চাকরিচ্যুত বিডিআরদের চাকরি পুনর্বহালের দাবি।


দেশ সময় প্রকাশের সময় : ২০২৪-১১-১৯, ১১:২৪ অপরাহ্ন /
চাকরিচ্যুত বিডিআরদের চাকরি পুনর্বহালের দাবি।

প্রকাশিত,১৯,নভেম্বর

মারুফ সরকার, রিপোর্টারঃ

৬ রাইফেল ব্যাটালিয়ান জামালপুর’র চাকরিচ্যুত বিডিআর সদস্যদের নির্বাহী আদেশে চাকরিতে পুনর্বহালের জন্য প্রধান উপদেষ্টার হস্তক্ষেপ আশা করেছেন চাকরিচ্যুত বিডিআর সদস্যরা। তারা বলেন, ৬ রাইফেল ব্যাটালিয়ানরা কোনো বিদ্রোহ করেনি। সেখানে সকল সৈনিকরা শান্ত এবং সেনা কর্মকর্তাদের অনুগত ছিলেন।

সোমবার (১৮ নভেম্বর) জাতীয় প্রেসক্লাবে আকরাম খাঁ হলে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে তারা এই হস্তক্ষেপ করেন। পরে সংবাদ সম্মেলনে তার পাঁচ দফা দাবি তুলে ধরেন।

দাবিতে বলা হয়েছে—

(১) বিশেষ আদালত কর্তৃক প্রদত্ত রায় নির্বাহী আদেশে বাতিলের জন্য সবিনয় অনুরোধ করছি।

(২) চাকরিচ্যুত ৬ রাইফেল ব্যাটালিয়নের সকল সৈনিকদের বেতনভাতা ও পূর্ণ সুযোগ সুবিধাসহ চাকরিতে পূর্ণ বহালের অনুরোধ করছি।

(৩) ২০০৯ সালের ২৫ ও ২৬ ফেব্রুয়ারি ঢাকার পিলখানায় পরিকল্পিত হত্যাকাণ্ডের পুনরায় তদন্তপূর্বক দোষীদের বিচার করে, যারা নির্দোষ তাদের মুক্তি দিয়ে চাকরিতে পুর্নবহালের অনুরোধ করছি।

(৪) পিলখানা হত্যাকাণ্ডটি একটি পরিকল্পিত হত্যাকাণ্ড বিধায় তথাকথিত বিডিআর বিদ্রোহ কথাটি বাতিল করার জন্য অনুরোধ করছি।

(৫) বিশেষ আদালত কর্তৃক বিভিন্ন মেয়াদে সাজা ভোগকারী বিডিআর সদস্যগণ যারা বিস্ফোরক মামলায় দীর্ঘ ১৬ বছর যাবৎ কারাগারে আছে, তাদেরকে অনতিবিলম্বে মামলা হতে অব্যাহতিপূর্বক মুক্তি দেওয়ার জন্য অনুরোধ করছি।

সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে বলা হয়, এ সংক্রান্ত মামলাটি সরকারি আদেশে প্রত্যাহার করে নতুন করে বিশেষ কোর্টের আদেশনামা স্পেশাল ফোর্ট ১৭ মামলা নম্বর ০৫/২০১০, জামালপুর/১৭ দীর্ঘ ২২ মাস পরে ১৬/০৩/২০১১ তারিখে স্পেশাল ফোর্ট ৫২ বিডিআর সদস্যদের বিভিন্ন মেয়াদের সাজা ও ১০০/- (একশত) টাকা জরিমানা করে আদালত।

লিখিত বক্তব্যে আরও বলা হয়, ২২ মাসের হাজতবাস কারাদণ্ডের সহিত অন্তভূক্ত করা হয়নি। বিধায় এতকিছু প্রমাণাদি থাকা সত্ত্বেও নিজেদেরকে নির্দোষ প্রমাণ করা অসম্ভব ছিল। অথচ রাইফেলস আদেশ ১৯৭২ মোতাবেক বিচারের পূর্বে কোনো বিডিআর সদস্যকে জেলহাজতে পাঠানোর কোনো বিধান নেই। বিশেষ আদালত কর্তৃক গত ১৬/০৩/২০১১ তারিখের রায়ে বিডিআর সদস্যদের বিভিন্ন মেয়াদে কারাদণ্ড প্রদান করা হলেও ২২ মাসের কারাভোগ কারাদণ্ডের সহিত অন্তর্ভুক্ত করা হয়নি।

বিশেষ আদালতে আসামি পক্ষের আইনজীবী নিয়োগ করা হলেও আদালত চলাকালীন কোনো কথা বলার অনুমতি ছিল না বিধায় প্রহসনের বিচারে নিজেদেরকে নির্দোষ প্রমাণ করা অসম্ভব ছিল।

সংবাদ সম্মেলনে রায়ের বিরুদ্ধে কোনো আপিলের ব্যবস্থা রাখা হয়নি ফলে বাধ্য হয়ে আমাদেরকে বিশেষ আদালত কর্তৃক প্রদত্ত সাজা সম্পূর্ণ ভোগ করে মুক্ত হতে হয়েছে। আমাদের পরিবারগুলো অত্যন্ত গরিব যা সকলেরই জানা। চাকরির ওপর নির্ভর করে আমাদের সংসার চালাতে হত। চাকরিচ্যুত হয়ে বর্তমানে আমাদের পরিবারগুলো মানবেতর জীবনযাপন করছে। জুলাই-আগস্ট ছাত্র-জনতার আন্দোলনে স্বৈরাচার সরকারের পতন হয়েছে। তাই নির্দলীয় নিরপেক্ষ অন্তর্বতীকালীন সরকারের নিকট আমরা ৬ রাইফেলস ব্যাটালিয়ন জামালপুরের চাকরিচ্যুত সদস্যগণ চাকরিতে পুনর্বহালে জন্য হস্তক্ষেপ কামনা করছি।

সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন হাবিলদার মো সিরাজুল ইসলাম। এসময় উপস্থিত ছিলেন চাকরিচ্যুত অন্যান্য বিডিআর সদস্যগণ।