চীনের সঙ্গে বাণিজ্য ঘাটতি কমানোর পরিকল্পনা করছে ভারত সরকার। এজন্য দেশটির সরকারি থিঙ্কট্যাঙ্ক এনআইটিআই আয়োগ গবেষণা কার্যক্রম শুরু করেছে। বাণিজ্যের ক্ষেত্রে কীভাবে চীন নির্ভরতা কমানো যায় সে বিষয় নিয়ে কাজ করবে সংস্থাটি। একই সঙ্গে ভূরাজনৈতিক কারণে যেন সরবরাহ ব্যবস্থা ব্যাহত না হয়, সে ব্যাপারেও বাণিজ্যিক কৌশল উপস্থাপন কররে তারা।
চীনের সঙ্গে বাণিজ্য ঘাটতি কমানো ও স্থানীয় উৎপাদন বৃদ্ধির ক্ষেত্রে দুটি গবেষণায় নেতৃত্ব দেওয়ার জন্য পরামর্শক নিয়োগ দেওয়া হবে।
এমন এক সময় এই পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে যখন ভারত ও চীনের মধ্যে উত্তেজনা বিরাজ করছে। ২০২০ সালের জুনে দুই দেশের সেনাদের মধ্যে সংঘাত হয়। এরপর থেকেই দেশ দুইটির সম্পর্ক নজিরবিহীনভাবে খারাপ হয়।
কিছু শিল্পে চীনের ওপর নির্ভরশীলতা বেড়েছে ভারতের। তাছাড়া করোনা মহামারি ও ভূরাজনৈতিক দ্বন্দ্বের কারণে ভারতের সরবরাহ ব্যবস্থা ও উৎপাদন নেটওয়ার্কের দুর্বলতা ফুটে উঠেছে।
আয়োগ এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, তাদের পর্যালোচনার প্রধান লক্ষ্য হলো বাণিজ্য ঘাটতির পরিকল্পনা ও ভূরাজনৈতিক উত্তেজনার মধ্যেও সরবরাহ ব্যবস্থা ঠিক রাখার কৌশল প্রণয়ন করা।
পরিকল্পনার অংশ হিসেবে ভারত ও চীনের সরবরাহ ব্যবস্থা বিশ্লেষণ ও এশিয়ার অন্যান্য দেশের সঙ্গে ভারতের সরবরাহ ব্যবস্থা কেমন, তার তুলনামূলক বিশ্লেষণও করা হবে।
তাছাড়া যেসব পণ্যের ক্ষেত্রে ভারত তুলনামূলকভাবে সুবিধাজনক অবস্থায় আছে ও যেসব পণ্যের চীনে বড় বাজার আছে সেটাও খতিয়ে দেখা হবে। মূলত চীনে রপ্তানি বৃদ্ধির লক্ষ্যেই এটা করা হবে।
আয়োগ তাদের ওয়েবসাইটে জানিয়েছে, নিয়োগ পাওয়া পরামর্শক প্রতিষ্ঠানের উচিত হবে কীভাবে অভ্যন্তরীণ উৎপাদন বাড়ানো যায় তার সুপারিশ করা, যা শুধু চীনের সঙ্গে বাাণিজ্য ঘাটতি কমানোর জন্য নয়, বৈশ্বিক সরবরাহে পরিবর্তন আনার ক্ষেত্রেও।
তাছাড়া প্রযুক্তির ক্ষেত্রে ভারত কোথায় কোথায় পিছিয়ে আছে ও সেই ঘাটতি পূরণে কী পরিমাণ বিদেশি বিনিয়োগ প্রয়োজন, তা খতিয়ে দেখা হবে। প্রতিযোগিতামূলক পণ্য তৈরিতে দেশীয় মানবসম্পদ কীভাবে কাজে লাগানো যায়, তা-ও খতিয়ে দেখা হবে
২০২২-২৩ অর্থবছরে ভারতের সবচেয়ে বেশি বাণিজ্য ঘাটতি ছিল চীনের সঙ্গে। গত অর্থবছরে দেশটি বিশ্বে ৪৫০ বিলিয়ন বা ৪৫ হাজার কোটি ডলারের পণ্য রপ্তানি করেছে, একই সময়ে তারা আমদানি করেছে ৭১ হাজার ৪০০ কোটি ডলারের পণ্য। অর্থাৎ ওই বছরে ভারতের বাণিজ্য ঘাটতির পরিমাণ ছিল ২৬ হাজার ৪০০ কোটি ডলার। এর ৩২ শতাংশ বা ৮ হাজার ৩১০ কোটি ডলারের ঘাটতি শুধু চীনের সঙ্গে।
সূত্র: দ্য ইকোনমিক টাইমস