প্রকাশিত,০৫, সেপ্টেম্বর,২০২২
মেহেদী হাসান শাহীন
গাজীপুর প্রতিনিধি।
গাজীপুর জেলার কাপাসিয়া উপজেলার সদর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ও কাপাসিয়া উপজেলা যুবলীগের সভাপতি সাখাওয়াত হোসেন প্রধানের বিরুদ্ধে কিশোরী গৃহকর্মীকে ধর্ষণ ও বাচ্চা প্রসব এবং বাচ্চাসহ কিশোরীকে অপহরণের অভিযোগে গাজীপুর আদালতে মামলা হয়েছে।
বৃহস্পতিবার গাজীপুরের নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আদালত (পিটিশন মামলা নং ২২৭/২২) থেকে এই তথ্য জানা যায়।
মামলার বাদী ভুক্তভোগী কিশোরীর বাবার করা পিটিশন মামলাটি আমলে নিয়ে পিবিআইকে তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা নিতে নির্দেশ দিয়েছেন আদালত। মামলায় চেয়ারম্যান সাখাওয়াত হোসেনকে একমাত্র আসামি করা হয়েছে।
মামলার বিবরণ থেকে জানা যায়, কিশোরী গৃহকর্মীকে স্ত্রীর অনুপস্থিতিতে প্রায়ই ধর্ষণ করতেন চেয়ারম্যান সাখাওয়াত হোসেন। এক পর্যায়ে কিশোরী গর্ভবতী হয়ে গেলে দুই মাস আগে চেয়ারম্যান তার বাড়ির কাজের লোকের সঙ্গে জোরপূর্বক গর্ভবতী কিশোরীকে বিয়ে পড়িয়ে দেন। গত ১ আগস্ট অন্তঃসত্ত্বা কিশোরীকে বাড়ি থেকে বের করে দিয়ে তরগাঁও খেয়াঘাটে এক বাসায় ভাড়া রাখেন চেয়ারম্যান। ১৬ আগস্ট মেয়েটিকে কাপাসিয়া সরকারি হাসপাতালে নিয়ে গেলে কন্যা সন্তানের জন্ম হয়। বাচ্চা প্রসবের পর বাচ্চাসহ কিশোরীকে পুনরায় ভাড়া বাসায় ফেরত আনা হয়।
কিন্তু এরই মধ্যে ঘটনা জানাজানি হয়ে গেলে সাংবাদিকরা ওই ভাড়া বাসায় ভিড় করে ও মেয়ের ভিডিও বক্তব্য নেয়। অপরাধ লুকানোর জন্য চেয়ারম্যান ২৯ আগস্ট রাতে বাচ্চাসহ মেয়েটিকে ভাড়া বাসা থেকে নিয়ে যায়। কিন্তু চেয়ারম্যান কিশোরী ও বাচ্চা নেননি বলে সাংবাদিক ডেকে জানিয়ে দেন।
এরই মধ্যে ৩১ আগস্ট সাংবাদিকদের নিকট চেয়ারম্যান কিশোরীর একটি ভিডিও প্রদর্শন করেন। দ্বিতীয় এই ভিডিওতে চেয়ারম্যান নির্দোষ বলে মেয়েকে বলতে শোনা যায়। কিন্তু মেয়েটি কোথায় থেকে এই ভিডিও করেছে সে সম্পর্কে চেয়ারম্যান কোনো বক্তব্য দেননি।
এই ঘটনার পর চেয়ারম্যান মেয়েটিকে বাচ্চাসহ অপহরণ করেনি বলে জানালেও অপহৃত অবস্থায় ভিডিও দেখিয়েছেন তিনি। এই বিষয়ে চেয়ারম্যানের বক্তব্য জানতে চাইলে তিনি এই ঘটনার সাথে জড়িত নন বলে দাবি করেন। তিনি বলেন, ডিএনএ টেস্টে তিনি অপরাধী হলে স্ত্রী সন্তান মেনে নেবেন। এই বিষয়ে চেয়ারম্যান নারী ইউপি সদস্য ও সাংবাদিকসহ বেশ কয়েকজনের নামে কাপাসিয়া থানায় জিডি ও অভিযোগ দিয়েছেন।
অভিযুক্ত চেয়ারম্যান সাখাওয়াত হোসেন নিজেকে নির্দোষ দাবি করে বলেন, তার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করে মিথ্যা অপবাদ চালানো হচ্ছে।
গাজীপুরের কাপাসিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা এফএম নাসিম বলেন অভিযোগ পেলে আসামীকে আইনের আওতায় আনা হবে বলে জানান।
উল্লেখ্য, এ ঘটনা নিয়ে বিভিন্ন মাধ্যমে সংবাদ প্রচার হওয়ার পরে ঘটনা নিয়ে আদালতে ভিকটিমের বাবা মামলা দায়ের করেন।