প্রকাশিত,১৭,নভেম্বর
ময়মনসিংহ প্রতিনিধি ঃ
ময়মনসিংহে স্বামী হত্যা মামলায় দুলাভাইসহ স্ত্রীর মৃত্যুদন্ডের আদেশ দিয়েছেন আদালত।
রোববার (১৭ নভেম্বর) দুপুরে ময়মনসিংহের অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ ৫ম আদালতের বিজ্ঞ বিচারক আলী মনসুর এ রায় দেন।
মামলা সূত্রে জানা যায়, ময়মনসিংহের হালুয়াঘাট উপজেলার গোরকপুর গ্রামের ভিকটিম জনৈক হযরত আলীর ১ম স্ত্রীর সাথে বিবাহ বিচ্ছেদের পর সে কিছুদিন বিপত্মীক থেকে অত্র মামলার ঘটনার আনুমানিক ৯/১০ মাস পূর্বে স্বামী পরিত্যক্তা সাবিনা খাতুনের সাথে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হয়ে নিজ বাড়িতে সংসার বাধেন। সাবিনা খাতুন একসময় ঢাকা শহরে আসামী লিয়াকতের বাসায় থেকে আশে পাশে ঝিয়ের কাজ করতো। সে থেকে লিয়াকত তার স্ত্রীর অগোচরে সাবিনা খাতুনের সাথে বিবাহ বর্হিভূত সম্পর্ক গড়ে তোলে।
করোনাকালে লিয়াকত সপরিবারে ঢাকা থেকে বাড়ি ফিরে আসে। সাবিনা খাতুনও তার পিত্রালয়ে অবস্থানকালে সামাজিক আলোচনার মাধ্যমে হযরত আলীর সাথে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হয়। হযরত আলী সাবিনা খাতুনকে নিয়ে ঘর সংসার করাকালে প্রায়ই লিয়াকত আলী লোক চক্ষুর আড়ালে হযরত আলীর বাড়িতে যাতায়াত করে সাবিনা খাতুনের সাথে অবৈধ সম্পর্ক চালিয়ে যায়। অত্র মামলার ঘটনার প্রায় এক (১) মাস পূর্বে হযরত আলী তার ঘরে সাবিনা খাতুন ও লিয়াকত আলীকে আপত্তিকর অবস্থায় দেখতে পেয়ে উভয়কে গালমন্দ করে।
এমন অবস্থায় অনৈতিক সম্পর্ক চালিয়ে যাওয়ার পথে আসামি লিয়াকত ও সাবিনা খাতুন হযরত আলীকে বাধা মনে করে। আসামি লিয়াকত আলী ও সাবিনা খাতুন হযরত আলীকে হত্যার জন্য পরিকল্পনা চূড়ান্ত করে। আসামি লিয়াকত আলী ও সাবিনা খাতুনের হত্যা পরিকল্পনা অনুযায়ী তারা হযরত আলীকে হত্যার জন্য দিনক্ষণ নির্ধারণে অপেক্ষমান থাকে।
পরবর্তীতে ২০২১ সালের ২৯ আগস্টে হযরত আলী সারাদিন ঘর গৃহস্থালীর কাজ শেষ করে বিকাল অনুমান ৫ ঘটিকায় বাড়ি হতে নালিতাবাড়ির উদ্দেশ্যে বের হয়ে গোরকপুর বাজারে যায়। নিয়মিত বিরতিতে আসামি লিয়াকত ও সাবিনা খাতুন হত্যা পরিকল্পনা বাস্তবায়নের জন্য মোবাইল ফোনে হযরত আলীর অবস্থানের বিষয়ে কথা বলে। রাত আনুমানিক ১০টার দিকে সাবিনা খাতুন মোবাইল ফোনের মাধ্যমে হযরত আলীকে আসামি মোঃ লিয়াকত আলীর সাথে দেখা করতে বলে। পরে হালুয়াঘাট থানাধীন গোরকপুর বাজারে লিয়াকতের সাথে হযরত আলী দেখা করিলে আসামী লিয়াকত আলী কৌশলে হযরত আলীকে হালুয়াঘাট থানাধীন পশ্চিম কুতিকুড়া (ওলুয়াকান্দা) সাকিনস্থ আঁতলা বিলে নিয়ে যায়
পরে ওইদিন রাত আনুমানিক সাড়ে ১১টার দিকে আসামি লিয়াকত আলী (৩৬) হযরত আলীর গলায় গামছা পেঁচিয়ে শ্বাসরোধ করে হত্যা করে। আসামি লিয়াকত আলী হত্যাকান্ড সম্পন্ন করার বিষয়টি মোবাইল ফোনের মাধ্যমে সাবিনা খাতুন (২৮) কে অবহিত করে।
এছাড়া উভয় আসামি হত্যাকান্ডটিকে গোপন করার জন্য পরামর্শ করে এবং আসামি লিয়াকত আলী আবাদি জমিতে নিহত হযরত আলীর লাশ কাদায় পুতে রাখে।
আপনার মতামত লিখুন :