প্রকাশিত,১২, ফেব্রুয়ারি,২০২৪
মাসুদ রানা,বাসাইল(টাঙ্গাইল)প্রতিনিধিঃ
টাঙ্গাইলের বাসাইল উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় ইটভাটাসহ বাড়ি নির্মাণে ব্যবহার করা হচ্ছে মাটির টপসয়েল বা মাটির ওপরের অংশ। নির্বিচারে কাটা হচ্ছে ফসলি জমি। এতে করে মাটির জৈব পদার্থ, নাইট্রোজেন, ফসফরাসসহ প্রয়োজনীয় খাদ্য উপাদান নিশ্চিহ্ন হয়ে যাচ্ছে। হারিয়ে যাচ্ছে মাটির পুষ্টির সক্ষমতা। ফসল উৎপাদন ব্যাহত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
এক দশক আগেও এ এলাকার কৃষি জমি ছিল ব্যাপক উর্বর। একই জমিতে তিন থেকে চারটি ফসল উৎপাদন করা হতো। সাম্প্রতিক সময়ে ইটভাটা, রাস্তা ও বাড়ি নির্মাণে কৃষির জমির ওপরিস্তরের মাটি কেটে নেয়া হচ্ছে। এতে করে দিন দিন মাটির উর্বরা শক্তি নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। ফসল উৎপাদন ব্যাহত হচ্ছে। এখন এসব জমিতে তিন ফসলের স্থলে এক থেকে দুইটি ফসল আবাদ করা যাচ্ছে। কোথাও কোথাও ফলনও বিপর্যয় হচ্ছে।
মৃত্তি¡কা গবেষণা ইনস্টিটিউটের টাঙ্গাইল আঞ্চলিক কার্যালয়ের প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ড. উৎপল কুমার বলেন, মাটির ওপরের স্তর কেটে নেওয়ায় পুষ্টির উপাদান কমে যাচ্ছে অস্বাভাবিকহারে। মাটি কাটার ফলে শতকরা হিসেবে জৈব পদার্থে ২ দশমিক ৪৯ থেকে কমে শূন্য দশমিক ৯২ এ নেমে আসে। নাইট্রোজেন শূন্য দশমিক ১৪ থেকে কমে শূন্য দশমিক শূন্য ৫ এ নেমে আসে। ফসফরাস ৪ দশমিক ৮২ থেকে কমে ৩ দশমিক ৩৪ এ নেমে আসে। পটাশিয়াম শূন্য দশমিক ১৬ থেকে কমে শূন্য দশমিক শূন্য ৯ এ নেমে আসে। বোরণ শূন্য দশমিক ৪২ থেকে কমে শূন্য দশমিক ২৮ এ নেমে আসে। ক্যালসিয়াম ৬ দশমিক ৩৬ থেকে নেমে ১ দশমিক ২৫ এ নেমে আসে। মাটির গুণাগুণ কমে যাওয়ায় দুশ্চিন্তায় কৃষকও । বাসাইল মধ্যপাড়ার কৃষক শফিকুল ইসলাম রিপন বলেন, পেটে খাবার না থাকলে কোন উন্নয়নই কাজে লাগবে না। যেভাবে মাটির ওপরের অংশ কেটে নেয়া হচ্ছে তাতে ফসল উৎপাদন মারাত্বক ব্যহত হবে। মাটি খেকোদের থামাতে হবে। না হলে বিপদ আসন্ন।
বিষয়টিকে অত্যন্ত গুরুত্ব দিয়ে টাঙ্গাইলের জেলা প্রশাসক মোঃ কায়ছারুল ইসলাম বলেছেন, মাটির টপসয়েল কাটা ও শ্রেণি বিন্যাস পরিবর্তনকারীদের বিরুদ্ধে প্রায় প্রতিদিনই অভিযান পরিচালনা করা হচ্ছে।
সারাদেশে বিপুল সংখ্যক মানুষের খাবারের যোগান দিতে মাঝে মাধ্যেই বিদেশ থেকে খাদ্য আমদানি করতে হয়। এ অবস্থায় মাটির উর্বরা শক্তি ধরে রাখতে না পারলে খাদ্য নিরাপত্তা মারাত্বক ঝুঁকিতে পড়বে। এমনটাই মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।
মাসুদ রানা
বাসাইল টাঙ্গাইল
১২.০২.২০২৪
আপনার মতামত লিখুন :