নীলফামারী ডিমলায় আত্ম গোপনে আওমীলীগ নেতারা।


দেশ সময় প্রকাশের সময় : ২০২৪-০৯-০৯, ৪:৫২ অপরাহ্ন /
নীলফামারী ডিমলায় আত্ম গোপনে আওমীলীগ নেতারা।

প্রকাশিত,০৯,সেপ্টেম্বর, ২০২৪

জহুরুল ইসলাম
নীলফামারী প্রতিনিধি

ছাত্র-জনতার রক্তক্ষয়ী গণ-অভ্যুত্থানে শেখ হাসিনার দেশত্যাগের পর আত্মগোপনে রয়েছেন নীলফামারীর ডিমলা উপজেলার আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীরা। এক সময় ত্রাসের রাজত্ব সৃষ্টিকারী উপজেলা আওয়ামী লীগ, যুবলীগ ও ছাত্রলীগের সব নেতাকর্মী এখন জনরোষের হাত থেকে বাঁচতে পালিয়ে বেড়াচ্ছেন।

ডিমলা উপজেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি ও সাবেক সংসদ সদস্য আফতাব উদ্দিন সরকার শেখ হাসিনার পতনের কয়েক ঘণ্টা পূর্ব থেকে আত্মগোপনে রয়েছেন। বিশ্বস্ত সূত্রে জানা যায়, তিনি বুড়িমারী স্থলবন্দর দিয়ে পালিয়ে ভারত চলে গেছেন। বর্তমানে তিনি ভারতের পশ্চিমবঙ্গের মিকলিগঞ্জ সোনাপুরে অবস্থান করছেন।
উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান আনোয়ারুল হক সরকার (মিন্টু) গণধোলাইয়ের হাত থেকে বাঁচতে পালিয়ে বেড়াচ্ছেন। আওয়ামী লীগের শাসনামলে দলীয় প্রভাব খাটিয়ে জমি দখল, সীমান্তে চোরাচালান, টেন্ডারবাজি, চাঁদাবাজি, দখলবাজিসহ নানা অপকর্মের নেতৃত্ব দিয়েছেন তিনি। সরকার পতনের পর তিনি দুই দিন উপজেলা পরিষদের অফিস করার জন্য এলে বিক্ষুব্ধ জনতার তোপের মুখে অফিস থেকে পালিয়ে যান। এরপর থেকেই গা ঢাকা দিয়ে বেড়াচ্ছেন তিনি।

সাবেক সংসদ সদস্য আফতাব উদ্দিন সরকারের সবচেয়ে বিশ্বস্ত উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ লুৎফর রহমান পেশায় একজন শিক্ষক। শিক্ষকতা ও দলীয় পদকে হাতিয়ার করে উপজেলার প্রতিটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করতেন। তার বিরুদ্ধে ছাত্রীদের কুরুচিপূর্ণ কথাবার্তা ও হয়রানির একাধিক অভিযোগ রয়েছে। বেশির ভাগ সময় স্কুলে উপস্থিত না থেকে দলীয় কর্মকাণ্ডে ব্যস্ত থাকতেন। রাজনৈতিক প্রভাব খাটিয়ে স্কুল ফান্ড থেকে লাখ লাখ টাকা আত্মসাৎ করেছেন। লুৎফরের এসব অপকর্মের বিরুদ্ধে কেউ প্রতিবাদ করলে তার লোকজন দিয়ে শারীরিক ও মানসিকভাবে নির্যাতন চালাতেন।

উপজেলা জুড়ে সবচেয়ে বেশি ত্রাসের রাজত্ব সৃষ্টিকারী উপজেলা যুবলীগের যুগ্ন আহবায়ক ফেরদৌস পারভেজ। নিজস্ব ক্ষমতা টিকিয়ে রাখতে তৈরি করেছেন সন্ত্রাসী বাহিনী যা আগুন খাওয়া টিম নামে পরিচিত। এ টিমের মাধ্যমে মাদক কারবার থেকে শুরু করে জমি দখল এমনকি সাধারণ মানুষকে সামান্য বিষয় নিয়ে মারধরসহ নানা অপকর্ম সম্পাদিত করত।
সাবেক জেলা পরিষদ সদস্য আবদুল বারী সূর্যকে উপজেলা পরিষদ চত্বরে প্রকাশ্যে পিটিয়ে রক্তাক্ত করে আগুন খাওয়া টিমের লোকজন। এ ছাড়াও আলম মিয়া নামে এক যুবককে পারভেজ ও সায়েমের নির্দেশে ছাত্রলীগ নেতা রাশেদুল ইসলাম রাশেদ তুলে নিয়ে বেধড়ক পিটুনি দেয়।
উপজেলা ছাত্রলীগের আহ্বায়ক আবু সায়েব সরকার নিজেকে সাবেক সংসদ সদস্যের ভাতিজা পরিচয় দিয়ে একের পর এক অপকর্ম করে গেছেন। পুরো উপজেলা জুড়ে মাদক সম্রাট হিসেবে রয়েছে তার ব্যাপক পরিচিতি।
ছাত্রলীগ নেতাকর্মীদের পথ পদবির লোভ দেখি লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন। জনরোষের ভয়ে পালিয়ে বেড়াচ্ছেন তিনিও।

এ প্রসঙ্গে ডিমলা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) দেবাশীষ কুমার রায় বলেন, বর্তমানে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির যথেষ্ট উন্নতি হয়েছে। মাদক ও চোরাচালানের সাথে কেউ জড়িয়ে পড়লে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেয়া হবে।