প্রকাশত,০১,জুন, ২০২৪
স্টাফ রিপোর্টার :
দীর্ঘ প্রায় ২বছর পেরিয়ে গেলেও নৃশংসভাবে হত্যার শিকার উজ্জ্বল মিয়াজীর ঘাতকরা ধরা পড়েনি। অথচ ঘাতকরা অনেকটাই প্রকাশ্য রয়েছে। এজাহারে নামধারী কেউ কেউ আবার রাজনৈতিক কর্মসূচির মিছিল মিটিংয়েও থাকছেন। এ হত্যাকান্ড দীর্ঘ দুই বছর অতিবাহিত হলেও পিবিআই পুলিশ কেনো অভিযোগ পত্র দাখিলে গড়িমসি করেছে তা নিয়ে জনমনে নেতিবাচক ধারণা জন্মেছে।
অভিযোগ উঠেছে, আসামিদের সঙ্গে গোপন আঁতাতের কারণে খুনিদের গ্রেপ্তারে টালবাহানা করে পুলিশ। অপরদিকে মামলার কোনো আসামী গ্রেপ্তার না হওয়ায় বিচারের আশাই ছেড়ে দিয়েছে ভুক্তভোগী পরিবার। ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন নিহত উজ্জ্বল মিয়াজীর বড় ভাই মামলার বাদী গোলাম কিবরিয়া মিয়াজী।
আধিপত্য বিস্তার কেন্দ্র করে চাঁদপুর মতলব উত্তর উপজেলার ষাটনল ইউনিয়নে ষাটনল পর্যটন কেন্দ্রে রাজধানীর যমুনা ফিউচার পার্কের মোবাইল ব্যবসায়ী উজ্জ্বল মিয়াজীকে কুপিয়ে হত্যা করেছে দূর্বৃত্তরা। গত ২০২২ সালের ৫ মে (বৃহস্পতিবার) রাতে এ ঘটনা ঘটে। নৌ ডাকাত বাবলা ওরফে উজ্জ্বল খালাশী, কবির খালাসি’সহ এ চক্রের সহযোগীরা এ হত্যাকাটি ঘটিয়েছে বলে এজাহারে বলা হয়। নিহতের বড় ভাই গোলাম কিবরিয়া মিয়াজি বাদি হয়ে মতলব উত্তর থানায় তাদের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেছেন। এদিকে হত্যাকান্ডের দুই বছর পার হলেও অভিযোগ পত্র দাখিল করতে পারেনি পুলিশ।
উল্লেখ্য , ২০২২ সালের ৫ মে ঈদ পুর্নমীলনী অনুষ্ঠানে যোগ দিতে নিজ শশুরবাড়ী চাঁদপুরে যান রাজধানীর যমুনা ফিউচার পার্কের মোবাইল ব্যবসায়ী উজ্জল মিয়াজী। রাতে তিনি অনুষ্ঠানস্থল পরিদর্শন করতে গেলে মতলব উত্তর উপজেলার ষাটনল পর্যটন কেন্দ্রে তাকে প্রকাশ্যে কুপিয়ে ও গুলি করে হত্যা করে নৌ ডাকাত কবির খালাসী, জজ মিয়া খালাসী, নাহিদ খালাসী, তুষার খালাসী ও বাবলা ডাকাত ও ফরিদ গাজী’সহ এ চক্রের আরও ২০ থেকে ২৫ জন সদস্য।
পরে উজ্জলের মৃত্যু নিশ্চিত করে তার ক্ষতবিক্ষত দেহ মাটিতে ফেলে রেখে চলে যায় তারা। এ ঘটনায় কবির খালাসিকে প্রধান আসামি করে ২০ জনের বিরুদ্ধে চাঁদপুরের মতলব উত্তর থানায় একটি মামলা দায়ের করেন নিহতের বড় ভাই গোলাম কিবরিয়া মিয়াজী। তবে এ হত্যাকান্ডের ২বছর পেরিয়ে গেলেও অভিযোগ পত্র দাখিল করা হয়নি।
নিহতরে স্বজনদের দাবি, আসামিদের সঙ্গে গোপন আঁতাতের কারণে খুনিদের গ্রেপ্তারে টালবাহানা করছে পুলিশ। হত্যাকান্ডের পরে চাঁদপুর, নারায়ণগঞ্জ, মুন্সিগঞ্জ ও রাজধানী ঢাকাসহ বিভিন্ন স্থানে নিহতের হত্যাকারীদের গ্রেপ্তারের দাবিতে মানববন্ধন ও সংবাদ সম্মেলন করেও কোনো প্রতিফলন পায়নি নিহত উজ্জল মিয়াজীর পরিবার। এমন অবস্থায় বিচারের আশাই ছেড়ে দিয়েছেন তারা।
উজ্জল মিয়াজী হত্যকান্ডের সকল আসামীকে গ্রেপ্তারে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করবে প্রশাসন। নিহতের পরিবার পাবে সুষ্ঠু বিচার এমনটাই প্রত্যাশা সকলের।
এদিকে মতলব উত্তর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আলমগীর হোসেন রনি বলেন, মামলাটি পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিকেশন (পিবিআই) তদন্ত করছেন । আমাদের হাতে মামলাটি আর নেই। তাই মামলার অগ্রগতি বিষয়ে কিছু বলতে পারছি না।
অন্যদিকে ওসির তথ্যে পিবিআই চাঁদপুরের পুলিশ সুপার মোঃ মোস্তফা কামাল রাশেদ বলেন, এ মামলার তদন্ত চলছে।প্রকৃত অপরাধীদের খুঁজে বের করার চেষ্টা চলছে। যারা সম্পৃক্ত পিবিআই সর্বোচ্চ চেষ্টা করবে তাদের গ্রেফতার করে আইনের আওতায় আনার জন্য।
উজ্জ্বল মিয়াজির বড় ভাই মামলার বাদী গোলাম কিবরিয়া মিয়াজী বলেন, আমার ছোট ভাই মোবাইল ফোন ব্যবসায়ী উজ্জল মিয়াজি ২০২২সালের ৫ মে রাতে ঈদ পুনর্মিলনী অনুষ্ঠানে যোগ দিতে শ্বশুরবাড়ী এলাকা চাঁদপুরের মতলব উত্তর উপজেলার ষাটনল পর্যটন কেন্দ্রে তদারকী করতে গেলে সন্ত্রাসীরা কুপিয়ে ও গুলি করো আমার ভাইকে হত্যা করে। এ বিষয়ে মতলব উত্তর থানার মামলা নং ৬ (৫) ২২।
তিনি বলেন, আমার ভাইয়ের হত্যকারী আসামি কবির খালাসী, জজ মিয়া খালাসী, নাহিদ খালাসী, মমিন মিজি, ইকবাল মিজি, শফি মিজি, বাদশা, শাহজাহান, কামরুজ্জামান, বাবলা ওরফে উজ্জলসহ এজাহারভুক্ত সকল আসামীরা ঘটনার দুই বছর অতিবাহিত হওয়ার পরও প্রশাসনের নাকের ডগা দিয়ে প্রকাশ্যে ও দিবালোকে ঘুরে বেড়ালেও প্রশাসন উল্লেখিত আসামীদের গ্রেপ্তার করছে না। আমি আপনাদের মাধ্যমে সব আসামীকে গ্রেপ্তার করে বিচারের আওতায় আনার দাবি ও আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের দাবী জানাচ্ছি।
আপনার মতামত লিখুন :