প্রকাশিত,২৮,জুন, ২০২৪
পটিয়া (চট্টগ্রাম) থেকে সেলিম চৌধুরী:-
চট্টগ্রামের পটিয়ায় যৌতুকের চাপ সইতে না পেরে বিয়ের কয়েক ঘন্টা পূর্বে গ’লায় ফাঁ’স দিয়ে আত্মহত্যা করেছে রীমা আক্তার (২০) নামের এক তরুণী। ২৭ জুন বৃহস্পতিবার দুপুরে পটিয়া উপজেলার হাইদগাঁও ইউনিয়নের ৮নং ওয়ার্ডের হীরা তালুকদার বাড়িতে এ ঘটনা ঘটে। নিহত রীমা আক্তার ওই এলাকার বাচা মিয়ার মেয়ে।
পাত্রীর লেখা চিরকুটে জানা যায়, আল আরাফাহ ইসলামী ব্যাংকের নারায়ণগঞ্জ শাখায় কর্মরত ব্যাংকার পাত্র মিজানুর রহমান মেহেদীর দিনে পাত্রীকে ভিডিও কলে পুনরায় যৌতুক দাবি করায় পাত্রী রীমা আক্তার আ’ত্ম’হ’ত্যা করে।
আত্মহত্যার আগে রীমা আক্তার একটি চিরকুট লেখেন। এতে সে উল্লেখ করেন, ‘প্রিয় শখের পুরুষ। তুমি করো তোমার বিয়ে। অনেক ভালোবেসেছ এবং অতিরিক্ত যন্ত্রানাও দিয়েছ। আমি আর পারছি না এত য’ন্ত্রণা সইতে ।
বাকি জীবনটা সুন্দর করে উপভোগ করতে পারলাম না। ভালো থেকো আজকের দিনেও তোমার য’ন্ত্রণা নিতে পারছি না। আমার পরিবার থেকে যৌ’তু’কের টাকা তোমাদের দিয়েছে সেগুলো শোধ করে দিও। তুমি আমাকে বাঁচতে দিলে না। আমি বাঁচতে পারতাম যদি আমি বেশি মানসম্মানওয়ালা পরিবারের জন্মগ্রহণ না করতাম। সবাই আমাকে ক্ষমা করে দিও। আর আমার পোস্ট মর্টেম করিয়ে আমার সব য’ন্ত্রণা ধুয়ে মুছে আমাকে ক’বরে পাঠিও। আর আমার পরিবারকে বলছি, মোরশেদকে তোমরা ছাড়বা না। ওকে ওর প্রাপ্য শা’স্তি তোমরা দেবা।পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, গত ৪ বছর ধরে আল আরাফাহ ইসলামী ব্যাংক নারায়ণগঞ্জ শাখায় কর্মরত মিজানুর রহমানের সাথে রীমা আক্তারের প্রেমের সম্পর্ক চলে আসছিল দীর্ঘদিন যাবত। মিজানুর রহমান একই এলাকার মফিজুর রহমানের ছেলে। উভয়ের পরিবার ছেলে মেয়ের সম্পর্ক জেনে পারিবারিকভাবেই ২৮ জুন শুক্রবার বিয়ের তারিখ ঠিক করে। বৃহস্পতিবার ২৭ জুন রাত ছিল মেহেদী অনুষ্ঠানের। অনুষ্ঠান উপলক্ষে রীমা ও মিজানুর রহমান মোবাইলে ভিডিও কলে কথা বলছিল। এরপর পরই ঘরের দরজা বন্ধ করে সিলিং ফ্যানের সাথে ওড়না পেচিয়ে আ’ত্ম’হ’ত্যা করে রীমা।রীমার ভাই আজগর হোসেন জানিয়েছেন, তার বোনের কাছে যৌতুক হিসেবে ফুলসেট ফার্নিচার, টিভি, ফ্রিজ এবং বিয়ের খরচ হিসেবে নগদ টাকা দাবী করে পাত্র ব্যাংকার মিজানুর রহমান। উভয়ের প্রেমের সম্পর্ক থাকা সত্বেও যৌতুক দাবী করায় তার বোন অ’প’মা’ণি’ত হয়ে রাগে আ’ত্ম’হ’ত্যা করে।
তিনি আরও জানিয়েছেন, তার বোন পটিয়া সরকারি কলেজে অনার্স শ্রেণির ছাত্রী ছিল। সে ছিল মেধাবী। ছেলেপক্ষের আগ্রহে তারা বিয়েতে রাজী হন। ছেলে যে এতটা যৌতুক ’লোভী হবে আমরা জানতাম না। প্রা’ণ দিয়ে আমার বোন তার মু’খো’শ উম্মোচন করে দিলেও আমরা এতদিন তার বুঝতে পারিনি। মৃ’ত্যু’র আগে তার বোন সু’ই’সাইড নোটে এসব লিখে রেখে যান।
পটিয়া থানার ওসি জসিম উদ্দিন জানিয়েছেন, মেহেদী অনুষ্ঠানে কয়েকঘন্টা আগে তরুণীর আ’ত্ম’হ’ত্যা বিষয়টি দুঃ’খ’জ’নক। পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়েছে। পরিবারের অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।
সেলিম চৌধুরী
পটিয়া প্রতিনিধি
পটিয়া চট্টগ্রাম
২৭/০৬/২৪
আপনার মতামত লিখুন :