প্রকাশিত,০৬, জুলাই,২০২৩
রিয়াজুল হক সাগর, রংপুর।
রংপুরে ফেনসিডিল ও ইয়াবা রাখার অভিযোগে দায়ের করা পৃথক দুটি মামলায় নারী মাদক কারবারীকে যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদণ্ড ও অপর এক আসামিকে ১০ বছর কারাদণ্ডের আদেশ দিয়েছে আদালত।
বৃহস্পতিবার (৬ জুলাই) দুপুরে রংপুরের অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ আদালত-২ এর বিচারক কৃষ্ণকান্ত রায় এ রায় প্রদান করেন। তবে রায় ঘোষণার আগে আসামি আদালতে হাজিরা দিয়ে উপস্থিত থাকলেও রায় ঘোষণার সময় আদালত চত্বর থেকে পালিয়ে যায়।
মামলা ও আদালত সূত্রে জানা যায়, ২০১৬ সালের ৭ এপ্রিল রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের সামনে পঞ্চগড় থেকে ছেড়ে আসা ঢাকাগামী নাবিল পরিবহন নামে একটি যাত্রীবাহি বাসে তল্লাশি চালায় পুলিশ। ওই সময় বাসের মালামাল রাখার লকার থেকে ৫০ বোতল ফেনসিডিলসহ একটি ব্যাগ উদ্ধার হয়।
পরে মালামাল রাখা যাত্রীদের ট্যাগ দেখে মাদক কারবারী মাহমুদা আখতারকে আটক করে পুলিশ। মাহমুদা দিনাজপুর জেলার ফুলবাড়ি উপজেলার সাজনপুকুর বান্দিপাড়া গ্রামের আফজাল হোসেনের স্ত্রী। এ ঘটনায় কোতয়ালী থানার এস আই শাহাদত হোসেন বাদী হয়ে মাদক নিয়ন্ত্রণ আইনে মামলা দায়ের করে।
পরবর্তীকালে তদন্ত শেষে আসামি মাহমুদা আখতারের বিরুদ্ধে আদালতে চার্জসিট দাখিল করা হয়। মামলায় ৭ জন সাক্ষীর সাক্ষ্য ও জেরা শেষে আসামিকে দোষি সাব্যস্ত করে যাবজ্জীবান সশ্রম কারাদণ্ড ও ১০ হাজার টাকা জরিমানা অনাদায়ে আরো ৬ মাসের কারাদণ্ডের আদেশ দেয় আদালত।
এদিকে রায় ঘোষণার আগে আসামি আদালতে হাজিরা দিয়ে উপস্থিত থাকলেও রায় ঘোষণার সময় আদালত চত্বর থেকে পালিয়ে যায়।
পুরো বিষয়টি নিশ্চিত করে সরকার পক্ষে মামলা পরিচালনাকারী অতিরিক্ত পিপি এ্যাডভোকেট নয়নুর রহমান টফি জানান, আসামি আদালতে হাজিরা দিয়েছিলো। কিন্তু রায় ঘোষণার সময় তাকে ডাকাডাকি করেও আর পাওয়া যায়নি। সে আদালত চত্বর থেকে পালিয়ে গেছে। এ ঘটনায় আদালত আসামির বিরুদ্ধে গ্রেফতার পরোয়ানা জারির আদেশ দেন। সেই সাথে গ্রেপ্তারের দিন থেকে রায় কার্যকর করা হবে বলে বিচারক আদেশ নামায় উল্লেখ করেছেন।
অপর এক মাদক মামলায় ২৯৩ পিস ইয়াবা রাখার দায়ে আসামি আজিনুল আলম ভুট্টুকে দোষি সাব্যস্ত করে ১০ বছর সশ্রম কারাদণ্ডের আদেশ দিয়েছে আদালত। বৃহস্পতিবার দুপুরে রংপুরের অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ আদালত ২ এর বিচারক কৃষ্ণকান্ত রায় এ রায় প্রদান করেন।
মামলার বিবরণ থেকে জানা যায়, ২০১৮ সালের ২ এপ্রিল রংপুর নগরীর ডাঙ্গিরপাড় আহলে সুন্নাত ফোরকানিয়া মাদ্রাসা সংলগ্ন কাঁচা রাস্তা থেকে ২৯৩ পিস ইয়াবাসহ আসামি ভুট্টুকে গ্রেফতারকরে র্যাব। এ ঘটনায় র্যাব-১৩ এর পরিদর্শক এস এম সোবহান বাদী হয়ে মাদক দ্রব্য নিয়ন্ত্রন আইনে মামলা দায়ের করে।
তদন্ত শেষে আসামীর বিরুদ্ধে আদালতে চার্জসিট দাখিল করা হয়। মামলায় ৬ জন সাক্ষীর সাক্ষ্য ও জেরা শেষে আসামী ভুট্টুকে দোষি সাব্যস্ত করে ১০ বছর সশ্রম কারাদণ্ড ও ১০ হাজার টাকা জরিমানা অনাদায়ে আরো ৬ মাসের কারাদণ্ডের আদেশ দেন আদালত। রায় ঘোষনার সময় আসামি আদালতে উপস্থিত ছিলো। পরে পুলিশী পাহারায় তাকে আদালতের হাজতখানায় নেয়া হয়।
সরকার পক্ষে মামলা পরিচালনাকারী আইনজীবি নয়নুর রহমান টফি জানান, মাদক মামলায় আসামির সাজা দেবার মাধ্যমে ন্যায় বিচার নিশ্চিত হয়েছে। আসামি পক্ষের কোন আইনজীবী উপস্থিত না থাকায় তার বক্তব্য নেয়া সম্ভব হয়নি।
আপনার মতামত লিখুন :