প্রকাশিত, ১৭,মে,২০২৪
মোঃ মুক্তাদির হোসেন।
স্টাফ রিপোর্টার।
গাজীপুরের কালীগঞ্জ আড়িখোলা রেলওয়ে স্টেশনে আন্তঃনগর ‘এগারো সিন্ধুর’ ও ‘চট্টলা এক্সপ্রেস’ ট্রেনের যাত্রাবিরতির দাবিতে মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়েছে। শুক্রবার (১৭ মে) সকালে আড়িখোলা রেলওয়ে স্টেশনে এ মানববন্ধন করেন স্থানীয় যাত্রীরা।
জানা গেছে, আন্তঃনগর দুই ট্রেনের যাত্রাবিরতির দাবিতে মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করেছে সর্বস্তরের যাত্রীরা। এতে স্থানীয় আড়িখোলা রেলস্টেশনের যাত্রীরা, জনপ্রতিনিধি ও রাজনৈতিক নেতা-কর্মী এবং বিভিন্ন শ্রেণিপেশার সাধারণ মানুষ বক্তব্য রাখেন। বক্তারা বলেন, আড়িখোলা রেলওয়ে স্টেশনে এগারো সিন্ধুর এক্সপ্রেস ট্রেন আপ (৭৪৯) এবং ডাউন (৭৩৮) ও চট্টলা এক্সপ্রেস আপ (৮০১) এবং ডাউন (৮০২) ট্রেনের যাত্রাবিরতির দাবিতে শান্তিপূর্ণ মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করেছি। আমাদের দাবির সঙ্গে একাত্মতা প্রকাশ করে স্থানীয় সংসদ সদস্য বীর মুক্তিযোদ্ধা আখতারউজ্জামান আশ্বস্থ করেছেন সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনা করে জরুরি ভিত্তিতে আন্তঃনগর দুই ট্রেনের যাত্রাবিরতির ব্যবস্থা নেয়ার জন্য চেষ্টা করবেন বলে।
নরসিংদী রেলওয়ে পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ উপপরিদর্শক (এসআই) মো, শহিদুল্লাহ বলেন, আন্তঃনগর ‘এগারো সিন্ধুর’ ও ‘চট্টলা এক্সপ্রেস’ ট্রেনের যাত্রাবিরতির দাবিতে শুক্রবার সকাল ৯টা ১৫মিনিট থেকে ৯টা ৫০মিনিট পর্যন্ত আড়িখোলা রেলওয়ে স্টেশনে মানববন্ধন করেছে স্থানীয়রা।
উল্লেখ্য : গত ১৪ মে আড়িখোলা রেলওয়ে স্টেশনের যাত্রীরা রেলওয়ের মহাপরিচালক (পূর্বাঞ্চল) বরাবর পাঠানো এক পত্রে উল্লেখ করেছে, রাজধানী ঢাকার অতি নিকটবর্তী উপজেলা হওয়া সত্তে¡ও কালীগঞ্জ উপজেলার যোগাযোগ ব্যবস্থায় পশ্চাৎপদ হয়ে আছে। বর্তমানে সড়ক পথে ঢাকায় যাওয়ার জন্য সরাসরি কোনো গণপরিবহন না থাকার ফলে এই এলাকার মানুষ দীর্ঘ ভোগান্তি ও ট্রাফিক জ্যাম অতিক্রম করে ৩/৪ ঘন্টা সময় ব্যয় করে ঢাকায় যাতায়াত করছে। রাজধানী ঢাকার সাথে দ্রæত যোগাযোগের অন্যতম মাধ্যম হিসেবে এই এলাকার চাকুরিজীবী ও সাধারণ জনগণকে ট্রেনের উপর নির্ভর করতে হয়। সেক্ষেত্রে তিতাস কমিউটার ট্রেন ব্যতীত অন্য কোনো ট্রেনের যাত্রা বিরতি আড়িখোলা স্টেশনে নেই। আড়িখোলা রেল স্টেশন হতে প্রতিদিন প্রায় এক হাজার যাত্রী উঠা নামা করে। যদি আন্তঃনগর ‘এগারো সিন্ধুর এক্সপ্রেস ও চট্টলা এক্সপ্রেস’ ট্রেন দুটি আড়িখোলা রেলস্টেশনে যাত্রাবিরতি হয় সরকার আর্থিক ভাবেও লাভবান হবে। তাই আন্তঃনগর এগারো সিন্ধুর এক্সপ্রেস ট্রেন আপ (৭৪৯) এবং ডাউন (৭৩৮) ও চট্টলা এক্সপ্রেস আপ (৮০১) এবং ডাউন (৮০২) আড়িখোলা রেল স্টেশনে যাত্রা বিরতির জন্য আবেদন করছি।
