গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়া ভূমি অফিসে পড়েনি সংস্কারের ছায়া, ভোগান্তিতে পড়ছে সাধারন মানুষ।


দেশ সময় প্রকাশের সময় : ২০২৪-০৯-৩০, ৬:৫৯ অপরাহ্ন /
গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়া ভূমি অফিসে পড়েনি সংস্কারের ছায়া, ভোগান্তিতে পড়ছে সাধারন মানুষ।

প্রকাশিত,৩০,সেপ্টেম্বর, ২০২৪.

মোঃ শিহাব উদ্দিন গোপালগঞ্জঃ

গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়া উপজেলার ডুমুরিয়া ইউনিয়নের বাশবাড়িয়া বাজার এলাকায় মৃত রফিউদ্দিন তালুকদারের অসহায় মেয়ে রুলুফার ইয়াসমিন এর পৈত্রিক সূত্রে পেরিফেরীভুক্ত হাট বাজারের চান্দিনা ভোগ দখল করা জায়গা টুঙ্গিপাড়া আওয়ামী লীগের সাধারন সম্পাদক ও বিগত সরকার সময়কালের ভুমি কর্মকর্তার হাত ধরে দুই সার্ডার ভিত্তিক পাকা ঘর নির্মান করে পুলিশের সদ্য অবসরপ্রাপ্ত মো. আনিচুর রহমান্।

ভুক্তভোগী রুলুফার ইয়াসমিন বলেন, আমি জেলা প্রশাসক বরাবর জোর দখলকারী আনিছুর রহমানের নামে বন্দোবস্ত না দেওয়ার জন্য জেলা প্রশাসক বরাবর আবেদন করি ১ জানুয়ারি ২০২৪ ইং তারিখে।আমি আবেদনে উল্লেখ করি, এস ও এসএ ৯৫ নং বানঝনিয়া মৌজার আরএস ৮৭৫ নং দাগে আমি পৈতৃক ওয়ারিশি স্বত্বেও খরিদা স্বত্বে নিজ নামীয় বিআরএস রেকর্ডীয় মূলে ভোগদখলকার আছি। উক্ত জমির উপরে আমার একাধিক দোকানঘর আছে বলে অভিহিত করেন। আমার স্বত্ব দখলীয় ও লন্ডের সম্পত্তি আমাকে না দিয়ে উক্ত ব্যক্তিকে ডিসিআর প্রদান করা হলে আমার স্বত্ব ও ভোগদখলীয় সম্পত্তির সাথে পেরিফেরীভুক্ত সম্পত্তি আমাকে না দিয়ে অপর কোন ব্যক্তিকে বন্দোবস্ত/ইজারা প্রদান করা হলে দারুণ অসুবিধার মধ্যে পড়ে যাবো ।আমি তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা গ্রহণের অনুরোধ করি।আমি কোনো সুফল না পেয়ে পরবর্তীতে মামলা দায়ের করি।
তিনি আরো বলেন, আমার বাবার পৈত্রিক সূত্রে পাওয়া আরএস, এসে অনুযায়ী বিআরএস রেকর্ড হওয়ার পরে ০১ খতিয়ান সরকার যখন খাস ডাক দিলেন তখন আমি সরকারে বিরুদ্ধে মামলা করি এবং সেই মামলায় আমি রায় পাই। আমি অসহায়, এই বাজারের জায়গায় ব্যবসা বাণিজ্য করে আমার সংসার চলে। সরকার যখন এই জায়গার বন্দোবস্ত দেওয়ার জন্য উদ্যোগ নিলে আমার মায়ের আরেক স্বামীর সন্তান সদ্য পুলিশের অবসর প্রাপ্ত আনিুছুর রহমান টঙ্গিপাড়া আওয়ামী লীগের সাধারন সম্পাদক বাবুল শেখের ক্ষমতা বলে প্রশাসনকে ম্যানেজ করে হাই কোর্টের রিটে ঐ জায়গার উপর আধাপাকা ঘর নির্মানের জন্য নিষেধাজ্ঞা থাকা সত্বেও জোর করে পাকা দোকান নির্মান করেন্। গোপালগঞ্জের জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের রেভিনিউ ডেপুটি কালেক্টর হাইকোর্টের রিটের পেক্ষিতে টুঙ্গিপাড়া উপজেলা ভুমি সহকারী কমিশনারকে অভিহিত করার পরেও আওয়ামী নেতার বাবুল শেখ দাপটে ও ভূমি কর্মকর্তা একত্রে আমার দখলিয় সম্পত্তি বিত্তবান পুলিশ সদস্যকে বন্দোবস্ত প্রদান করেছে। এ ব্যপারে আমি মামলা দায়ের করি। হাইকোর্টের রিট পিটিশন ৮০৫৫/২০২৪ নং মামলা চলাকালে ঐ জায়গায় আধাপাকা বিল্ডিং নির্মান না করার আবেদনপত্র সহ জরুরি ভিত্তিতে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেওয়ার নির্দেশক্রমে ব্যবস্থা গ্রহন করার জন্য বলেন রেভেনিউ ডেপুটি কালেক্টর ভূমি গোপালগঞ্জ। তদন্ত প্রতিবেদন দেওয়ার আগেই বিবাদি পাকা ঘর নির্মান করেছেন যা দৃশ্যমান।

