নার্সারি করে সফল হয়েছে হাফিজার রহমান ।


deshsomoy প্রকাশের সময় : ২০২৪-০৩-০২, ১০:৫৪ অপরাহ্ন /
নার্সারি করে সফল হয়েছে হাফিজার  রহমান ।

প্রকাশিত,০২, মার্চ,২০২৪

হারুন অর রশিদ, সুন্দরগঞ্জ গাইবান্ধাঃ

গাইবান্ধা জেলা সুন্দরগঞ্জ উপজেলা ৮ নং ধোপাডাঙ্গা ইউনিয়ন ৪ নং ওয়ার্ডের বিশ্বাস হলদিয়া গ্রামের মোঃ হাফিজার রহমান মাত্র পঞ্চম শ্রেণি পর্যন্ত পড়াশোনা করে নার্সারি করার স্বপ্ন দেখেন । হাফিজার রহমান বলেন আমি প্রায় ৪০ বছর থেকে বিভিন্ন হাটবাজারে রাস্তাঘাট স্কুল মাদ্রাসা ও বিভিন্ন মোড়ে মোড়ে গাছ বিক্রি করতাম। তখন থেকে আমার স্বপ্ন ছিল নার্সারি করার জন্য। এক সময় বিভিন্ন নার্সারি হইতে হরেক রকম গাছগাছালি ও ঔষধ জাতীয় গাছ হাটবাজারে বিক্রি করতাম। বিক্রিয়ে লাভাংশ দিয়ে ফ্যামিলি চালাইতাম এবং ছেলে মেয়েকে লেখাপড়া করাইতাম। ধীরে ধীরে ছেলেমেয়েরা বড় হওয়া শুরু করে। আমার কষ্ট দেখে তখন দ্বিতীয় ছেলে শাহাদাত হোসেন (রাজিব) আমার ব্যবসার সাহায্য করে। যখন ছেলে সাহায্য করা শুরু করে তখন আমি নার্সারি করার স্বপ্ন দেখি। ফ্যামিলি ও ছেলে মেয়েদের সহযোগিতা পেয়ে বাড়ির সামনে আঙ্গিনায় পাঁচশতক জমিতে কিছু গাছ রোপন করি ।পাঁচশতক জমিতে গাছের চারা রোপণ করার বিভিন্ন পদ্ধতি আয়ত্ব করা শুরু করেন হাবিজার রহমান। খুব অল্প সময়ের ব্যবধানে নার্সারিতে লাভের মুখ দেখতে পান হাবিজার রহমান । এরপর ধীরে ধীরে নার্সারিতে গাছের প্রজাতির সংখ্যা বাড়াতে থাকেন। সময়ের সাথে সাথে মান ভালো হওয়ায় দূর-দূরান্ত থেকে গাছ কিনতে আসেন অনেকে। কেউ কেউ গাছের বাগান ঘুরে দেখেন। কেউ গাছ কিনে নেন। শখের নার্সারি এখন বাণ্যিজ্যিকভাবে শুরু করেন। হাফিজার রহমান । এই নার্সারিতে আয়ের উৎস খুঁজে পান মো.হাবিজার রহমান । এরপর আর তাকে পেছনে তাকাতে হয়নি। কয়েক বছরে নির্বিঘ্নে গাছের চারা রোপণ ও বিক্রি করে লাভবান হতে থাকেন তিনি।

এখন অনেকেই তার নার্সারিতে গাছ কিনতে আসেন। আছে ঔষধি, বনজ ও ফলজ গাছসহ প্রায় হাজার প্রজাতির গাছ। এবার গত বছরের চেয়েও লাভবান হওয়ার স্বপ্ন নিয়ে পথচলা শুরু করেন। অল্প দিনেই লাভের মুখ দেখতে পান।
এতে কর্মসংস্থানের সুযোগ হয়েছে বেকার যুবকদের। ছেলে-মেয়ে নিয়ে নার্সারির উপর নির্ভর করেই জীবপনযাপন করছেন মো.হাবিজার রহমান। তাই হাফিজুর রহমান শখ করে নার্সারি নাম রেখেছেন ভাই বোন নার্সারি।

তিনি জানান, ৫শহক জমি হইতে এখন বর্তমান ৭ বিঘা জমিতে নার্সারি রয়েছে। এবছর পুরা জমি মিলে বিভিন্ন বনজ, ফলদ, ঔষধি ও ফুলের চারা রোপণ করেছেন। এখানে ভিয়েতনাম ও বার্মার নারিকেল ও সুপারি চারা রয়েছে। এছাড়াও নার্সারিতে প্রায় ২ বিঘা জমিতে নানা প্রজাতির বনজ ও ফলজ গাছ রয়েছে।

আমের জাতের মধ্যে সূর্যডিম, হাড়িভাঙ্গা, ল্যাংড়া, আম্রপালি, হিম সাগর, গুটি ফজলসহ প্রায় ৪০টি জাতের আম চারা রয়েছে। ফুলের মধ্যে থাই গোলাপ, রজনীগন্ধা, চায়না টগর, হাসনাহেনা, বকুল, কৃষ্ণচূড়াসহ প্রায় শতাধিক প্রজাতির চারা রয়েছে। এছাড়াও আছে বিভিন্ন প্রজাতির ঔষধি গাছও।

তিনি আরও জানান, জীবিকার তাগিদে এই নার্সারিকে পেশা হিসেবে বেছে নিয়েছেন তিনি।

সুন্দরগঞ্জ উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ মোঃ মিজানুর রহমান বলেন, বিভিন্ন এলাকায় যারা নার্সারি করেছেন, তাদের নার্সারি নিয়মিত পরিদর্শন করা হচ্ছে। এছাড়াও নিয়মিত পরামর্শ দেওয়া হয়। বৃক্ষমেলায় তাদের চারা গাছ বিক্রি করারও সুযোগ রয়েছে। পোঁকামাকড়ের আক্রমণ থেকে মুক্তির জন্য পরমার্শ দিচ্ছি।
হারুন অর রশিদ
সুন্দরবন গাইবান্ধা