পাবনার ঈশ্বরদী স্বামীর পরকিয়া জেরে গৃহবধুকে হত্যার অভিযোগ নিহতের পরিবারের ।


দেশ সময় প্রকাশের সময় : ২০২০-১১-০১, ৫:৩৫ অপরাহ্ন / ১০
পাবনার ঈশ্বরদী স্বামীর পরকিয়া জেরে গৃহবধুকে হত্যার অভিযোগ নিহতের পরিবারের ।

প্রকাশিত, 01/11/2020
পাবনা জেলা প্রতিনিধি ঃ

স্বামীর পরকিয়া সম্পর্কের কথা জেনে যাওয়ায় পাবনার ঈশ্বরদী উপজেলার সাহাপুর ইউনিয়নের চর আওতাপাড়া গ্রামের ঐশি খাতুন (২০) নামে এক গৃহবধূকে শারিরীক আঘাতসহ গলায় ফাঁস দিয়ে হত্যার অভিযোগ উঠেছে স্বামী জাহিদ হাসানের বিরুদ্ধে।
শনিবার (৩১’অক্টোবর) সন্ধ্যায় পাবনা ঈশ্বরদী উপজেলার সাহা পুর ইউনিয়নের আওতাপাড়া গ্রামে শশুড়ালয়ে স্বামীর নির্মম নির্যাতনের শিকার হয় ঐশি। ঘটনার পরে গৃহবধূ ঐশির পরিবারে মানুষজন স্থানীয়দের মাধ্যমে খবর পেয়ে তাকে অচেতন অবস্থায় উদ্ধার করে। পরে তাকে দ্রুত চিকিৎসার জন্য পাবনা জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষনা করেন।পরিবারের অভিযোগ, স্বামীর পরকিয়া প্রেমের কথা জেনে যাওয়ায় কারণে পরিকল্পিতভাবে স্ত্রী্র হত্যা করেছে স্বামী। গৃহবধূ ঐশির আট মাস বয়সী জান্নাত নামে এক শিশু রয়েছে।
শনিবার ( ৩১ অক্টোবর) রাত ১০ টায় পাবনা সদর থানা পুলিশ লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে পাঠিয়েছেন। ঘটনার পর থেকে স্বামীসহ শশুড়বাড়ির লোকজন আত্মগোপন করেছে বলে জানা যায়।নিহত গৃহবধূ সাহাপুর ইউনিয়নের আওতাপাড়া গ্রামের চর-আওতাপাড়া ঈশ্বরদী ইপিজেডের শ্রমিক মাহাবুল আলমের বড় মেয়ে।এই ঘটনারর পরে শনিবার রাতে নিহত গৃহবধূ ঐশির মা সাহানারা বেগম নিজে বাদী হয়ে মেয়ে জামাইসহ পরিবাের সদস্যদের নাম উল্লেখ করে ঈশ্বরদী থানাতে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছে।ঘটনার বিষয়ে ঐশির মা জানান, ২০১৯ সালের ২৫ জানুয়ারী সলিমপুর ইউনিয়নের মানিকনগর গ্রামে ঘরামি হারুনের ছেলে জাহিদের সাথে বিয়ে হয়। বিয়ের সময় মেয়ের সুখের জন্য নগদ টাকা পয়সা দিয়েও মন পায়নি। বিয়ের পর হতে যৌতুকের জন্য প্রায়ই নির্যাতন করতো আমার মেয়েকে। পরে প্রায় ৩ লাখ টাকা দেওয়া হয়। কিছুদিন পরে আবার ১ লাখ ৭০ হাজার টাকা দিয়ে মোটর সাইকেল কিনে দেওয়া হয়। কিছুদিন আগে আমার মেয়ে টের পায়, তার স্বামীর স্বভাব ‘চরিত্র’ ভালো না।প্রায় তাদের মধ্যে ঝগড়া হতো। বৃহস্পতিবার (২৯ অক্টোবর) রাতে জামাই জাহিদের মানিব্যাগে জনৈক এক মহিলার ছবি দেখে ঐশি প্রতিবাদ করার কারণে শারীরিক ও মানুষিক নির্যাতনও করে। এ বিষয়টি ঐশি বাবার বাড়িতে অবগত করলে শনিবার (৩১ অক্টোবর) বিকেলে আমার ভাইয়ের ছেলে অমিত ওই বাড়িতে ঐশিকে আনতে যায়। এ সময় তখন তার শ্বশুর বাড়ির লোকজন বাবার বাড়ি আসতে দেয় না। অমিত তাদের বাড়ি থেকে চলে আসার পর জামাই জাহিদ মোবাইলে গালিগালাজও করে। তারপর শারীরিক নির্যাতন করে আমার মেয়েকে মেরে ফেলার কিছুক্ষণ পর সন্ধ্যায় বাড়িতে খবর পাঠায়। ঐশি গলায় ফাঁস নিয়ে মারা গেছে। এ সময় আমরা তাদের বাড়ি থেকে খাটের ওপর অজ্ঞান অবস্থায় পড়ে থাকতে দেখে, উদ্ধার করে দ্রুত পাবনা হাসপাতালে নিয়ে গেল ডাক্তার মৃত বলে ঘোষনা করেন। এটা আত্মহত্যা নয়, পরিকল্পিত হত্যাকান্ড। ওরা আমার সহজ সরল মেয়েটিকে মেরে ফেলেছে। আমি এর বিচার চাই।
ঈশ্বরদী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শেখ নাসীর উদ্দিন ঘটনার বিষয়ে জানান, এই গৃহবধূ মৃত্যুর বিষয়ে মেয়েটির মা নিজে বাদী হয়ে থানাতে লিখিত অভিযোগ দিয়েছে। প্রকৃত ঘটনা জানার জন্য লাশ ময়নাতদন্তের জন্য পাবনা জেনারেল হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে। মৃত্যুর বিষয়টি নিয়ে আমরা তদন্ত করছি।ময়না তদন্তের প্রতিবেদন পাওয়ার পরে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে। তবে লিখিত অভিযোগের আলোকে অভিযোগকারীদের গ্রেফতারের জন্য অভিযান চলছে বলেও জানান তিনি।