অভিযোগের ভিত্তিতে সরেজমিনে দেখা যায়, বিবাদী ঐ জায়গার উপর দুই সার্ডার বিশিষ্ট পাকা দোকানঘর নির্মান করেছে। গোপন সূত্রে আরো জানা যায় তিনি নিয়ম বহির্ভূতভাবে বহু টাকার বিনিময়ে দোকান ঘরটি ভাড়া দিয়েছেন। এছাড়াও সরকারের নিয়ম মাফিক পেরিফেরীভুক্ত হাট বাজারের চান্দিনা ভিটা গরিব ও অসহায়দের জন্য বরাদ্দ দেওয়া হয়। সেক্ষেত্রে বিত্তবান সরকারি চাকরিজীবীকে এই জমিটা বন্দোবস্ত দেওয়ার ব্যাপারটা অবৈধ বলে সকলে মনে করছে। উপর্যুক্ত সকল বিষয় নজরে এনে ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করছি।

বিবাদী আনিছুর রহমানের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমি এখানে সরকারের কাছ থেকে বন্দোবস্ত নিয়ে দোকান নির্মান করেছি। টুঙ্গিপাড়ার সকল নেতা, সাংবাদিক ও ভূমি অফিসের কর্মকর্তা সহ সকলেই অবগত আছে। তার কথায় সুস্পষ্ট যে সে টাকার বিনিময়ে নেতার প্রভাব খাটিয়ে অবৈধ কে বৈধ করে কাজ করেছে। আপনারা আমার কিছুই করতে পারবেন না।
টুঙ্গিপাড়া উপজেলা সহকারী ভূমি কমিশনারের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ব্যপারটি আমি জানি, ওটা ওদের পারিবারিক সমস্য। আমি তদন্ত প্রতিবেদন দেওয়ার জন্য বলেছি। হাটবাজারের জায়গা অসহায়দের না দিয়ে বিত্তবানদের বন্দোবস্ত দেওয়া ও প্রতিবেদন দেওয়ার আগেই পাকা ঘর নির্মানের ব্যাপারটি সে এড়িয়ে যান।
দীর্ঘ ১৭ বছর আওয়ামী লীগ সরকারের শাসন আমলে টুঙ্গিপাড়া সকল প্রশাসন দলের নেতা কর্মীদের হাত ধরে সকল ক্ষেত্রে দুর্নীতি করেছে টাকার বিনিময়ে, লাভবান হয়েছে কিছু নেতা ,সরকারি দপ্তরের কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা। সুবিধা বঞ্চিত হয়েছে সাধারন মানুষ।টুঙ্গিপাড়া উপজেলার বিভিন্ন সরকারি ও বেসরকারি দপ্তরে থাকা কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা। টুঙ্গিপাড়া উপজেলা ভুমি অফিস সহ গোপালগঞ্জ জেলার ভুমি সংক্রান্ত সকল বিভাগে সেবা নিতে গিয়ে ভোগান্তির শিকার ও অর্থ দন্ডির শিকার হচ্ছে সাধারন মানুষ। গোপালগঞ্জে ভুমি সংক্রান্ত সকল বিভাগের প্রতি সাধারন মানুষের আস্থা হারিয়ে ফেলেছে। ভুমি অফিস মানেই টাকার খেলা সুধু তাই নয় প্রতিনিয়ত ভোগান্তির শিকার হচ্ছে সাধারন মানুষ। এ ব্যপারে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের নজরদারি ও সংস্কারের প্রয়োজন বলে আমরা মনে করছি।