গলাচিপায় মাঠে মাঠে হলুদ সূর্যমুখী ফুলের সমারোহ।


deshsomoy প্রকাশের সময় : ২০২৪-০৪-২৮, ৩:১৫ অপরাহ্ন /
গলাচিপায় মাঠে মাঠে হলুদ সূর্যমুখী ফুলের সমারোহ।

প্রকাশিত,২৮, এপ্রিল,২০২৪

সঞ্জিব দাস,গলাচিপা (পটুয়াখালী) প্রতিনিধি

দূর থেকে দেখলে মনে হয় হলুদের গালিছা বিছানো। কাছে গেলে দেখা যায় বাতাসে দোল খাওয়া সূর্যমুখী ফুলের হাসি। পটুয়াখালীর গলাচিপা উপজেলার মাঠে মাঠে এখন সূর্যমুখীর ফুলের হাসি। ভালো ফলন পাওয়ায় কৃষকের মুখেও হাসি ফুটে উঠছে।
এবার গলাচিপা উপজেলার আমখোলা, গোলখালী, সদর ইউনিয়ন, পানপট্টি, ডাকুয়া, বকুলবাড়িয়া, কলাগাছিয়া, গজালিয়া, রতনদী তালতলী, চর বিশ্বাস ও চরকাজলসহ ১২টি ইউনিয়নে ১২০ হেক্টর জমিতে সূর্যমুখীর আবাদ হয়েছে। এখান থেকে এবার প্রায় ২০০ থেকে ২৫০ মেট্রিক টন সূর্যমুখী বীজের ফলন পাওয়া যাবে।
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের আওতায় তেলজাতীয় ফসলের উৎপাদন বৃদ্ধি প্রকল্পে হাইসান-৩৩ জাতের সূর্যমুখীর আবাদ হয়েছে এ উপজেলায়। আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় সূর্যমুখীর ফলনও ভালো হযেছে। তেল জাতীয় অন্য ফসলের চেয়ে সূর্যমুখীর চাষ লাভজনক হওয়ায় কৃষকরা এ ফসল চাষে আগ্রহী হয়ে উঠছে।
গলাচিপা সদর ইউনিয়নের বোয়ালিয়া গ্রামের কাউয়ুম চৌকিদার জানান, তিনি ৩৩ শতাংশ জমিতে সূর্যমুখীর আবাদ করেছেন। কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতর থেকে এক কেজি বীজ এবং ২০ কেজি ইউরিয়া, ২০ কেজি জিপসাম, তিন কেজি ম্যাট সার, ২৫ কেজি ড্যাব সার সরবারহ করেছে। এ ছাড়া জমি চাষাবাদ বাবদ তিন হাজার ৫০০ টাকা এবং সেচ বাবদ ৫০০ টাকা খরচ হয়েছে তার। গলাচিপা পৌরসভার ঝন্টু দেবনাথ জানান, ব্যাকের উদ্যোগে রতনদী গ্রামে ১২০ শতাংশ জমিতে সূর্যমুখীর আবাদ করেছেন তিনি। জলবায়ু সহনশীল বীজ, ইউরিয়া, টিএসপি, পটাশ, জিংক, দস্তা ও বোরন সার সরবরাহ করা হয়েছে। ফলনও ভালো হয়েছে।
গলাচিপা সদর ইউনিয়নের উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা দেলোয়ার হোসেন জানান, প্রতি বিঘা জমিতে খরচ হয় ৫-৬ হাজার টাকা। উৎপাদিত ফসল বিক্রি করা যায় ১৬ হাজার থেকে ২০ হাজার টাকা। বীজ রোপণের ৯০ থেকে ১০৫ দিনের মধ্যে ফসল ঘরে তোলা যায়। এবার আবহাওয়া ও পরিবেশ অনুকূলে থাকায় সূর্যমুখীর ফলন বেশ ভালো হয়েছে। এই ফসলের রোগবালাই কম এবং সূর্যমুখীর খৈল গরুর জন্য উৎকৃষ্ট খাদ্য।
ডাকুয়া ইউনিয়নের উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা নাহিদ হাসান বলেন, তেল জাতীয় ফসলের আবাদ বৃদ্ধির জন্য সরকারের নির্দেশনা রয়েছে। সে লক্ষ্যে আমরা প্রান্তিক পর্যায়ের কৃষকদের সব ধরনের পরামর্শ ও সহায়তা দিয়ে আসছি।
গলাচিপা উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা আরজু আক্তার জানান, সূর্যমুখী থেকে পাওয়া তৈল মানুষের স্বাস্থ্যের জন্য উপকারী। বাংলাদেশ সরকার কৃষকদেরকে সূর্যমুখী চাষে উদ্বুদ্ধ করতে বীজ ও সার বিনামূল্যে সরবরাহ করছে। আমাদের ধারণা, তেল জাতীয় ফসল সূর্যমুখীর চাষ কৃষকেরকে আরো এক ধাপ এগিয়ে নিয়ে যাবে।