প্রকাশিত,২৯ মার্চ ২০২৫
সঞ্জিব দাস, গলাচিপা (পটুয়াখালী) প্রতিনিধিঃ
পটুয়াখালীর গলাচিপায় অজ্ঞান পার্টির খপ্পরে পরে তার একমাত্র সম্বল অটোবোরাক হারিয়ে দিশেহারা হয়ে পড়েছে রফিকুল ইসলাম। রফিকুল ইসলাম (৬০) হচ্ছেন পৌরসভার ৮ নম্বর ওয়ার্ডের কলেজ রোড শাহাপাড়ার মৃত শামছুল হক সিকদারের ছেলে। রফিকুল ইসলামের ছোট বেলা থেকেই কষ্টের জীবন। পরিবারের সদস্য সংখ্যা ১০ জন থাকলেও উপার্জনকারী ব্যক্তি একমাত্র তিনি এবং তার জীবন জীবিকার জন্য আয়ের একমাত্র সম্বল অটোবোরাক। আর সেই অটোবোরাক অজ্ঞান পার্টির খপ্পরে পরে হারিয়ে ফালায় এখন তিনি দিশেহারা প্রায়। গত ২১ মার্চ শুক্রবার সন্ধ্যায় পটুয়াখালী থেকে গলাচিপা ফেরার পথে অজ্ঞান পার্টির লোকজন ভাড়া নেওয়ার কথা বলে কৌশলে তাকে অজ্ঞান করে তার অটোবোরাকটি নিয়ে চলে যায়। রফিকুল ইসলাম জ্ঞান ফিরে তার গাড়িটি দেখতে না পেয়ে প্রায় পাগলের মত হয়ে গেছেন। পরিবারের লোকজন তাকে পটুয়াখালী সদর হাসপাতালে নিয়ে চিকিৎসা করান। সুস্থ হয়ে তিনি শুধু তার গাড়ির কথা বলছেন। এখন তিনি কীভবে রোজগার করবেন তা ভেবেই কান্নায় বারবার মুর্ছা যান। অনেক খোঁজাখুঁজি করে রিক্সাটি না পেয়ে তিনি পটুয়াখালী সদর থানায় অভিযোগ করেছেন। যার অভিযোগ নম্বর ১১৪০। এ বিষয় রফিকুল ইসলাম বলেন, আমি এনজিও থেকে কিস্তিতে টাকা তুলে নতুন একটি অটোবোরাক কিনে গলাচিপা থেকে উলানিয়া চালাতাম। যা আয় হতো তা দিয়ে কিস্তি চালাতে এবং স্ত্রী ও সন্তানের জন্য খাবার নিতাম। এখন কিস্তি শোধ করবো কী করে তা আমি জানি না। কোন উপায় না পেলে আমার রক্ত বিক্রি করতে হবে। এ সময় তিনি আরো বলেন, গলাচিপা সরকারি কলেজের সামনে থেকে ৫ জন লোক আমার বোরাকটি গলাচিপা থেকে পটুয়াখালী কোর্টে কাজ আছে বলে রিজার্ভ নিয়ে যান। গলাচিপা ফেরিঘাট থেকে অটোবোরাকটি নিয়ে ঐ ৫ জন লোক নিয়ে আমি পটুয়াখালী যাই। পটুয়াখালী থেকে তারা সকলেই অটোবোরাকটি নিয়ে আবার গলাচিপা আসবে বলে পটুয়াখালী বাঁধঘাট তালুকদার এলাকা মসজিদে পাশে একটি চায়ের দোকানে বসিয়ে চা ও পানের সাথে চেতনানাশক ঔষধ খাওয়াইয়া অজ্ঞান করে আমাকে রাস্তার পাশে ফেলে তারা আমার গাড়িটি নিয়ে চলে যায়। আমি জ্ঞান ফিরে পেয়ে আমার গাড়িটি দেখতে না পেয়ে পাগাল হয়ে যাই। আমার বাঁচার শেষ সম্বলটাও হারিয়ে ফেললাম। এ বিষয়ে গলাচিপা উপজেলা সাবেক মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার নুরুল ইসলাম ধলা বলেন, রফিকুল ইসলাম একজন গরিব মানুষ। ওর পরিবারটি নির্ভর করে অটো গাড়িটির উপর। বোরাকটি ফিরে পেলে সে আবার স্বাচ্ছন্দে জীবন যাপন করতে পারবে। তাই প্রশাসন সহ সকলের সহযোগিতা ও দৃষ্টি কামনা করছি। এ বিষয়ে ৮ নম্বর ওয়ার্ডের সাবেক কাউন্সিলর সাহেব আলী মাতুব্বর বলেন, আসলেই রফিকুল ইসলাম একজন গরিব মানুষ। তার অটোবোরাকটি মলম পার্টি নিয়ে যাওয়ায় পরিবারটির আয়ের পথ বন্ধ হয়ে গেছে। এতে তার পরিবার অসহায় হয়ে পড়েছে। যেহেতু গাড়িটি পটুয়াখালী সদর থেকে মলম পার্টির লোকজন নিয়ে গেছে সেহেতু পটুয়াখালী সদর থানার কাছে সিসিটিভি দেখে গাড়িটি উদ্ধার করে দেওয়ার জোর দাবী জানাচ্ছি। পটুয়াখালী সদর থানার পরিদর্শক মাহমুদুল্লাহ বলেন, অভিযোগ পেয়েছি, বিভিন্ন জায়গায় অভিযান চলছে। এ অভিযান অব্যাহত থাকবে।
আপনার মতামত লিখুন :