“গোপালগঞ্জ সদর থানা পুলিশের মানবিক সাফল্যে আরো একটি নতুন পালক যুক্ত হলো।”


deshsomoy প্রকাশের সময় : ২০২৩-০৮-৩০, ৬:০২ অপরাহ্ন /
“গোপালগঞ্জ সদর থানা পুলিশের মানবিক সাফল্যে আরো একটি নতুন পালক যুক্ত হলো।”

প্রকাশিত,৩০, আগস্ট,২০২৩

মোঃ শিহাব উদ্দিন গোপালগঞ্জঃ

গত ২৯/০৮/২৩ তারিখ বিকাল অনুমান ০৪.০০ ঘটিকার দিকে জনৈক মোস্তাইন বিল্লাহ (২৮) নামের একজন ব্যক্তি ঘোনাপাড়া এলাকা থেকে আনুমানিক ১০/১২ বছরের একটি ছেলে শিশু পেয়ে গোপালগঞ্জ সদর থানায় নিয়ে আসেন। উক্ত শিশুটি বাক প্রতিবন্ধী। স্থানীয়ভাবে জানা যায়, শিশুটি খুলনা-টেকেরহাট লাইনের সাগর পরিবহন নামের বাসে বেদগ্রাম থেকে উঠে ঘোনাপাড়া এসে নামে। উক্ত শিশুটিকে থানায় আনার পর জনাব মোহাম্মদ আনিচুর রহমান, অফিসার ইনচার্জ, গোপালগঞ্জ সদর থানা এর নির্দেশে শিশুটি প্রাপ্তির বিষয়ে গোপালগঞ্জ সদর থানার ফেসবুক পেইজে একটি পোস্ট প্রদান করা হয়। এদিকে গোপালগঞ্জ সদর পুলিশ গতকাল বিকাল থেকে বাক প্রতিবন্ধী শিশুর খাবার খাওয়ানো সহ সকল দায়িত্ব নিয়ে নেয়। যেন কেউ দেখে বুঝার উপায় নেই যে এই শিশু কুড়িয়ে পাওয়া কেউ! শিশুটি যেন পুলিশেরই সন্তান। এমনকি গতকাল রাতে অফিসার ইনচার্জ নিজে শিশুটিকে নিয়ে একই টেবিলে বসে নাস্তা করেন।

আজকে সকালে ফেসবুকের কল্যাণে লোকজনের মাধ্যমে শিশুটির মা শিশুটি গোপালগঞ্জ সদর থানায় আছে মর্মে জানতে পারেন। সংবাদ পেয়ে শিশুটির মা হাছিনা খাতুন বরিশাল জেলার গৌরনদী থানার উত্তর বিজয়পুর গ্রাম থেকে সন্তানকে নেওয়ার জন্য চলে আসেন গোপালগঞ্জ সদর থানায়। থানায় এসে হাউ মাউ করে কান্না করতে করতে শিশুকে জড়িয়ে ধরে মা এমন করছেন যে, তিনি তাঁর সন্তানকে বুকে জড়িয়ে ধরবে, না কোলে নিবে বুঝতে পারছিল না। মায়ের চোখে মুখে যেন পরম তৃপ্তির ছাপ, যেন তাঁর মধ্যে পৃথিবীতে আর অপ্রাপ্ত কিছু নেই। হয়তবা প্রতিবন্ধী শিশু বলেই মায়ের দরদটা এত বেশি ছিল। থানার পরিবেশটা এমন হয়েছিল যে, সেখানে উপস্থিত প্রত্যেকের চোখের পানি ধরে রাখতে কষ্ট হচ্ছিল।

এরপর জনাব মোহাম্মদ আনিচুর রহমান, অফিসার ইনচার্জ, গোপালগঞ্জ সদর থানা শিশুটির মায়ের সাথে কথা বলে জানতে পারেন, শিশুটির নাম- খায়রুল ইসলাম হাসিব(১২)। খায়রুল ইসলাম হাসিব গতকাল সকাল অনুমান ১১টার দিকে তাদের গ্রামের বাড়ি বরিশাল জেলার গৌরনদী থানাধীন উত্তর বিজয়পুর থেকে বের হয়। এরপর থেকে তাকে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছিল না। শিশুটির মায়ের সাথে আলোচনা করে আরো জানা যায়, শিশুটির বয়স যখন ২১ মাস তখন থেকেই সে কানে শুনে, কিন্তু কথা বলতে পারে না। শিশুটির বাবা এইচ এম কামাল হোসেন দীর্ঘ প্রায় ০৯ বছর ধরে ইতালী প্রবাসী। শিশুটির মা গৌরনদীর একটি মাদ্রাসায় শিক্ষকতা করেন। অফিসার ইনচার্জ ঘটনার বিস্তারিত শুনার পর শিশুটিকে তাঁর মায়ের জিম্মায় প্রদান করা হয়। উল্লেখ্য যে, উক্ত শিশুটি সমাজসেবা অধিদপ্তর কর্তৃক প্রতিবন্ধী ঘোষিত।

এই ঘটনায় আবারো প্রমাণিত হলো- “মা-বাবার কাছে সন্তান সন্তানই, হোক সে প্রতিবন্ধী কিংবা শারীরিক সুস্থ।” আরো প্রমাণিত হলো- গোপালগঞ্জ সদর থানা পুলিশ সর্বদাই অসহায়ের পাশে আছে যেকোন পরিবেশ-পরিস্থিতিতে।