প্রকাশিত,১৪, জানুয়ারি,২০২৪
এম এইচ শাহীন, গাজীপুর প্রতিনিধি।
গাজীপুরে বাজিতে মারবেল খেলা নিয়ে বিরোধের জেরে ১৪ বছর বয়সী কিশোর বকুলকে হত্যা করা হয়েছে। এ ঘটনায় রাসেল আহম্মেদ সোয়াদ নামে একজনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)।
হত্যাকাণ্ডের পাঁচ মাসের বেশি সময় পর এর পেছনের কারণ জানালো গাজীপুর পিবিআইয়ের পুলিশ সুপার মোহাম্মদ মাকছুদের রহমান। গ্রেফতার ২১ বছর বয়সী রাসেল আহম্মেদ সোয়াদ গাজীপুর সিটি কর্পোরেশনের ১৮ নং ওয়ার্ডের টেকনগপাড়া এলাকার মো. সেলিম মিয়ার ছেলে। তিনি ভোগড়া বাইপাস কাঁচামালের আড়ৎদার শফিকের দোকানে শ্রমিক হিসেবে কাজ করতেন।
গত বছরের ২৪ জুলাই বাসন থানার ভোগড়া পেয়ারা বাগান এলাকার রিকশা চালক সাজ্জাদ মিয়ার ছেলে বকুল খুন হয়। সে ওই এলাকায় পরিবারের সঙ্গে থেকে রিকশা চালাত। পিবিআই বলছে, গত বছরের ২৪ জুলাই সকাল ১০ টার দিকে খেলতে যাওয়ার কথা বলে বকুল বাসা হতে বের হয়। গভীর রাত পর্যন্ত সে ফিরে না আসায় তাকে বিভিন্ন জায়গায় খোঁজাখুঁজি করেন তার বাবা-মা। এক পর্যায়ে ওই এলাকার ছিদ্দিকুর রহমানের মালিকানাধীন পরিত্যক্ত ঘরে জমে থাকা পানিতে লাশ ভেসে থাকতে দেখেন স্থানীয়রা। পরে খবর পেয়ে সেখানে গিয়ে স্বজনরা বকুলের মরদেহ শনাক্ত করেন। পরে থানায় খবর দিলে পুলিশ গিয়ে লাশ উদ্ধার করে। এ সময় বকুলের ডান চোখ ও নাকে জখমের চিহ্ন দেখা গেছে। পরদিন ২৫ জুলাই তার বাবা সাজ্জাদ বাদী হয়ে জিএমপি'র বাসন থানায় মামলা করেন।
গাজীপুর মেট্রোপলিটনের বাসন থানা পুলিশ তদন্তের অগ্রগতি না পারায় গাজীপুর পিবিআইকে তদন্তের নির্দেশ দেওয়া হয়। এরপর গত ২৮ ডিসেম্বর পিবিআই তদন্ত শুরু করে। মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা গাজীপুর পিবিআই পরিদর্শক জামাল উদ্দিন খান বলেন, “বকুল তার বয়সী কয়েকজন কিশোরের সঙ্গে মহানগরীর ভোগড়া বাইপাস পেয়ারা বাগান এলাকার বালুর মাঠে বাজি ধরে মার্বেল খেলছিল। খেলা নিয়ে এক কিশোরের সঙ্গে বকুলের ঝগড়া ও মারামারি হয়। এক পর্যায়ে বকুল ছেলেটিকে চড়-থাপ্পর মারে ও জোরে ধাক্কা দেয়। তাদের ঝগড়া দেখে এলাকার এক বড় ভাই দুইজনকেই খেলা থেকে চলে যেতে বলে। পরে ছেলেটি রাগ করে সেখান থেকে চলে যায়। এর জেরে রাত ৯ টার পর ওই কিশোর ও সোয়াদসহ কয়েকজন বকুলকে খুঁজে বের করে হাত-পা বেঁধে তাকে কিল-ঘুষি মারে এবং এক পর্যায়ে শ্বাসরোধে হত্যা করে পালিয়ে যায়।
মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা গাজীপুর পিবিআই পুলিশ পরিদর্শক জামাল উদ্দিন খান জানান, এলাকাবাসীর সহায়তায় পুলিশ অভিযান চালিয়ে সোয়াদকে গ্রেফতার করে। এরপর ১০ জানুয়ারি তাকে আদালতের অনুমতি নিয়ে দুইদিনের রিমান্ডে নিলে সে বকুলকে হত্যার কথা স্বীকার করে। এ ঘটনায় জড়িত বাকিদের গ্রেফতার অভিযান চলছে বলেও জানিয়েছেন।
এ বিষয়ে পিবিআই গাজীপুর ইউনিট ইনচার্জ, পুলিশ সুপার মোহাম্মদ মাকছুদের রহমান বলেন, বাজিতে মারবেল খেলায় হার জিত নিয়ে ঝগড়া বিবাদকে কেন্দ্র করে পরবর্তীতে সোয়াদসহ অভিযুক্তরা পরিকল্পিতভাবে বকুলকে হত্যা করে মরদেহ গুম করে।