নকলায় সাংবাদিকদের দালাল আখ্যা দেওয়ায় তীব্র নিন্দাসহ উদ্বেগ প্রকাশ।


deshsomoy প্রকাশের সময় : ২০২৪-০৩-০৯, ৭:০৯ অপরাহ্ন /
নকলায় সাংবাদিকদের দালাল আখ্যা দেওয়ায় তীব্র নিন্দাসহ উদ্বেগ প্রকাশ।

প্রকাশিত,০৯, মার্চ,২০২৪

শেরপুর প্রতিনিধিঃ

শেরপুরের নকলায় ফেসবুকে শফিউজ্জামান রানা নামে একটি টাইম লাইনে ও বিএসআরএমএম নামের একটি পেইজে জেলা ও উপজেলার সকল সাংবাদিককে গণহারে একাধিকবার দালাল (ব্রোকার) আখ্যা দেওয়ায় তীব্র নিন্দাসহ উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন নকলা উপজেলায় কর্মরত সাংবাদিকগন।

এ উপলক্ষে শুক্রবার সন্ধ্যায় উপজেলায় কর্মরত সাংবাদিকরা এক জরুরি সভা আহবান করেন। ওই সভায় উপস্থিত সবাই একমত প্রকাশ করে রানা কর্তৃক বিব্রতকর পরিস্থিতি সৃষ্টি ও সকল সাংবাদিককে দালাল (ব্রোকার) আখ্যা দেওয়ায় রানার হীন কর্মকান্ডের তীব্র নিন্দা ও উদ্বেগ প্রকাশ করা হয়।

এসময় সাংবাদিক শাহ মো. ফুয়াদ হোসেন, জাহাঙ্গীর হোসেন আহমেদ, ইউসুফ আলী মন্ডল, খন্দকার জসিম উদ্দিন মিন্টু, শফিউল আলম লাভলু, আরিফুর রহমান, আইনুল নাইম, দেলুয়ার হোসেন, মোশারফ হোসাইন, ফজলে রাব্বী রাজন, নূর হোসেন, সেলিম রেজা, রেজাউল হাসান সাফিত, রাইসুল ইসলাম রিফাত ও সুজন মিয়া উপস্থিত ছিলেন। এছাড়া সিনিয়র সাংবাদিক হারুনুর রশিদ, মোশারফ হোসেন সরকার বাবু ও আব্দুল্লাহ আল-আমিনসহ অনেকে মোবাইলে তীব্র নিন্দা জ্ঞাপনসহ উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন।

সাংবাদিক শাহ মো. ফুয়াদ হোসেন, জাহাঙ্গীর হোসেন আহমেদ, ইউসুফ আলী মন্ডল, খন্দকার জসিম উদ্দিন মিন্টু, শফিউল আলম লাভলুসহ অনেকে জানান, জেলা প্রশাসক বরাবরে আবেদন করেও হাটবাজারের ইজারা বিজ্ঞপ্তি না পওয়ায় ক্ষোভে এবং উপজেলার সকল সাংবাদিকের সাথে উপজেলা প্রশাসনসহ উপজেলায় কর্মরত সকল সরকারি বেসরকারি দপ্তর প্রধান ও সকলের সাথে সুসম্পর্ক থাকায় হিংসার বসবর্তী হয়ে এমন ন্যক্কার জনক কথাবার্তা ফেইসবুকে পোস্ট করেন কথিত সাংবাদিক শফিউজ্জামান রানা।

