প্রকাশিত,০৯, ফেব্রুয়ারি,২০২৪
পটিয়া চট্টগ্রাম থেকে সেলিম চৌধুরীঃ
পটিয়া উপজেলা ও পৌরসভার ওরশ পরিচালনা কমিটির উদ্যোগে চতুর্থ তম খাজা গরীবে নেওয়াজ মঈনুদ্দিন হাসান চিশতী আজমেরী (র:) ওরশ সম্পন্ন হয়েছে। গতকাল বৃহস্পতিবার পটিয়া গাজী কনভেনশন হলে সকাল থেকে খতমে কোরআন, খতমে বোখারি, মিলাদ মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়। সন্ধ্যা থেকে ২০ হাজার মানুষের খাবার আয়োজন করেন কমিটি’র নেতৃবৃন্দরা। রাতে খাবার পরিবেশন শেষে খাজা গান ও কাওয়ালি পরিবেশীত হয়।
মিলাদ মাহফিলে উপস্থিত ছিলেন ওরশ পরিচালনা কমিটি’র সভাপতি সাবেক কমিশিনার হাজী নুরুল ইসলাম, সাধারন সম্পাদক এমএ আবছার, অর্থ সম্পাদক দিদারুল আলম, সাংগঠনিক সম্পাদক আহমদ নবী, কমিটির আবদুল মাবুদ, আবদুল ছবুর, আবুল বশর, আবদুল জব্বার, হাজী রফিক আহমদ, আবদুল মতিন, আবুল হাশেম মিন্টু, আবদুল কুদ্দুস, জানে আলম, এসএম আমান উল্লাহ আমিরী, আব্দুল মান্নান, আব্দুল সালাম, নাজিম উদ্দিন, রহমত আলী, নুরুল আবছার, দিদারুল আলম, সাইফুল ইসলাম, বেলাল হোসেন, কাজী বেলাল, বাদশা মিয়া, আবুল বশর, গাজী মনির, মো: হেলাল, মো: মফিজ, ইউনুছ, রুবেল, মাকদুসুর রহমান, আবদুল মোতালেব প্রমুখ।
সভায় বক্তারা বলেন, কেউ ফিরে না খালি হাতে খাজা বাবার দরবারে,উপমহাদেশে ইসলাম প্রচার ও প্রতিষ্ঠায় যেসব পীর-আউলিয়া-দরবেশের অবদান অবিস্মরণীয় হয়ে আছে, হযরত খাজা মঈনুদ্দিন চিশতী (রহ) তাদের মধ্যে শীর্ষস্থানীয়। তিনি পিতার দিক থেকে হযরত ইমাম হোসাইন (রা.) এবং মাতার দিক থেকে হযরত ইমান হাসান (রা.) এর বংশধর ছিলেন। হিজরি ৫৩৭ সালে ইস্ফাহানে তার জন্ম হয়। তিনি ইন্তেকাল করেন হিজরি ৬৩৩ সালে আজমীরে। আজমীরে তার সমাধি অবস্থিত। বিগত ৮০০বছরের অধিককাল তার এই অন্তিম শয়ানস্থল অর্থাৎ আজমীর উপমহাদেশের অন্যতম প্রধান আধ্যাত্মিক কেন্দ্র হিসাবে বিবেচিত হয়ে আসছে। প্রতিদিন অসংখ্য ভক্ত-অনুরাগী তার মাজার জেয়ারত করেন। শুধু মুসলমানরাই নন, বিভিন্ন ধর্মের শত-সহ¯্র মানুষ প্রতিদিন মাজারে উপস্থিত হয়ে শ্রদ্ধাজ্ঞাপন করেন। তাদের আশা-প্রত্যাশা ও কামনা-বাসনার কথা আল্লাহর নিকট ব্যক্ত করেন। খাজা বাবার দরবার থেকে কেউ কখনো খালি হাতে ফিরে আসেন না, আল্লাহর দেয়া সম্মান বা কারামত হিসাবে যা ওলি-আউলিয়াগণ প্রাপ্ত হন, এমন একটি বিশ্বাস ও প্রবাদ প্রচলিত হয়ে আছে। শত শত বছর ধরে বহু সুলতান, বাদশাহ ও শাসক ভারত শাসন করেছেন। তারা হিন্দ বা ভারতের রাজনৈতিক বা রাষ্ট্রীয় শাসক, কিন্তু হযরত খাজা মঈনুদ্দীন চিশতী (রহ) হলেন ভারতের আধ্যাত্মিক সুলতান। সুলতান, বাদশাহ ও শাসকের পরিবর্তন হলেও ‘সুলতানুল হিন্দ’ এখনো অপরিবর্তনীয়। অতীতের মতো এখনো ভারতের শাসকরা বিশ্বাস করেন, সুলতানুল হিন্দের দোয়া ছাড়া ভারতশাসকের মর্যাদা পাওয়া সম্ভব নয়। মনে করা হয়, সাধক-আউলিয়াগণ বিশেষ কোনো দেশ বা এলাকার আধ্যাতিœক ও প্রকৃতিগত রাজনৈতিক গতিধারা পরিচালনা করেন। হযরত খাজা মঈনুদ্দীন চিশতী (রহ) সম্পর্কেও এমনটাই বলা হয় যে, তিনি আধ্যাতিœকভাবে ভারত নিয়ন্ত্রণ করেন। স্বাধীন ভারতে গত ৭০ বছর ধরে যারাই শাসন ক্ষমতায় এসেছেন তারা সবাই সুলতানুল হিন্দের এই ক্ষমতা স্বীকার ও মান্য করে তার ও তার দরবারের প্রতি অপরিসীম শ্রদ্ধা জ্ঞাপন করেছেন।
সেলিম চৌধুরী
পটিয়া প্রতিনিধি
পটিয়া চট্টগ্রাম ।
আপনার মতামত লিখুন :