প্রকাশিত,২৩, মার্চ,২০২৪
চাঁদপুর প্রতিনিধি:
সাধারণ মানুষ তাকে বলে ইয়াবা লিটন। যিনি মাদক, ডাকাতি ও কিশোর গ্যাং এর সাম্রাজ্য গড়ে তুলেছেন নিজেই৷ ডজন খানেক মামলা থাকার পরেও অদৃশ্য এক জাদুর কাঠির সাহায্যে তিনি ঘুরে বেড়াচ্ছেন প্রকাশ্যে ও চালাচ্ছেন মাদকের সাম্রাজ্য৷
সূত্রে জানা গেছে, গজারিয়া থানার আব্দুল্লাহপুর গ্রামের বাসিন্দা ফিরোজ কসাই এর ছেলে লিটন। মাদকের সাম্রাজ্য নিয়ন্ত্রণ করতে ও প্রশাসনের ধরা ছোয়ার বাইরে থাকতেই বেছে নিয়েছেন ভিন্ন পথ। বিভিন্ন সময় বিভিন্ন থানায় গিয়ে জায়গা কিনে তৈরি করেছেন একাধিক বাড়ি। তিনি একেক সময় একেক বাড়িতে জেয়ে থাকেন আর সেখান থেকেই লোকচক্ষুর আড়ালে চালাচ্ছেন ভয়ানক মাদক সাম্রাজ্য। ভবেরচর, আব্দুল্লাহপুর, গুয়াগাছিয়া ইউনিয়নের জামালপুর সহ মতলব উত্তর উপজেলার সাদুল্লাপুর ইউনিয়নের হাপানিয়া গ্রামেও রয়েছে তার নিজস্ব বাড়ী।
পুলিশের হাতে বেশ কয়েকবার আটক হয়েও থেমে নেই তার অপরাধ কর্মকাণ্ড। আত্মশুদ্ধ হওয়ার ইচ্ছা যেন নেই এই লিটনের। অপরাধ জগতেই যেন অমৃত সুধা খুঁজে পেয়েছেন এই লিটন। ২০২২ সালের মার্চ মাসে মতলব উত্তর থানায় ৭ কেজি ৫০০ গ্রাম গাজা সহ গ্রেফতার হন ইয়াবা লিটন। জামিনে বের হয়ে পুনরায় গড়ে তুলেন তার মাদকের সাম্রাজ্য। ২০২৩ সালে ১৪ ফেব্রুয়ারি ৮০০ পিস ইয়াবাসহ মতলব উত্তর থানার পুলিশ তাকে গ্রেফতার করেন। এবং জেলহাজতে প্রেরন করেন, জামিনে বের হয়ে পুনরায় আবারও শুরু করেন। তারপরেও থেমে নেই ইয়াবা লিটনের দৌরাত্ম্য। এ যেন এক লাগামহীন ঘোড়া। তার মাদকের আখড়ায় যুব সমাজে নেমে এসেছে এক কালো অধ্যায়। ডজন খানেক মামলার বোঝা মাথায় নিয়ে প্রশাসনের চোখে বৃদ্ধা আঙ্গুল দেখিয়ে দাপিয়ে বেড়াচ্ছেন মাদকের সাম্রাজ্য।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে একাধিক ব্যক্তি জানান, টাকার প্রভোলন দেখিয়ে এই ইয়াবা লিটন যুবকদের হাতে ইয়াবা তুলে দেন বিক্রয় করার জন্য। কেউ রাজি না হলে তাকে দেয়া হুমকি। পুলিশে ধরিয়ে দেওয়ার হুমকি ও হামলা মামলার ভয় দেখিয়ে এক প্রকার যুবকদের বাধ্য করতেন এই অপরাধ জগতে আসতে। তার এই অত্যাচারে যুব সমাজ অনেকটা অন্ধকারেই ধাবিত হচ্ছে।
শুধু তাই নয়, লিটন বাহিনী এতই ভয়ংকর ও ক্ষমতাবান যে তারা পুলিশের উপর হামলা করতেও পিছপা হয় না। ঘটনাটি ২০২২ সালের। তারিখ ২০ জানুয়ারী । মুন্সীগঞ্জের গজারিয়ার মাদক সম্রাট ও শীর্ষ সন্ত্রাসী ইয়াবা লিটন ও জিতুকে গ্রেফতারের ঘটনায় তাদের কে ছিনতাই করে নিতে পুলিশের উপর হামলা চালায় ইয়াবা লিটনেরই তৈরি করা কিশোর গ্যাং। সেই হামলায় আহত হন পুলিশের দুই সদস্য। একজন এস.আই ও একজন কনস্টেবল। কুখ্যাত লিটনের বিরুদ্ধে এখনো চলমান রয়েছে চার্জশিট ভুক্ত ১২ টি মামলা।
অনুসন্ধানে জানা যায়, এই ইয়াবা লিটন শুধু মাদক ও সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড নয় এলাকার কিশোর গ্যাং তৈরিতেও রয়েছে তার সচ্ছ ভূমিকা।
জানা গেছে, গজারিয়া, মতলব, দাউদকান্দি, কুমিল্লা সহ কয়েকটি উপজেলায় রয়েছে তার মাদকের সাম্রাজ্য। সেগুলো নিয়ন্ত্রণ করাসহ চাঁদাবাজি ও মাদক ব্যবসায় সব সময় সক্রিয় থাকেন লিটন। তার অত্যাচারে অতিষ্ঠ হয়ে অনেকেই থানায় অভিযোগ করেছেন। গজারিয়া ও মতলব থানায় রয়েছে মাদকের ডজন খানেক মামলা।
মুন্সিগঞ্জ গজারিয়া থানায়, মামলা নং ০৮, ১৯৯০ সনের মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনের ১৯ (১)এর ৯ এর (গ) । নারায়ণগঞ্জ থানার মামলা নং -১৮, ২০১০ সালের, আইনশৃঙ্খলা বিঘ্নকারী দ্রুত বিচার আইনের, ২০০২এর সংশোধিত ২০০৯ ,এর ধারায়,ও ডিএমপি তুরাগ থানার মামলা নং ০৫,২০২১ সালে মামলা হয়, ও গজারিয়া থানার মামলা নং: ২৮, ২০২২ সালে, মামলার ধারা,হল,১৪৩,১৪৪,১৮৬,৩০৭,৩৩৩,৩৫৩,৩২৯,ও ৩৪ ধারায় মামলা হয়,ও গজারিয়া থানার মামলা নং ২৫, ও গজারিয়া থানায় আরো একটি মামলা দায়ের করা হয় মামলার নাম্বার, ২৪, তারিখ,২০/০১/২০২২, ও মতলব উত্তর থানায় দুইটি মামলা হয়, মামলার নাম্বার হলো, ০৫, তারিখ ৯/১/২০২৩/ ও মতলব উত্তর থানার মামলা নাম্বার,১১, তারিখ ১৪/০২/২০২৩, আরেকটি মামলার নাম্বার হল, ০৮, তারিখ ১০/৯/২০১৮, সবগুলি মামলা হয় মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে।
এ বিষয়ে মুন্সীগঞ্জের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) বলেন, ‘বিষয়টি আমার নলেজে নাই। আমি পরে এসেছি।’