প্রকাশিত,২৮,মে,২০২৪
সঞ্জিব দাস,গলাচিপা (পটুয়াখালী) প্রতিনিধি
ঘূর্ণিঝড় রেমালের প্রভাবে নদীর পানি বৃদ্ধি ও প্রচণ্ড স্রোতের চাপে পটুয়াখালীর গলাচিপা উপজেলার সাথে সারাদেশের যোগাযোগের সড়কে ফাটল দেখে দিয়েছে। এতে উপজেলার সাথে সড়ক যোগাযোগ বন্ধ হয়েছে। উপজেলার গোলখালী ইউনিয়নের মুশুরিকাঠি গ্রামের স্লুইস গেটের রাস্তাটি দেবে গেছে।
সেটি কিছুদিন আগে মেরামত করা হলেও পানির চাপে টিকতে পারেনি জোয়ারের পানি ও প্রবল বৃষ্টিতে গলাচিপা উপজেলার ২৫ হাজার পরিবার পানিবন্দী হয়ে পড়েছে। সোমবার বিকেল ৪টা পর্যন্ত গলাচিপা উপজেলায় প্রবল বৃষ্টিপাত ও ঝড়ো হাওয়া বইছে।
গত প্রায় ২৪ ঘণ্টা ধরে বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন রয়েছে।উপজেলার ডাকুয়া ইউনিয়নের আটখালী গ্রামে আধা কিলোমিটার রাস্তা বেড়িবাঁধ না থাকায় রাবনাবাদ নদীর পানি বৃদ্ধি ও অবিরাম বর্ষণে পানি ঢুকছে লোকালয়ে। দীর্ঘ দিন এই জায়গাটিতে বেড়িবাঁধের দাবি জানালেও কোনো পদক্ষেপ নেয়া হয়নি।
রোববার জিও ব্যাগ দিয়ে রাস্তাটি উঁচু করা হলেও সোমবার দুপুরে আর রক্ষা হয়নি। জোয়ারের পানি বৃদ্ধি ও প্রবল স্রোতে জিও ব্যাগ উপচে পানি প্রবেশ করে। এতে আটখালী ও ডাকুয়া গ্রাম পুরোপুরি পানির নিচে। এছাড়া হোগলবুনিয়া, ছোট চত্রা, বড় চত্রা, ফুলখালী গ্রাম পানিতে আংশিক তলিয়ে গেছে। স্থানীয় এক ইউনিয়ন পরিষদ সচিব জানান, চরবিশ্বাস ইউনিয়নের পূর্ব চরবিশ্বাস এলাকার বেড়িবাঁধে ব্যাপক ফাটল দেখা দিয়েছে। যেকোনো সময় বেড়িবাঁধ ছুটে লোকালয়ে পানি প্রবেশের আশঙ্কা রয়েছে। চর বাংলা ও চর আগস্তির বেড়িবাঁধের বাইরের অংশ পানিতে তলিয়ে রয়েছে। চরকাজল ইউনিয়নের পশ্চিম চরকাজল এলাকায় বেড়িবাঁধ না থাকায় পানি প্রবেশ করে পাঁচ শতাধিক পুকুর ও ঘের তলিয়ে গিয়ে মাছ ভেসে গেছে। ওই ইউনিয়নের বেড়িবাঁধের আরো দুই-তিন জায়গায় ফাটল দেখা দিয়েছে। ছোট চর কাজল গ্রামের মো: ইকবাল হাওলাদারের বড় পুকুর তলিয়ে তিন লক্ষাধিক টাকার মাছ ভেসে গেছে বলে জানান স্থানীয় দফাদার। দোকানদার মনির হোসেন জানান, রতনদী তালতলী ইউনিয়নের বদনাতলী বাজারে ১০টি দোকান সম্পূর্ণ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে এবং পাঁচটি দোকান আংশিক ক্ষতি হয়েছে বলে পানপট্টি ইউনিয়নের লঞ্চঘাট-সংলগ্ন বাজারে ১০-১২টি দোকান বাতাসের উড়িয়ে নিয়ে গেছে বলে জানান স্থানীয় দোকানদার ফিরোজ প্যাদা। পানপট্টি ইউনিয়নের গুপ্তের হাওলা গ্রামের বেড়িবাঁধটি ভয়াবহ ঝুঁকিতে রয়েছে।
গলাচিপা সদর ইউনিয়নের মূল ভূখণ্ড থেকে বিচ্ছিন্ন চর কারফারমা এলাকাটি পুরোপুরি পানির নিচে নিমজ্জিত। এতে ভোগান্তিতে ওই এলাকার হাজার খানেক মানুষ। গলাচিপা পৌরসভার বেড়িবাঁধের বাইরের এলাকা জোয়ারের পানিতে তলিয়ে আছে। ওই এলাকার মানুষজন রোববার থেকে আশ্রয়কেন্দ্রে অবস্থান নিয়েছে। গলাচিপা উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা খোকন চন্দ্র দাস জানান, আবহাওয়া পরিস্থিতি এখনো উন্নতি হয়নি। তাই ঘূর্ণিঝড়ের ক্ষয়ক্ষতি নিরূপণ করা যায়নি।