প্রকাশিত,১২, ফেব্রুয়ারি,২০২৪
সঞ্জিব দাস,গলাচিপা পটুয়াখালী, প্রতিনিধি
কয়েক বছর আগেও বাড়ির সামনে ক্ষেতের আইলে রাস্তার দুপাশে অসংখ্য খেজুর গাছ ছিল সে সব গাছের অধিকাংশই এখন নেই। কমছে খেজুর গাছ দিনে দিনে বিলুপ্ত হচ্ছে খেজুর রস। যে সংখ্যক শিউলি রস সংগ্রহ করছেন এ রসের সন্ধানে শহর থেকে গ্রামে ছুটে এসে ভির জমাচ্ছে ক্রেতারা।
পটুয়াখালী গলাচিপা উপজেলার গ্রাম বাংলার আবহমান ঐতিহ্যবাহী খেজুর রস আহরণে ব্যস্ত সময় পাড় করছে শিউলি রা। সকালের ঘন কুয়াশা ভেদ করা ভোরের সূর্যের লাল অভায় আর পাঁখিদের কিচিরমিচির ডাকে উস্ন বিছানার মিতালি ছেড়ে জীবিকা নির্বাহে শিউলি নেমে পড়ে খেজুর রস আহরণে, কিন্তু বিলুপ্ত হতে বসেছে খেজুর রস। আগ্রহ থাকলেও আগের মতো খেজুর গাছ না থাকায় পাওয়া যাচ্ছে না স্বাদের এ খেজুর রস। এক সময় মানুষের বাড়িতে, সড়কের পাশে সারি সারি খেজুর গাছ দেখা যেত। শীতকাল আসতেই গাছ কেটে হাঁড়ি বসিয়ে ভোরে রস বিক্রি করত। এখন গাছ নেই বললেই চলে। যা আছে, সেগুলো থেকে আগের মতো রস পড়ে না। গত ১৫ বছর ধরে প্রাকৃতিক দুর্যোগসহ জলবায়ু পরিবর্তনের কারনে এঅঞ্চলে খেজুর গাছের সংকট দেখা দিছে।
উপজেলার বিভিন্ন এলাকা ঘুরে এমনটাই দেখা গেছে। রস সংগ্রহকারী শিউলি আবদুল সালাম হাওলাদার বলেন, সকালে হাঁড়ি নামিয়ে রস নিয়ে যাওয়ার পরও গাছ থেকে ফোঁটা ফোঁটা রস ঝড়তে থাকত দুপুর পর্যন্ত। এখন রস ঝড়বে তো দূরের কথা সারা রাতে মাঝারি সাইজের কলসই ভরে না। আগে প্রচুর খেজুর গাছ ছিল এলাকায় কিন্তু পরিবেশ দূষণ ও গাছের মালিকরা গাছগুলো লাকড়ি হিসেবে ইটভাটায় বিক্রি করে দেওয়ায় খেজুর গাছ ক্রমেই হারিয়ে যাচ্ছে। এক সময় প্রতি কেজি খেজুর রস বিক্রি হতো ২০ থেকে ৩০ টাকায়। বর্তমান সে খেজুরের রস ১২০ টাকা। অনেক জায়গাতে ২০০ টাকাও বিক্রি হচ্ছে।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা, আর্জু আক্তার বলেন শীতে খেজুরের রসের সঙ্গে গ্রামবাংলার সম্পর্ক বেশ পুরোনো ও নিবিড়। তবে এই গাছের রসের স্বাদ ভুলতে বসেছেন মানুষ। শিউলি সংকটে তেমনভাবে আর রস সংগ্রহ করা হয় না। ফলে হারাতে বসেছে একসময়ের রস সংগ্রহের ঐতিহ্যও। এছাড়া, পরিবেশের জন্য ক্ষতিকর বিভিন্ন দূষণে গাছের শক্তি ও ভিটামিন কমে গেছে।
এ ঐতিহ্য ধরে রাখতে হলে সরকারি বে-সরকারিভাবে খেজুর গাছ রোপণে সকলকে এগিয়ে আসতে হবে। উপজেলা পর্যায়ে গাছ বিতরণকালে খেজুর চারা প্রদানের জন্য ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে অনুরোধ স্থানীয়দের।
আপনার মতামত লিখুন :