও চোখ বেঁধে ফেলে। এ সময় তাকে মারধরও করে গাড়ি চালিয়ে পটুয়াখালী আসে। মিম শরৎ গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক সোহাগ মিয়াকে অপহরণের বিষয়টি নারায়ণগঞ্জ জেলা পুলিশকে পরিবারের পক্ষ থেকে জানানো হলে পুলিশ রোববার রাতেই তাকে উদ্ধারে তৎপর হলে অপহরণকারীরা বেকায়দায় পড়ে।
ড্রাইভার ও অপহৃত ব্যবসায়ীর ফোন ট্রেকিং করে তাদের লোকেশন চিহ্নিত করার চেষ্টা করেও সফল হয়নি।তবে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর তৎপরতায় সোমবার সকালে অপহরণকারীরা ব্যবসায়ী সোহাগ মিয়াকে সোমবার সকাল ৬টার দিকে পটুয়াখালীর পায়রাগঞ্জ ফেরীঘাটে নির্মাণাধীন সেতুর বালির মাঠে গাড়িসহ ফেলে রেখে অন্য একটি গাড়িতে অপহরণকারীরা পালিয়ে যায় বলে ধারণা করা হচ্ছে। স্থানীয় লোকজন দুপুর ১২টার দিকে ২টি গাড়ি অনেক সময় পড়ে থাকতে দেখে গাড়ির পাশে গিয়ে দেখতে পান গাড়ির মধ্যে হাত-পা ও মুখ বাঁধা অবস্থায় এক লোক তাদের সাহায্য চাইলে তারা থানা পুলিশকে খবর দিলে ডিবি, সদর থানা ও নৌপুলিশ তাকে উদ্ধার করে পটুয়াখালী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করে।এ ঘটনায় নারায়ণগঞ্জ পুলিশের একটি দল ব্যবসায়ী সোহাগকে নিয়ে যাওয়ার জন্য পটুয়াখালীর উদ্দেশ্যে রওয়ানা হয়েছে বলে জানিয়েছেন পটুয়াখালী সদর থানার ওসি।
তিনি জানান, উদ্ধার ব্যবসায়ী সোহাগ মিয়াকে উন্নত চিকিৎসার জন্য বিকাল ৬টার দিকে হেলিকপ্টারে করে ঢাকায় নিয়ে যাওয়া হয়েছে।
নারায়ণগঞ্জের পুলিশ সুপার প্রত্যুষ কুমার মজুমদার জানান, মিম শরৎ গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক অপহরণ হয়েছে এমন অভিযোগ পরিবারের পক্ষ থেকে জেলা পুলিশ সুপারকে জানানো হলে জেলা পুলিশের বেশ কয়েকটি টিম তাকে উদ্ধার করতে তৎপর হয়ে ওঠে।
আমরা তাৎক্ষণিক মিম শরৎ গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক সোহাগের মোবাইল ফোন ট্র্যাকিং করে তার সর্বশেষ লোকেশন নির্ধারণ করে পটুয়াখালী পুলিশের সহযোগিতা চাই। পটুয়াখালী পুলিশের সহযোগিতায় মিম শরৎ গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালককে উদ্ধার করা হয়েছে। নারায়ণগঞ্জ জেলা পুলিশের একটি টিম তাকে নিয়ে আসার জন্য পটুয়াখালীর উদ্দেশ্যে রওনা হয়েছে। তবে তার পরিবারের পক্ষ থেকে এখন পর্যন্ত কোনো থানায় অভিযোগ বা মামলা বা জিডি করা হয়নি। সোহাগের ড্রাইভারের মোবাইল ফোন বন্ধ পাওয়া যাচ্ছে। ধারণা করা হচ্ছে, অপহরণের সঙ্গে তার ড্রাইভারের যোগসাজস থাকতে পারে। পুলিশ বিষয়টি তদন্ত করছে। তদন্তে অপহরণের সঙ্গে যার সংশ্লিষ্টতার প্রমাণ পাওয়া যাবে তাকে দ্রুততম সময়ের মধ্যে আইনের আওতায় নিয়ে আসা হবে।
আপনার মতামত লিখুন :