
প্রকাশিত
গলাচিপা (পটুয়াখালী) প্রতিনিধি
পটুয়াখালীর গলাচিপায় সরকারি খাস জমি দখল ও চাষাবাদকে কেন্দ্র করে ওয়ার্ড বিএনপির সভাপতি আনোয়ার হাওলাদার গ্রুপ এবং বিত্তহীন কৃষক সমবায় সমিতির সদস্যদের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এতে নারীসহ অন্তত ২৫ জন আহত হয়েছেন।
বৃহস্পতিবার (১৩ নভেম্বর) দুপুরে উপজেলার চরবিশ্বাস ইউনিয়নের চরবাংলা এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। গুরুতর আহতদের গলাচিপা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, দীর্ঘদিন ধরে চরবাংলা এলাকার খাস জমি নিয়ে ইউনিয়ন বিএনপির স্থানীয় নেতা আনোয়ার হাওলাদার গ্রুপ ও বিত্তহীন কৃষক সমবায় সমিতির সভাপতি সিরাজ খা গ্রুপের মধ্যে বিরোধ চলছিল। সম্প্রতি উপজেলা প্রশাসনের মধ্যস্থতায় উভয় পক্ষের মধ্যে আপোষ মীমাংসা হলেও বৃহস্পতিবার দুপুরে তরমুজ চাষ ও ঘর নির্মাণকে কেন্দ্র করে পুনরায় সংঘর্ষ বাঁধে।
আহত জালাল তালুকদার বলেন, ভূমি অফিস থেকে ইজারা পাওয়া জমিতে চাষ দিতে গেলে চরবিশ্বাস ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি বাকের বিশ্বাস, সাংগঠনিক সম্পাদক মতিউর রহমান ও ওয়ার্ড সভাপতি আনোয়ার হাওলাদারের নেতৃত্বে বাধা দেন। শনিবার (৮ নভেম্বর) ইউএনও ও ওসি উভয় পক্ষকে নিয়ে বসে জমি ভাগাভাগি করে দেন। আজ দুপুরে আমরা চাষ দিতে গেলে তারা হামলা চালায়।
আহত সাহাবুদ্দিন তালুকদার বলেন, আমরা চরবাংলায় ৩০ বছর ধরে বসবাস করছি। উপজেলা ভূমি প্রশাসন আমাদের ১৫৫ জন কৃষককে জমি ইজারা দিয়েছে। কিন্তু স্থানীয় কয়েকজন বিএনপি নেতা আমাদের সেই জমিতে চাষ করতে দিচ্ছেন না।আমাদের ঘরবাড়ি ভেঙে ফেলেছে, মামলা করলে আমাদের জমির ধান কেটে ফেলবে।
অন্যদিকে, চরবাংলা ওয়ার্ড বিএনপির সভাপতি আনোয়ার হাওলাদার বলেন, বৃহস্পতিবার ধাক্কাধাক্কির ঘটনা ঘটে। চরবিশ্বাস ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি বাকের বিশ্বাস বলেন, পরে ঘটনা শুনেছি। প্রশাসনকে জানিয়েছি, তবে এ ঘটনায় আমার কোনো সংশ্লিষ্টতা নেই। গলাচিপা থানার ওসি মো. আশাদুর রহমান বলেন, খাস জমি নিয়ে দুপক্ষের মধ্যে বিরোধ চলছিল। একপক্ষ ভূমি অফিস থেকে ইজারা পেয়েছে, অন্যপক্ষ চাষাবাদের অনুমতি পেয়েছে। বৃহস্পতিবার দুপুরে তরমুজ ক্ষেতের ঘর নির্মাণ নিয়ে সংঘর্ষ হয়। এতে নারীসহ ২৫ জন আহত হয়েছেন। বর্তমানে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আছে। এখনও কেউ অভিযোগ করেনি, অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
গলাচিপা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মাহমুদুল হাসান বলেন, বিরোধীয় জমি নিয়ে শনিবার উভয় পক্ষকে নিয়ে আলোচনা করে সিদ্ধান্ত দেওয়া হয়েছিল। আজ যারা বিরোধ করেছে, সেই সিদ্ধান্তে তারাও উপস্থিত ছিল। এ ব্যাপারে দোষীদের বিরুদ্ধে কঠোর আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানান তিনি।