প্রকাশিত,০৮,মে,২০২৪
জেলা প্রতিনিধি কুমিল্লাঃ
কুমিল্লার মুরাদনগর উপজেলার সদর ইউনিয়নের নিমাইকান্দি গ্রামের বাসিন্দা কিশোর গ্যাং মেহেদীর হুমকিতে শঙ্কায় দিন যাপন করছে উপজেলা সদরের একাধিক যুবক। কিশোর গ্যাং মেহেদী উপজেলা সদরের ডলি বেগমের ছেলে ও তার পিতা হংকং প্রবাসী। দীর্ঘদিন ধরে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুক, মেসেঞ্জার ও ওয়াটসঅ্যাপে অকথ্য ভাষায় গালাগালি ও সন্ত্রাসী ছেলেদের দিয়ে মারার হুমকি ধমকি দিয়ে আসছিলো মেহেদী। উস্কানিমূলক কথাবার্তায় বারংবার চেষ্টা করছিলো সহপাঠীদের উত্তেজিত করে ঝগড়া বাঁধতে। বিষয়টি নিয়ে তার মায়ের নিকট সহপাঠীরা অভিযোগ দিলে তার মা তখন ছেলেদের বোঝিয়ে বাড়ি পাঠিয়ে দেয় এবং ভবিষ্যতে উস্কানির পুনরাবৃত্তি করবে না বলে আশ্বাস প্রদান করে।
ঘটনার তিন-চারদিন পর মেহেদী হঠাৎ পুরানো জ্বর-সর্দির অসুস্থতায় রোগাক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়। তখন তার মা অপবাদ দিতে শুরু করে মেহেদীর সহপাঠীরা নাকি মেহেদীকে মেরে অসুস্থ করেছে। ফলে সকল ছেলেদের বাসায় মিথ্যা অভিযোগ দিতে শুরু করে এবং মিথ্যা ও সাজানো মামলা দিয়ে পুলিশি হয়রানির ভয়ভীতি প্রদর্শন করতে শুরু করে। সেই সাথে ক্যাডার বাহিনী দিয়ে মেরে ছেলেদের হাত-পা ভেঙে দেওয়ারও মৌখিক হুমকি প্রদান করে।
ছেলেদের মারতে মেহেদীর হুমকি প্রদানের একাধিক স্ক্রিনশট ও মেসেজ প্রতিবেদকের হাতে এসেছে। যেগুলো দেখে স্পষ্ট বোঝা যায় কিশোর গ্যাং মেহেদী ছেলেদের হয়রানি করতে এসব হুমকি দিয়েছে। পরবর্তীতে, ছেলেরা তার পরিবারে বিচার দিলে, কিশোর গ্যাং মেহেদী ও তার মা মিলে সকলকে হয়রানি করতে এসব নাটক সাজিয়েছে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে ছেলেরা বলে, মেহেদীকে আমরা বন্ধু হিসেবে দেখতাম তাই তার উস্কানিতে উত্তেজিত না হয়ে তার মায়ের কাছে বিচার দেই। তাকে যদি মারতাম তাহলে তার নামে বিচার দিতে তাকে তার মায়ের কাছে কেন নিয়ে যাব আপনারাই বলেন? মূলত বন্ধুদের ইফতার খাওয়ার মাঝে তাকে জানানো হয়নি বিধায় সে নানা তালবাহানায় নাটক সাজিয়ে বিভিন্ন জায়গায় আমাদের মারবে বলে হুমকি দিতে শুরু করে। মেসেঞ্জারে অনেক চেষ্টা করে আমাদের উত্তেজিত করতে পারেনি। তাকে যখন আমরা বলি আয় তোর আম্মুকে এগুলো দেখাবো, তখন সে স্বেচ্চায় সবার সামনে বালুতে গরাগরি দিতে শুরু করে। তাকে সেখান থেকে তার বাসায় নিলে সে বলে তার আম্মু বাসায় নেই, ডাক্তারের কাছে গিয়েছে। মিনিটের ব্যবধানে তার আম্মু নিচে আসলে সে আবারো বলে সে জানে না তার আম্মু কোথায় ছিল। তাকে মারলে তিন-চার দিন কিছু হলো না, হঠাৎ কেন ১ সপ্তাহ পরে হাসপাতালে যাবে? আমরা তাকে মারার প্রশ্নই উঠে না, উল্টো সে আমাদের মারার জন্য হুমকি-ধমকি দিয়েছে। যে ছেলের সাথে মেহেদীর এক মাস দেখা হয় না তার বাসায়ও অভিযোগ দিয়েছে সেও নাকি মেহেদীকে মেরেছে। সাজানো নাটকের মাধ্যমে সন্ত্রাসী বাহিনী দিয়ে আমাদের মারতে ও মিথ্যা অভিযোগে পুলিশি হয়রানির ভয়ভীতি প্রদর্শন করায় আমরা বর্তমান আতঙ্কিত অবস্থায় দিন যাপন করছি।
এ বিষয়ে কিশোর গ্যাং লিডার মেহেদী ও তার মা ডলি বেগমের সাথে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করেও মুঠোফোনে পাওয়া যায় নি।
মুরাদনগর থানার ওসি প্রবাস চন্দ্র ধর বলেন, কিশোর গ্যাং সহ যেকোনো অপরাধের বিরুদ্ধে আমরা জিরো টলারেন্স। এ ব্যাপারে এখনো কোনো অভিযোগ আসেনি থানায়। শঙ্কায় দিন পার করা ছেলেরা অভিযোগ দিলে কিশোর গ্যাং মেহেদী ও তার পরিবারের বিরুদ্ধে অবশ্যই ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
আপনার মতামত লিখুন :