ন্যায় ও ইনসাফ ভিত্তিক রাষ্ট্র গঠনে জামায়াতে ইসলামী কাজ করছে— মাজেদুর রহমান।


দেশ সময় প্রকাশের সময় : ২০২৪-০৯-১৭, ২:২৭ অপরাহ্ন /
ন্যায় ও ইনসাফ ভিত্তিক রাষ্ট্র গঠনে জামায়াতে ইসলামী কাজ করছে— মাজেদুর রহমান।
Print News || Dailydeshsomoy

প্রকাশিত,১৭,সেপ্টেম্বর

হারুন সুন্দরগঞ্জ গাইবান্ধা

বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী গাইবান্ধা জেলা শাখার নায়েবে আমীর ও সুন্দরগঞ্জ উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান মো. মাজেদুর রহমান সরকার বলেছেন, ‘রাসুল (সা.) এই পৃথিবীতে এসেছিলেন মিথ্যা ও সকল ধরনের বৈষম্যকে অপসারিত করার জন্য। তিনি আজ থেকে ১৫’শ বছর পূর্বে সুদুর আরবের মক্কা ও মদিনায় বৈষম্যবিরোধী একটি রাষ্ট্র গঠন করেছিলেন। তিনি ন্যায় ও ইনসাফভিত্তিক একটি কল্যাণমূলক রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করেছিলেন। আগামী দিনে এই বাংলাদেশকে যদি বৈষম্যমুক্ত করতে হয় তাহলে রাসুল (সা.) এঁর আদর্শে দেশ পরিচালনা করতে হবে। তাঁর আদর্শে এই দেশে অর্থব্যবস্থা পরিচালিত করতে হবে। ১৫’শ বছর পরে বাংলাদেশের সবুজ ভূখণ্ডে কল্যাণমূলক, সত্য, ন্যায় ও ইনসাফ ভিত্তিক একটি রাষ্ট্র গঠনের জন্য জামায়াতে ইসলামী কাজ করছে।’

তিনি আরও বলেন, ‘আগামী দিনে জামায়াতে ইসলামীকে নির্বাচিত করার মধ্য দিয়েই সম্ভব বাংলাদেশকে একটি কল্যাণমূলক রাষ্ট্র হিসেবে প্রতিষ্ঠা করা। তাই আগামী নির্বাচনের আগেই বাংলাদেশের প্রতিটি মানুষের কাছে আমরা জামায়াতে ইসলামীর দাওয়াত পৌঁছে দিতে হবে। সুন্দরগঞ্জের পনেরটি ইউনিয়নের সকল মানুষের কাছে ইসলামের দাওয়াত পৌঁছে দিতে হবে। সবাইকে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে ময়দানে ঝাঁপিয়ে পড়তে হবে। তাহলেই একটি আদর্শ রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করা সম্ভব হবে।’

সন্ধ্যায় সুন্দরগঞ্জ পৌরশহরের বাহিরগোলা জামে মসজিদ মোড়ে সুন্দরগঞ্জ উপজেলা জামায়াতে ইসলামীর আয়োজনে সিরাতুন্নবী (সা.) উপলক্ষ্যে বর্ণাঢ্য র‍্যালী শেষে সংক্ষিপ্ত সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

মাজেদুর রহমান সরকার বলেন, জামায়াতে ইসলামীকে যারা বিগত ১৫ বছর ধরে সভা-সমাবেশ করতে দেয়নি, প্রকাশ্যে আসতে দেয়নি তারা আজ কেউ দেশ ছেড়ে পালিয়ে গেছে, আবার কেউ দেশের ভেতরই আত্মগোপন করে আছে। জনগণের সাথে তাদের আজ কোন সম্পর্ক নেই। জামায়াত-শিবিরকে জনগণ থেকে বিচ্ছিন্ন করতে এরাই কত ধরনের নীল-নকশা এঁকেছে। কত অপবাদ অপপ্রচার করেছে। কিন্তু দেশের জনগণ বুঝে গেছে জামায়াত-শিবির প্রতিষ্ঠাই হয়েছে জনগণের দাবি আদায়ের জন্য, জনগণের স্বাধীনতা প্রতিষ্ঠার জন্য। আজ দেশের প্রতিটি মানুষ বুঝতে পেরেছে জামায়াত-শিবিরের হাতেই এদেশের মানুষ ও বাংলার জমিন সবচেয়ে নিরাপদ। তাই জনগণ এখন প্রকাশ্যে জামায়াতের প্রতি ভালোবাসা প্রকাশ করতে শুরু করেছে।

