প্রকাশিত,১৩, নভেম্বর,২০২৩
ইমাম হাসান জুয়েল, চাঁপাইনবাবগঞ্জঃ
অনলাইন জুয়ার কারনে পথে বসেছে হাজারো মানুষ,এনজিও জুয়ার ডিলার ৫ ভাই গাড়ি বাড়ি আলিশান কারবার।
চাঁপাইনবাবগঞ্জে ৫ ভাই মিলে সংঘবদ্ধ চক্র একটি ভুয়া এনজিও খুলে কয়েকশ গ্রাহকের কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে আত্মসাতের অভিযোগ উঠেছে পাঁচ ভায়ের বিরুদ্ধে,।
সরেজমিনে গিয়ে জানা গেছে বিভিন্ন প্রলোভনে গ্রাহকদের কাছ থেকে এসব টাকা সংগ্রহ করে অনলাইন জুয়ায় বিনিয়োগ করার কারনে পথে বসেছে কয়েকশ গ্রাহক। চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদর উপজেলার হরিপুরে সাফল্য ভোগ্যপণ্য সমবায় সমিতি লিমিটেড নামের এই অবৈধ ভুয়া এনজিওর বিরুদ্ধে এসব অভিযোগ গ্রাহকদের বেরিয়ে আসে।
জানা যায়,পাঁচ বছর আগে থেকে এই অবৈধ এনজিওটি ক্ষুদ্র ঋণ প্রদানের কাজ করে আসছে। কিন্তু সমাজসেবার কাজ করার নাম করে সমাজসেবা অধিদপ্তর থেকে ২০১৯ সালে নিবন্ধন করে এসব অবৈধ ক্ষুদ্র ঋণের কার্যক্রম পরিচালনা করছে সাফল্য ভোগ্যপণ্য সমবায় সমিতি লিমিটেড। ক্ষুদ্র ঋণ ছাড়াও জনগণের কাছ থেকে বিপুল পরিমাণ লাভ দেয়ার প্রলোভন দেখিয়ে প্রায় ১ কোটি ১০ লক্ষ টাকা সংগ্রহ করেছে ভুয়া এনজিওটি।
গ্রাহকদের অভিযোগ,গ্রাহকদের কোটি টাকা সংগ্রহ করে আলিশান বাড়িঘর ও গাড়ি কিনেছেন ভুয়া এনজিও চক্র। সাফল্য ভোগ্যপণ্য সমবায় সমিতি লিমিটেডের সভাপতি নামে প্রতারক আব্দুর রশিদ ও তার আপন ভাই সাধারণ সম্পাদক হযরত আলী এর নেতৃত্বে রয়েছে। এছাড়াও এসব টাকা তসরুফ করার প্রক্রিয়ার সাথে প্রতক্ষ ও পরোক্ষভাবে সম্পৃক্ত রয়েছে সভাপতি আব্দুর রশীদের চার ভাই.দুরুল,নুরুল,শামীম ও মাস্টার প্লান দাতা নবী।
অনুসন্ধানে জানা যায়,গ্রাহকের এসব টাকা সংগ্রহ করে বিভিন্ন জায়গায় জমি ও প্লট কিনেছেন তারা। এছাড়াও গ্রাহকদের সঞ্চয়ের টাকার মোটা অংশই তারা নষ্ট করেছে পাঁচ ভাই মিলে অনলাইনে জুয়া খেলে। এছাড়াও সমবায় সমিতির এসব টাকায় বিলাসিতা করেছে পাঁচ ভাই ও এই প্রতারক চক্রের সদস্যরা। বর্তমানে গ্রাহকরা টাকা চাইতে গেলে উল্টো নানারকম ভয়ভীতি ও প্রাণনাশের হুমকি দিচ্ছে আব্দুর রশীদ ও তার বাকি ৪ ভাই,যা সরেজমিনে গিয়ে প্রতিবেদক ভিডিও ধারণ করে।
গ্রাহক শ্রী প্রতীক শাহা জানান,গত ২ বছর ধরে সঞ্চয় জমা করেছিলাম সাফল্য ভোগ্যপণ্য সমবায় সমিতি লিমিটেডে। এখন স্ত্রীর চিকিৎসা করার জন্য জরুরিভাবে টাকার প্রয়োজন। তাই গত দুই মাস থেকে টাকার জন্য ঘুরছি। কিন্তু দিব দিছি বলে ঘুরাচ্ছে তারা। অথচ সমিতিতে নেয়ার আগে বলেছিল,যেকোন বিপদে আপদে টাকা ফেরত দেয়া হবে যেকোন সময়ে এখন টাকা ফেরত চাইতে আসতে হচ্ছে তাদের বাড়িতে দুই বারের বেশি টাকা চাওয়ার কথা বল্লে খবর করে দেওয়ার হুমকি।
আব্দুল আজিম নামের এক মুদি দোকানী বলেন,বিপদের সময় পাশে পাব বলে সমিতিতে মাসিক ১০০ টাকা করে জমা দিয়েছি গত ৩ বছরে। এখন টাকা তুলে নিয়ে চাইলে দিচ্ছে না। বরং টাকা চাইতে গিয়ে বারবার বললে গালিগালাজ হুমকি-ধামকি এমনকি মারধরেরও শিকার হয়েছি।