পত্রে কালীগঞ্জ উপজেলার আপামর জনগণের অর্থনৈতিক কর্মকান্ড গতিশীল করতঃ ও তাদের জীবনযাত্রার মান উন্নয়ন করার লক্ষ্যে এ বিষয়ে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণের অনুরোধ জানানো হয়েছে। এতে একাত্মতা প্রকাশ করে স্থানীয় সংসদ সদস্য বীর মুক্তিযোদ্ধা আখতারউজ্জামান ‘এ বিষয়ে জরুরি ভিত্তিতে ব্যবস্থা নেয়ার জন্য সুপারিশ করছেন’। এলাকার সাধারণ মানুষের চলাচলের জন্য জরুরী ভিত্তিতে বিষয়টি সংশ্লিষ্ট দপ্তরে অবগত করবেন বলে পত্র দেয়া যাত্রীদের আশ্বস্থ করেছেন কালীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) এস.এম ইমাম রাজী টুলু। যাত্রীদের কষ্ট লাগবে একাত্মতা প্রকাশ করে আবেদন পত্রে স্বাক্ষর করেছেন কালীগঞ্জ পৌরসভার মেয়র এস এম রবীন হোসেন, উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. এস এম মনজুর-এ-এলাহীসহ সরকারি একাধিক কর্মকর্তা, জনপ্রতিনিধি ও স্থানীয় রাজনৈতিক নেতা-কর্মী এবং এলাকার জনসাধারণ।
আড়িখোলা রেলওয়ে স্টেশনের মাস্টার দিলীপ চন্দ্র দাস বলেন, রাজধানীর নিকটবর্তী উপজেলা হওয়া সত্তে¡ও কালীগঞ্জ থেকে ঢাকা যাওয়া এবং আসার জন্য আড়িখোলা রেলওয়ে স্টেশনে আন্তঃনগর কোন ট্রেনের যাত্রাবিরতি নেই। যদিও রেলওয়ের ডাবল লাইনের এই সড়ক দিয়ে প্রতিদিন প্রায় ৩৫টির মতো আন্তঃনগর ট্রেন আড়িখোলা রেলওয়ে স্টেশন হয়ে দেশের বিভিন্ন গন্তব্যে আসা-যাওয়া করে। এরমধ্যে মাত্র একটি কমিউটার ও দুইটি মেইল এবং একটি লোকাল ট্রেন ঢাকা যাওয়ার পথে এবং ফেরার পথে একটি কমিউটার এবং দুইটি লোকাল ট্রেনের যাত্রাবিরতি রয়েছে আড়িখোলা স্টেশনে। এসব ট্রেনে করে প্রতিদিন গড়ে ১৫শ থেকে ২ হাজার যাত্রী গাদাগাদি করে যাতায়াত করে থাকেন। যদিও তাদের মধ্যে প্রায় বেশিরভাগ যাত্রীই টিকেট ছাড়া ট্রেনে চলাচল করে থাকেন। দৈনিক গড়ে ৫০-৮০ জন যাত্রী টিকেট নিয়ে ট্রেন ভ্রমন করেন। এতে গড়ে মাসিক ৩০-৪০ হাজার টাকা আয় হয়। এছাড়াও স্বল্প খরচে পণ্য পরিবহনের জন্য রেলওয়ের লাগেজ ভ্যানের জন্য বুকিং পদ্ধতি চালু থাকলেও আড়িখোলা রেলওয়ে স্টেশন থেকে এ সেবা নেয়া হয়না বললেই চলে।স্টেশন পরিচালনার জন্য পালাক্রমে তিনজন স্টেশন মাস্টার দায়িত্ব পালন করে থাকেন।
আপনার মতামত লিখুন :