প্রকাশিত,০৬, জানুয়ারি,২০২৪
এম এইচ শাহীন, গাজীপুর প্রতিনিধি।
গাজীপুরে তিনটি আসনে স্বতন্ত্র প্রার্থীর পক্ষে নির্বাচনী মাঠে নেমেছেন গাজীপুর সিটি কর্পোরেশনের সাবেক মেয়র এ্যাড. জাহাঙ্গীর আলম। এই তিন আসনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী মন্ত্রী, প্রতিমন্ত্রী ও সাবেক প্রতিমন্ত্রী। গাজীপুর-১ রেজাউল করিম রাসেল, গাজীপুর-২ কাজী আলীম উদ্দিন বুদ্দিন ও গাজীপুর-৫ আখতারউজ্জামান।
গাজীপুর আওয়ামী লীগের শক্ত ঘাঁটি হিসেবে পরিচিত। গত তিনটি জাতীয় সংসদ নির্বাচনে জেলার পাঁচটি আসনেই জিতেছে দলটি। এবার বিএনপি না থাকলেও নিজ দলের স্বতন্ত্র প্রার্থীরাই নৌকা প্রতীকের প্রার্থীদের মূল প্রতিদ্বন্দ্বী। বিশেষ করে তিনটি আসনে ট্রাকের শক্ত প্রতিদ্বন্দ্বিতায় পড়েছে নৌকা। ওই তিন আসনেই ট্রাক প্রতীকের
প্রার্থীদের পক্ষে মাঠে নেমেছেন গাজীপুর সিটি করপোরেশনের সাবেক মেয়র এ্যাড. জাহাঙ্গীর আলম।
জানা গেছে, জাহাঙ্গীর আলম গাজীপুর-১ আসনের স্বতন্ত্র প্রার্থী ও কালিয়াকৈর উপজেলা আওয়ামী
লীগের সাধারণ সম্পাদক রেজাউল করিম রাসেল, গাজীপুর-২ আসনের স্বতন্ত্র প্রার্থী ও গাজীপুর মহানগর আওয়ামী লীগের সাবেক সিনিয়র সহ-সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা কাজী আলিম উদ্দিন বুদ্দিন এবং গাজীপুর-৫ আসনের স্বতন্ত্র প্রার্থী ও গাজীপুর জেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান, ডাকসুর সাবেক ভিপি ও সাবেক সংসদ সদস্য আখতারুজ্জামানের পক্ষে কাজ করছেন।
গাজীপুর-১, ২ ও ৫ এই তিনটি সংসদীয় আসনে নিজেদের স্বতন্ত্র প্রার্থী ঘোষণা দিলেও তাদের নিয়ে সাধারণ মানুষের আগ্রহ ছিল কম। কিন্তু জাহাঙ্গীর আলম তাদের পক্ষ নেওয়ায় পাল্টে গেছে গাজীপুরের নির্বাচনী দৃশ্যপট। গাজীপুর-১ আসনে মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রী এ্যাড. আ.ক.ম মোজাম্মেল হক, গাজীপুর-২ আসনে যুব ও ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী জাহিদ আহসান রাসেল এবং গাজীপুর-৫ আসনে বর্তমান সংসদ সদস্য মেহের আফরোজ চুমকি। আওয়ামী লীগের দুঃসময়ে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা ছিলেন গাজীপুর-২ আসনের স্বতন্ত্র প্রার্থী কাজী আলিম উদ্দিন বুদ্দিন। গাজীপুর-৫ আসনের স্বতন্ত্র প্রার্থী আখতারুজ্জামানও দীর্ঘদিন সক্রিয়ভাবে আওয়ামী রাজনীতির সঙ্গে সম্পৃক্ত। গাজীপুর-১ আসনের স্বতন্ত্র প্রার্থী রেজাউল করিম রাসেল দীর্ঘদিন স্থানীয় আওয়ামী লীগের রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত।
গত বছর গাজীপুর সিটি করপোরেশন নির্বাচনে তিনি মেয়র পদে দলীয় প্রার্থী আজমত উল্লা খানের বিরুদ্ধে মাকে স্বতন্ত্র প্রার্থী করে বিজয়ী করেছেন। এবার সংসদ নির্বাচনে গাজীপুর-১, গাজীপুর-২ এবং গাজীপুর-৫ আসনে তিনি আওয়ামী লীগের মনোনয়ন না পাওয়া তিন স্বতন্ত্র প্রার্থীর পক্ষ নিয়েছেন। গাজীপুর-২ আসন সম্পূর্ণ এবং অপর দুটি আসনের অংশ বিশেষ সিটি করপোরেশন এলাকায় পড়েছে। সিটি করপোরেশন এলাকায় তিনি নিজের প্রভাব কাজে লাগিয়ে তিন স্বতন্ত্র প্রার্থীর পক্ষে প্রচার চালাচ্ছেন।
জানা যায়, গাজীপুর-১ আসনে গত তিনবারের বিজয়ী আওয়ামী লীগের প্রার্থী মন্ত্রী এ্যাড. আ.ক.ম মোজাম্মেল হকের সঙ্গে এবার মূল লড়াই হবে নিজ দলের স্বতন্ত্র প্রার্থী রেজাউল করিম রাসেলের। দলীয় মনোনয়ন না পাওয়া রেজাউল কালিয়াকৈর উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান। তাঁর প্রতীক ট্রাক। এই আসনে আরও ছয়জন প্রার্থী আছেন।
জাহাঙ্গীর আলম বলেছেন, ‘আমি এসব করছি সরকারের বিরুদ্ধে নয়। আমি এ তিনটি আসনের ট্রাক প্রতীকের প্রার্থীদের বিজয়ী করে শেখ হাসিনাকে উপহার দিতে চাই।’
এ বিষয়ে সাবেক মেয়র জাহাঙ্গীর আলম বলেন, ‘কোনো প্রার্থী যেন বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জিততে না
পারেন, সে জন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সিদ্ধান্ত দিয়েছেন, যে কেউ নির্বাচন করতে পারবেন। তাই আমরা একটি সুন্দর নির্বাচন প্রতিযোগিতামূলক উপহার দিতে চাই। আমাদের যারা প্রার্থী তাদের প্রত্যেকের রক্তে আওয়ামী লীগ। আমরা জন্মগতভাবে আওয়ামী লীগ করি। সে জন্যই প্রার্থীদের পক্ষে নির্বাচনে কাজ করছি। এটা যেন কেউ ভুল ভাবে ব্যাখ্যা না দেয়।' তিনি আরও বলেন, 'আমি এসব করছি সরকারের বিরুদ্ধে নয়। আমি এ তিনটি আসনের ট্রাক প্রতীকের প্রার্থীদের বিজয়ী করে শেখ হাসিনাকে উপহার দিতে চাই।'