তিনি আরও বলেন, ছাত্র-জনতার আন্দোলনের গণঅভ্যুত্থানে আমরা দ্বিতীয় স্বাধীনতা অর্জন করেছি। মনে করেছিলাম সকল ধরনের ষড়যন্ত্র থেকে মুক্ত হয়ে নতুন বাংলাদেশ গঠিত হবে। কিন্তু ৫ আগষ্টের পরাজিত শক্তি আওয়ামী সন্ত্রাসীরা খুনি হাসিনার নেতৃত্বে ভারতে মদদে এই দেশে আবারও ষড়যন্ত্র শুরু করেছে। আমরা যেভাবে জীবন দিয়ে রক্ত দিয়ে এই দেশ স্বাধীন করেছি, আগামীদিনেও তাদের ষড়যন্ত্র থেকে দেশকে মুক্ত করার জন্য জীবন ও রক্ত দিতে আমরা প্রস্তুত আছি।

উপজেলা জামায়াতের আমীর মো. শহিদুল ইসলাম মঞ্জুর সভাপতিত্বে সমাবেশে বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন সুন্দরগঞ্জ পৌরসভার সাবেক মেয়র মো. নুরুন্নবী প্রামাণিক সাজু। এসময় অন্যান্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন উপজেলা জামায়াতের সেক্রেটারি মো. আতাউর রহমান, সুন্দরগঞ্জ পৌর আমীর অধ্যক্ষ মো. একরামুল হক।

বিশেষ অতিথির বক্তব্যে সাবেক পৌর মেয়র মো. নুরুন্নবী প্রামাণিক সাজু বলেন, ‘আমাদের প্রিয় নেতা মুহাম্মদ (সা.) শান্তির দূত হিসেবে এই পৃথিবীতে এসেছিলেন। তাঁর মহান আদর্শ এই বাংলাদেশে বাস্তবায়ন করার জন্য আমরা চেষ্টা করে যাচ্ছি। এই কাজ করতে গিয়ে দীর্ঘ জুলুম নির্যাতন সহ্য করেছি। আজকে আমাদের সময় এসেছে তাঁর মহান আদর্শে নিজেকে গড়ার এবং জাতির কাছে দাওয়াত পৌঁছানোর। আগামী দিনে আমরা যেন সুশৃঙ্খলভাবে এই জাতির মাঝে নেতৃতে দিতে পারি সেই প্রচেষ্টা চালাতে হবে। দেশের হিন্দু ভাইদের প্রতি আহ্বান আপনারা বিশ্বের আদর্শিক মহান নেতা রাসূল (সা.) সম্পর্কে জানুন। জামায়াতে ইসলামী তাঁরাই আদর্শে কাজ করে যাচ্ছে। জামায়াতে ইসলামী রাষ্ট্র পরিচালনার দায়িত্বে আসলে আপনারা নিরাপদ থাকতে পারবেন ইনশাআল্লাহ।’

সভাপতির বক্তব্যে উপজেলা জামায়াতের আমীর মো. শহিদুল ইসলাম মঞ্জু বলেন, ‘মহান নেতা হযরত মুহাম্মদ (সা.) এর আদর্শ বাস্তবায়নে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী কাজ করে যাচ্ছে। আমরা চাই এই বাংলাদেশকে একটি কল্যাণমূখী আদর্শ রাষ্ট্র গড়তে চাই। এতে দেশের আপামর মানুষকে এগিয়ে আসতে হবে। আমাদের সুন্দর জনপদ এই সুন্দরগঞ্জকে একটি আদর্শিক জনপদ তৈরি করতে জামায়াতে ইসলামী বদ্ধপরিকর। রাসূল (সা.) এর মহান আদর্শ মানুষের মাঝে পৌঁছে দিয়ে সবার মন জয় করতে হবে।’

আলোচনা সভার আগে সিরাতুন্নবী (সা.) উপলক্ষ্যে একটি বর্ণ্যাঢ্য র‍্যালি শহরের বাহিরগোলা মসজিদ মোড় থেকে বের হয়ে শহরের প্রধান প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ করে। শেষে একইস্থানে গিয়ে সংক্ষিপ্ত সমাবেশ করেন। এতে উপজেলার পনেরটি ইউনিয়ন ও একটি পৌরসভার প্রায় ২০ হাজার জনসাধারণ অংশগ্রহণ করেন