এছাড়া হাটবাজারের ইজারা বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের পরে থেকেই উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাসহ সংশ্লিষ্ট অনেককেই রানা ফেইসবুকে পোস্টের মাধ্যমে বিভিন্ন ভাবে মানহানীকর পরিস্থিতিতে ফেলছে। সে হাটবাজারের ইজারা বিজ্ঞপ্তি না পওয়াকে কেন্দ্র করে ক্ষোভে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার নিকট হয়রানি মূলক কয়েক বছরের বিভিন্ন তথ্য চায় রানা।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সাদিয়া উম্মুল বানিন বলেন, ‘সাংবাদিক রানা ফেব্রুয়ারীর ১৮ তারিখে তথ্য চেয়ে আবেদন করেছেন। ঘটনার দিন নতুন করে তথ্যের আবেদন বা তথ্য চাওয়ার কোন বিষয় ছিলনা। ঘটনার দিন পূর্বের আবেদনের প্রেক্ষিতে তথ্য চেয়েছিলেন। তথ্যগুলো প্রস্তুত করা হচ্ছে বলে তাকে জানানো হয়। আমার হাতে তথ্য দেওয়ার জন্য ২০ দিন সময় আছে। কিন্তু রানা আমার সিএ শীলার টেবিলে থাকা তথ্যের ফাইল নিতে টানাটানি করেন এবং নানা ধরনের অশালীন ভাষায় কথাবার্তা বলেন ও অসদাচরণ করেন। এতে অফিসের কর্মচারী ও গুরুত্বপূর্ণ ফাইলপত্র অনিরাপদ হয়ে পড়ে। পরে বাধ্য হয়ে আমি সহকারী কমিশনার (ভূমি)-কে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করতে বলি।’

পরে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার সরকারি অফিসে অনুপ্রবেশ করে হট্টগোল, সরকারি কাজে অন্যায়ভাবে বাধাদান করা, সরকারি গুরুত্বপূর্ণ ফাইল তছনছ করে ফাইল ছিড়াসহ বিভিন্ন ফাইল কেড়ে নেওয়ার চেষ্টা করে বিশৃঙ্খল পরিস্থিতি সৃষ্টি ও অসদাচরণের অভিযোগে দণ্ডবিধির ১৮৬০ এর ১৮৮ ধারায় এবং একজন নারী কর্মচারীকে উত্ত্যক্ত করার অভিযোগে দণ্ডবিধির ৫০৯ ধারায় দোষী সাব্যস্ত হওয়ায় শফিউজ্জামান রানা নামে এক যুবককে ৬ মাসের কারাদন্ড দিয়েছে ভ্রাম্যমান আদালত। সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মো. শিহাবুল আরিফ ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করে এই কারাদণ্ড দেন। মঙ্গলবার ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে ৬ মাসের কারাদণ্ড দিয়ে তাকে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। কথিত সাংবাদিক রানাকে কারাগারে প্রেরণের ফলে উপজেলার বিভিন্ন শ্রেণি পেশার মানুষের মনে স্বস্তি ফিরে এসেছে বলে অনেকে জানিয়েছেন। তাছাড়া সাধারণ জনগনের ফেইসবুকে পোস্ট ও সরেজমিনে জনগনকে জিজ্ঞাসায় তা পরিষ্কার ভাবে উঠে এসেছে।

কিন্তু বিষয়টিকে কয়েকটি গণমাধ্যম সঠিক তথ্য খতিয়ে নাদেখে এবং ঘটনার সাথে জড়িত ইউএনও, আদালতের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটসহ ভুক্তভোগীর মতামত না জেনে শফিউজ্জামান রানাকে একজন ব্যক্তি হিসেবে বিবেচনা না করে বরং শুধুই একজন সাংবাদিক হিসেবে পরিচয় দিয়ে একপেশে খবর প্রচার করায় বিব্রতকর অবস্থায় পড়েছেন উপজেলা প্রশাসন ও উপজেলাবাসীসহ স্থানীয় সাংবাদিকগন।

এবিষয়ে ইউএনও আরো বলেন- পুরো ঘটনাটি না জেনে বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যমে খবর হচ্ছে। আমার গনমাধ্যম কর্মীদের কাছে অনুরোধ থাকবে, যদি কোন কারনে খবর করতেই হয়, তাহলে পুরো বিষয়টা জেনে সঠিক খবরটা করুন। তাতে সবারই ভাবমুর্তি অক্ষুন্ন থাকবে।

জরুরি সভার আলোচনা শেষে নকলা প্রেস ক্লাবের সম্মানিত সদস্য, শেরপুর প্রেসক্লাবের সিনিয়র সদস্য প্রথিতযশা সাংবাদিক, বিশিষ্ট কবি ও কলামিস্ট সবার প্রিয় তালাত মাহমুদ-এঁর মৃত্যুতে নকলা প্রেস ক্লাব ও উপজেলায় কর্মরত সাংবাদিকদের বিভিন্ন সংগঠনের পক্ষে শোক প্রস্তাব করা হয়।