প্রকাশিত, ৬ জানুয়ারি, ২০২১
আমির হোসেন,ঝালকাঠি প্রতিনিধিঃ
ঝালকাঠিতে প্রতিপক্ষের দফায় দফায় হামলায় আহত হয়ে চিকিৎসাধীন অবস্থায় নিহত হয়েছেন অটোচালক লুৎফর রহমান। গত ৫জানুয়ারী মঙ্গলবার বরিশাল শেবাচিম হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করেন তিনি। বুধবার সকালে মরদেহের ময়না তদন্ত শেষে পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। এঘটনায় নিহতের স্ত্রী নুরনাহা বেগম বাদি হয়ে ১২জনের নাম উল্লেখ করে সদর থানায় মামলা দায়ের করেন। লুৎফর রহমানের মৃত্যুর খবর পেয়ে হামলাকারীরা আত্মগোপনে চলে গেছে। আসামীদের গ্রেফতারের দাবিতে পুলিশ তৎপর রয়েছে বলে জানিয়েছে সদর থানার ওসি খলিলুর রহমান। দু’দফায় হামলা চালানোয় আহত হয়ে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ১৪দিন পরে মারা যান অটোচালক লুৎফর।
জমিজমা সংক্রান্ত বিরোধের জেরে গত ২২ ডিসেম্বর মঙ্গলবার সদর উপজেলার তারুলী গ্রামে ও সদর হাসপাতালের জরুরী বিভাগের রুম আটকে দুই দফায় মারধরে গুরুতর আহত হওয়ায় তার মৃত্যু হয়েছে বলে মামলায় অভিযোগ করা হয়েছে।
নিহতের পরিবার ও এলাকাবাসী জানায়, দীর্ঘদিন ধরে প্রভাবশালী প্রতিবেশী গোলাম মোস্তফা ও আঃ হাই হাওলাদারের সাথে জমি নিয়ে বিরোধ চলছিল। সম্প্রতি মোস্তফা ও তার পরিবার সেই জমি নিয়েএকটি মামলা দায়ের করলে আদালত বিরোধীয় জমিতে ১৪৪ ধারা জারী করে। অটোচালক লুৎফর রহমান আদালতের নির্দেশনায় জমির ওপর দিয়ে চলাচলের অনুমতি পেতে আবেদন জানালে বিচারক তার আবেদন মঞ্জুর করেন।
গত ২২ ডিসেম্বর বিরোধীয় জমির ওপর দিয়ে অটো চালিয়ে যাওয়ার সময় লুৎফর রহমান ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় পুড়য়া তার ছেলের উপর প্রতিপক্ষ গোলাম মোস্তফা, আঃ হাই হাওলাদার, আঃ লতিফ হাওলাদার তাদের স্ত্রী-পুত্র মিলে হামলা চালিয়ে আহত করে। পরে একই গ্রামের আবুল বাসার (৩৮) তাদের চিকিৎসার জন্য ঝালকাঠি হাসপাতালে নিয়ে আসলে প্রতিপক্ষ গোলাম মোস্তফা, তার শ্বশুরসহ দলবল নিয়ে জরুরী বিভাগের দরজা আটকে দ্বিতীয় দফায় হামলা চালায়। এতে গুরুতর আহত হলে সদর হাসপাতালে কয়েকদিন চিকিৎসা নিলে পুরোপুরি সুস্থ হবার আগেই হাসপাতাল থেকে ছাড়পত্র দেয়া হয়। অসুস্থাবস্থায় লুৎফর রহমান বাড়িতে গেলে ১দিন পরে আবার পুনরায় গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়েন। স্বজনরা তাকে বরিশাল শেই বাংলা চিকিৎসা মহাবিদ্যালয়ে (শেবাচিম) হাসপাতালে ভর্তি করেন। মঙ্গলবার ৫ জানুয়ারী সেখানে চিতিৎসাধীন অস্থায় শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন।
তারুলী গ্রামের কয়েকজনে জানান, লুৎফর রহমান অটোরিক্সা চালিয়ে বহুকষ্টে এক ছেলেকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ও অপর ছেলেকে বরিশাল সরকারি কলেজে পড়াতো। অর্থ ও পেশী শক্তির বলে তাকে যারা নির্মমভাবে হত্যা করেছে তাদের দৃষ্টান্ত মূলক শাস্তির দাবি জানান এলাকাবাসি ।
এ ব্যাপারে ঝালকাঠি থানার ওসি খলিলুর রহমান বলেন, অটোচালক লুৎফরকে মারধর করে হত্যার অভিযোগে সদর থানায় মামলা রুজু করা হয়েছে। আসামীরা পলাতক থাকায় এখন পর্যন্ত গ্রেফতার করা যায়নি। আসামীদের গ্রেফতারে চেষ্টা চলছে।
আপনার মতামত লিখুন :