প্রকাশিত,১৭, অক্টোবর,২০২৩
চরফ্যাসন (ভোলা) প্রতিনিধিঃ
চরফ্যাসনের আমিনাবাদ ইউনিয়নের মাঝিরহাট বাজার থেকে তুলে নিয়ে তিন যুবকে এনকাউন্টারের ভয়ভীতি দেখিয়ে স্বিকারোক্তি আদায় করে ৭ কেজি গাঁজা দিয়ে মাদক মামলায় ফাঁসানো অভিযোগ উঠেছে চরফ্যাসন থানায় কর্মরত দুই এসআই’র বিরুদ্ধে। ৪২দিন জেলহাজতের পর জামিনে এসে মঙ্গলবার (১৭অক্টোবর) সকালে আমিনাবাদ ইউনিয়ন পরিষদের সামনে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে এমন অভিযোগ করেন মামলার আসামী ভুক্তভোগী তিন যুবক।
সংবাদ সম্মেলনে ভুক্তভোগী মো.মনির দালাল,মুসফিকুল আলম রাফি ও মো. ইলিয়াছ অভিযোগ করে বলেন, ঘটনার দিন ২৩ আগস্ট আমিনাবাদ ৩নং ওয়ার্ডের চাঁন মিয়া হাওলাদারের ছেলে ফাহাদ চরফ্যাসন বাস স্ট্যান্ড থেকে গাঁজাসহ দুই ব্যাক্তিকে আটক করে পুলিশে দেয়ার ভয় দেখিয়ে তাদের কাছ থেকে অবৈধ অর্থ হাতিয়ে নিয়ে গাঁজা রেখে তাদেরকে ছেড়ে দেয়।
এঘটনায় ওই দিন বিকাল সাড়ে চার টার সময় চরফ্যাসন থানার এসআই সিদ্দিকুর রহমান ও এসআই সাইফুল ইসলামসহ সংঙ্গীয় ফোর্স ফাহাদকে আমিনাবাদ ইউনিয়নের মাঝিরহাট বাজারস্থ ইউনিয়ন তহসিল অফিসের সামনে থেকে আটক করে। ভুক্তভোগীরা আরো অভিযোগ করে বলেন,এসময় পুলিশ যুবক ফাহাদের সাথে আতাঁত করে তাকে ছেড়ে দিয়ে একই স্থান থেকে অন্যায় ভাবে মুসফিকুল আলম ও ইলিয়াছকে আটক করে পৌর সভার ১ নং ওয়ার্ডের বিএড কলেজ সংলগ্ন এলাকায় নিয়ে কলেজের প্রাচীরের ভেতরের পুর্ব পাশ থেকে গাঁজা ভর্তি একটি ব্যাগ নিয়ে আসে এবং তাদের হাতে ধরিয়ে দিয়ে এনকাউন্টারের ভয় দেখিয়ে ফাহাদের কাছ থেকে জব্দকৃত ওই মাদকগুলো তাদের বলে এই মর্মে একটি স্বীকারোক্তি আদায় করে ছবি ও ভিডিও ধারন করেন। ফের পুলিশ ফরেস্ট অফিস সংলগ্ন মূল সড়ক থেকে মনির দালাল নামের অপর যুবককে আটক করে বিএড কলেজে নিয়ে আসে। সেখান থেকে মাদকসহ তাদের তিনজনকে থানায় নিয়ে যায় এবং তাদের বিরুদ্ধে মাদক আইনে মামলা দায়ের করে আদালতে সোপর্দ করেন বলে সংবাদ সম্মেলনে যুবকরা জানান।
সংবাদ সম্মেলনে কোরআন শরিফ হাতে নিয়ে তারা দাবী করেন তারা এই মাদক সংশ্লিষ্ট ঘটনার সঙ্গে জড়িত ছিলেন না। ফাহাদের সাথে পুলিশের সখ্যতা থাকায় প্রতিহিংসা বসত ফাহাদ অহেতুক ভাবে তাদের বিরুদ্ধে পুলিশ দিয়ে এমন একটি মিথ্যা ঘটনা সাজিয়ে মাদক মামলায় জড়িয়ে দিয়েছেন।
তারা আরোও জানান, গাঁজা বহনকারী মূল ব্যাক্তিদের সঙ্গে ফাহাদের কথোপকথনের একটি ভিডিও ফুটেজ তাদের হাতে আসে এবং প্রকাশ হয় ষড়যন্ত্রকারী ফাহাদ দুই যুবকের কাছ থেকে হাতিয়ে নেয়া মাদক দিয়ে থানা পুলিশের সাথে আতাঁত করে অন্যায় ভাবে মাদক দিয়ে ৩যুবককে ফাঁসিয়েছে। ওই ভিডিও রেকর্ডের দুই ব্যাক্তি এসব মাদক কুমিল্লা থেকে এনেছেন বলে ভিডিওতে স্বীকার করেছেন কিন্তু এরা আইনের আওতায় আসেনি।
তারা আরো জানান, তাদেরকে ইউনিয়ন পরিষদ এলাকা থেকে আটক করলেও পুলিশ মামলায় তাদেরকে বিএড কলেজ এলাকা থেকে গ্রেফতার দেখিয়েছেন। এমন অহেতুক সাজানো মামলায় তিন জনের সম্মান ক্ষুন্ন করা হয়েছে উল্লেখ করে তারা এই মামলা থেকে তাদেরকে অব্যাহতির দাবী জানিয়েছেন।
সংবাদ সম্মেলনে ভুক্তভোগী তিন যুবক ও তাদের পরিবারের সদস্য ও স্থানীয় বাজারের ব্যবসায়ীরা উপস্থিত ছিলেন।
চরফ্যাসন থানার উপ পরিদর্শক ছিদ্দিকুর রহমান জানান, তাদের কাছ থেকে মাদক পাওয়া গেছে বলেই তাদেরকে মামলায় আসামী করা হয়েছে। আসামীরাতো বিভিন্ন অভিযোগ করতেই পারে।
চরফ্যাসন থানার ওসি মো.শাখাওয়াত হোসেন জানান,আমি সদ্য যোগদান করেছি। এ মামলা আমি যোগদানের আগে হয়েছে। এই মামলা সম্পর্কে আমার কিছু জানা নাই।
আপনার মতামত লিখুন :