জমিজমার ব্যবাসায়ী ইসাহাক আলী জানান,এফডিআর হিসেবে প্রায় ৮ লাখ ৭৭ হাজার টাকা জমা দিয়েছিলাম। কিন্তু সাফল্য ভোগ্যপণ্য সমবায় সমিতি লিমিটেড এখন টাকা দিতে চাইছে না। আমার মতো কয়েকশ গ্রাহকের সাথে এমন প্রতারণা করছে তারা ৫ ভাই মিলে। শুনেছি,গ্রাহকের এসব টাকা নিয়ে তারা ব্যক্তিগত সম্পদের পাহাড় গড়েছে। জুয়া ও মাদক সেবনে এসব টাকা খরচ করেছে এখন বুঝতে পারছি এটি অবৈধ এনজিও তাদের ভয়ে মুখ খুলতে পারছিনা অভিযোগও দিতে পারছি না।
গ্রাহক নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বলেন, আমরা পুলিশ র্যাব ও প্রশাসনের নিকট আকুল আবেদন জানায়,তাদেরকে সকলকে আইনের আওতায় নিয়ে আসা হোক এবং গরিব অসহায় দরিদ্র খেটে-খাওয়া মানুষের টাকা ফেরত দেয়া হোক। সঞ্চয়ের টাকা হারিয়ে আমরা এখন অসহায় নি:স্ব হয়ে গেছি।
ভুক্তভোগীদের অভিযোগ পেয়ে এবিষয়ে সংবাদ সংগ্রহ করতে গেলে বক্তব্য না দিয়ে উল্টো প্রতিবেদকের উপর হামলার ঘটনা ঘটেছে। এছাড়াও ক্যামেরা,ট্যাব,মোবাইল ফোন কেড়ে ভুক্তভোগী গ্রাহকদের ভিডিও রেকর্ড সকল তথ্য ডিলেট করেছে তারা পাঁচ ভাই মিলে এবং সাংবাদিকদের উপর অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করেছে তারা পাঁচ ভাই। এমনকি এনিয়ে সংবাদ প্রকাশ করলে হত্যার হুমকি দিয়েছে প্রতিবেদককে ঘটনার বিষয়টি বেড়ে যাওয়া ও হামলার ফাসানোর আশঙ্কা টের পায় প্রতিবেদক পরোক্ষ চাঁপাইনবাবগঞ্জের সিপিসি-১ র্যাব ৫ এক সদস্য ইসূফ সাইড থেকে ঘটনার বিষয়টি শুনে এবং দেখে এগিয়ে এসে সংবাদ সংগ্রহ করতে যাওয়ার তিন সংবাদ কর্মীকে তাদের হাত থেকে উদ্ধার করেন।
এ বিষয়ে চাঁপাইনবাবগঞ্জের সাংবাদিক মহলের তীব্র নিন্দা ও ক্ষোব প্রকাশ করে বলেন আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর নিকট দাবি এসব অপরাধীদের এখনই ব্যবস্থা না নিলে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী ও গণমাধ্যম কর্মীদের মাঠে কাজ করাটা জনগণের কাছে প্রশ্ন হয়ে দাঁড়াবে।তা না হলে দেশের সাংবাদিক নেতৃবৃন্দ কঠোর আন্দোলন গড়ে তুলবে তাদের বিরুদ্ধে।
এমতাবস্থায় শিক্ষাবিদ ও আন্তর্জাতিক গবেষক একেএম হাসান আলী জানান, মাদক ব্যবসায়ী সরকারের কর ফাঁকি দেওয়া অবৈধ এনজিওগুলো এরা জনগণ ও দেশের শত্রু,সমাজের শত্রু। তাদের বিরুদ্ধে সামাজিক আন্দোলন গড়ে তুলতে হবে। এতে আসল লেখক সাংবাদিক ভাইয়েরা তাদের সঠিক কাজ যথাযথভাবে করতে সক্ষম হবে। তবে এ ঘটনার বিষয়ে তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি আমরা সাংবাদিকদের পক্ষে রয়েছি। আমাদের দাবি বিষয়টি দ্রুত আইনশৃঙ্খলা বাহিনী তাদের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ নিবে বলে আশাবাদী।
এবিষয়ে চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ওসি সাজ্জাদ হোসেন বলেন,থানায় একটি অভিযোগ পাওয়া গেছে। তদন্তকাজ শুরু হয়েছে আমরা তদন্ত সাপেক্ষে প্রয়োজনীয় আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।।
আপনার মতামত লিখুন :